লবঙ্গের ঔষধি গুণাগুণ

  • লাইফ স্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

অতিপরিচিত একটি মসলার নাম লবঙ্গ। খাবারে লবঙ্গের ব্যবহার বেশি হলেও স্বাস্থ্যরক্ষা ও রূপচর্চায় লবঙ্গের জুড়ি নেই। মসলা হিসেবে এর ব্যবহার বেশ সমাদৃত। এশিয়া, আফ্রিকা, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে ঝাল এবং মিষ্টি জাতীয় খাবারে এটি ব্যবহার করা হয়। 

চীন, সিরিয়া, রোম ও আফ্রিকাতে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত ধরে লবঙ্গ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। 

বিজ্ঞাপন

চিরসবুজ লবঙ্গ গাছের ফুলের কুঁড়িকেই বলা হয় লং বা লবঙ্গ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium aromaticum। লবঙ্গে রয়েছে নানা গুণ। এটি জীবাণুনাশক ও বেদনানাশক ওষুধ হিসাবেও কাজ করে। 

লবঙ্গের পুষ্টি উপাদান: ১ চামচ গুঁড়া লবঙ্গতে আছে ৬ ক্যালরি, ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১ গ্রাম ফাইবার, দৈনন্দিন চাহিদার ৩ শতাংশ ভিটামিন সি, ২ শতাংশ ভিটামিন কে এবং ৫৫ শতাংশ ম্যাঙ্গানিজ। এতে কিছু পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন ই-ও রয়েছে। 

দাঁতের নানা সমস্যার সমাধানে লবঙ্গের ব্যবহার: দন্ত্য চিকিৎসকেরা প্রায়ই রোগীদের ওষুধের পাশাপাশি লবঙ্গ চা বা লবঙ্গ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কেননা এটি মুখের দুর্গন্ধ ও ব্যথা দূর করে।  

হজমে সহায়তা করে লবঙ্গ: লবঙ্গ হজম ক্ষমতা বাড়ায়। এর প্রতিক্রিয়ায় এনজাইম নিঃসরণ আমাদের হজম ক্ষমতাকে সক্রিয় করে তোলে। তাই মসলা হিসেবে হোক আর মুখে চিবিয়ে হোক, লবঙ্গ খাওয়া স্বাস্থের জন্য উপকারী। 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ: লবঙ্গ রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমাতে বেশ কার্যকর। লবঙ্গে আছে নাইজেরিসিন নামের একটি যৌগ। যা রক্ত থেকে শর্করা বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেয়। ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়ানো ও ইনসুলিন নিঃসৃত হওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে কাজ করে লবঙ্গ। 

হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় লবঙ্গ: হাড়ের কম ঘনত্ব বয়স্কদের অস্টিওপরোসিস রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। গবেষণায় পাওয়া গেছে, ইউজেনল হাড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে হাড়কে মজবুত করে থাকে। এছাড়া লবঙ্গ ম্যাঙ্গানিজের উৎকৃষ্ট উৎস। ক্যালসিয়ামের মতো এটিও হাড়ের জন্য উপকারী।

এছাড়া ক্যান্সার নিরাময়েও লবঙ্গ বেশ কার্যকর।

আমাদের দেশে মসলা হিসেবে লবঙ্গ রান্নায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে, লবঙ্গের অন্যান্য উপকারিতা ভালোভাবে পেতে প্রতিদিন অন্তত এক কাপ লবঙ্গের চা খেতে পারেন। লবঙ্গ জ্বাল দিলেই তৈরি লবঙ্গ চা সর্দি–কাশিতে বেশ উপকারী। এছাড়া সামান্য লবণ দিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন। যদি না উচ্চ রক্তচাপের কোনো সমস্যা না থাকে।

লবঙ্গের ইউজেনলের গুণাগুণ অনস্বীকার্য। তবে এটি অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো। অতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে যকৃতের ক্ষতি হতে পারে। এ জন্য নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় খেতে হবে। ১৫ বছরের নিচের শিশুদের আলাদা করে লবঙ্গ বা এর চা থেকে দূরে রাখতে হবে।