চা নাকি কফি স্বাস্থ্যের জন্য কোনটি বেশি উপকারী ?

  • লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দিনের শুরুতে এক চুমুক চা বা কফি মনকে ফুরফুরে করে তুলতে পারে। কেউ কেউ আছেন যারা দুইটাই পছন্দ করেন। আবার অনেকে দ্বিধায় থাকেন কোন পানীয়টি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে। যদি চা বা কফির মধ্য থেকে যে কোন একটি বেছে নিতে হয় তবে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

চা ও কফির মধ্যকার পার্থক্য
চা তে সাধারণত কফির তুলনায় ক্যাফেইনের পরিমাণ কম থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয়ের ফুড ডেটা সেন্ট্রাল ডেটাবেস অনুসারে, ঘরে তৈরি কফির প্রতি ৮ আউন্সের কাপে গড়ে ৯২ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। কফি শপের ১২ আউন্সের কাপে ১৫০ থেকে ২৩৫ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। অন্যদিকে ৮ আউন্সের ব্ল্যাক টিতে ৪৭ মি.গ্রা. ক্যাফেইন থাকে।
খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের প্রতিবেদন অনুসারে, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ৪০০ মি.গ্রা. পর্যন্ত ক্যাফেইন গ্রহণ নিরাপদ এবং এর স্বাস্থ্যগত সুফলও পাওয়া যায় বেশ। ক্যাফেইন শক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এতে বিষণ্ণতা, পারকিনসন্স রোগ (এক ধরনের স্নায়ুবিক রোগ), যকৃতের রোগ, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
তবে বেশি মাত্রায় ক্যাফেইন গ্রহণ অস্থিরতা, উদ্বিগ্নতা বা দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। দিনের শেষভাগে অতি মাত্রায় ক্যাফেইন গ্রহণের ফলে নিদ্রাহীনতা সৃষ্টি হতে পারে। এই ক্যাফেইন গ্রহণের ফলে যে স্নায়ুবিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় তাতে আসক্তি তৈরি হতে পারে।সহজভাবে বলতে গেলে কফি অল্পসময়ে দ্রুত তরতাজা অনুভূতি এনে দিলেও চায়ের প্রভাব ধীরে ধীরে দীর্ঘস্থায়ী হয়।

বিজ্ঞাপন

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
রক্তে মিশে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানের হাত থেকে রক্ষা পেতে শরীরে যাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি না হয়, সেদিকে নজর রাখা প্রয়োজন। সুখবর হলো চা-কফি, দু’টিতেই প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। লিকার চায়ে রয়েছে থিয়াফ্লাভিনস এবং ক্যাটাচিন। এদিকে কফিতে মজুত রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ক্লোরোজেনিক এসিড। এই বিভাগে কফির চেয়ে চা-ই এগিয়ে থাকবে।

চা খেলে এনার্জির ঘাটতি মেটে
ক্লান্তি দূর করতে কফির মতোই কাজ করে চা। বলতে পারেন, কফির থেকে একটু বেশিই কাজ করে। কারণ, এই পানীয়তে ক্যাফেইনের পাশাপাশি রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই দু’য়ের যুগলবন্দিতে ক্লান্তি তো দূর হয়ই, সেই সঙ্গে ব্রেনের ক্ষমতাও বাড়ে।

বিজ্ঞাপন

ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখে কফি
কফিতে থাকা ক্লোরোজেনিক এসিড ওজন কমাতে সাহায্য করে। এই উপদানটি শরীরে প্রবেশ করলে শরীরের ফ্যাট বার্নিং প্রক্রিয়াটি আরও ত্বরান্বিত হয়, যে কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে শুধু কফি খেয়েই ওজন কমানো সম্ভব নয়। সঙ্গে ডায়েটিং এবং শরীরচর্চাও করতে হবে।

চা দাঁতের বেশি ক্ষতি করে
চা আর কফি- এই দুই পানীয়তেই আছে ট্যানিন, নানা ধরনের অ্যাসিড এবং ক্রোমোজেন। এই তিনটি উপাদানই দাঁতের রং পাল্টে দেওয়া থেকে শুরু করে দাঁতের ক্ষয়ক্ষতি করে থাকে। কিন্তু চা-ই বেশি ক্ষতিটা করে থাকে, কারণ, চায়ে কফির তুলনায় বেশি ট্যানিন থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সব দিক বিচার করলে কফির থেকে চাই বেশি স্বাস্থ্যকর। তবে চা-কফি যা-ই খান না কেন, তাতে যতটা সম্ভব কম চিনি মেশাবেন। লিকার চা বা ব্ল্যাক কফি খেলে যতটা উপকার পাওয়া যায়, ততটাই পাওয়া যায় দুধ চা বা কফিতে দুধ মিশিয়ে খেলেও। বরং দুধ মেশালে একটু বেশিই উপকার মেলে।