কীভাবে দূর হবে অবসাদ?
শারীরিক অবসাদ বা ক্লান্তি, পরিশ্রান্ত বোধ হওয়ার সমস্যাটি মূলত মধ্যবয়স্কদের মাঝে বেশি দেখা দিলেও,
এখনকার সময়ে তরুণদের মাঝেও শারীরিক অবসাদ দেখা দেওয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। শারীরিক কাজের চাপ অথবা মানসিক চাপের দরুন অবসাদ তৈরি হয়। কিছু ক্ষেত্রে লুকায়িত শারীরিক সমস্যার লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয় অবসাদ। যেমন- রক্তস্বল্পতা, হৃদরোগ, থাইরয়েডের সমস্যা, ডায়বেটিস ইত্যাদি। দীর্ঘদিন যাবত অবসাদভাব অনবরত দেখা দিতে থাকে তবে অবশ্যই চিকিৎসকের শরাপন্ন হতে হবে এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী পথ্য গ্রহণ করতে হবে।
কাজের চাপ, মানসিক অশান্তি ও দুশ্চিন্তা থেকে যদি কিছুদিন পরপরই এই অবসাদভাব দেখা দিয়ে থাকে, সেক্ষেত্রেও নিজেকে সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
শারীরিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে
গবেষণায় তথ্য জানাচ্ছে, শারীরিক কার্যক্রম এনার্জির মাত্রা বৃদ্ধিতে অনেকখানি অবদান রাখে। প্রতিদিন পনেরো মিনিটের হালকা ঘরানার শারীরিক কার্যক্রমও শারীরিক অবসাদ দূর করার পাশাপাশি হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষণার ফলাফল সুপারিশ করে, শারীরিক কার্যক্রম শারীরিক অবসাদ দূর করার সঙ্গে আত্মবিশ্বাসকেও দৃঢ় করতে কাজ করে।
এছাড়া অফিসে কর্মরত অবস্থায় যখনই শ্রান্তিভাব দেখা দেবে, চেয়ার ছেড়ে উঠে অফিস পরিসরে কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করতে হবে। সম্ভব হলে বাইরে থেকে মিনিট পাঁচেকের জন্য ঘুরে আসতে হবে। এতে অবসন্নতা কমে যাবে।
পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে
জানেন কি, শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেওয়া থেকেও অবসন্নতা ও ক্লান্তিভাবের তৈরি হতে পারে। কাজের চাপে, সারাদিনের ব্যস্ততায় অনেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানের বিষয়টি একেবারেই ভুলে যান। যা থেকে শরীরে দেখা দেয় তরলের অভাব। যেহেতু আমাদের শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য পানি প্রয়োজন হয়, তাতে ঘাটতি দেখা দিলেই এই অবসন্নতা কাজ করে।
ঘুমাতে হবে দ্রুত
সবসময় পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, নিয়ম করে প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর জন্য। একজন প্রাপ্ত বয়স্কের শরীরে চাহিদা অনুযায়ী ঘুমে কমতি থাকলেই অবসন্নতা দেখা দিয়ে থাকে। ২০০৪ সালে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা জানাচ্ছে, অপরিমিত ঘুম অবসন্নতা দেখা দেওয়ার অন্যতম বড় একটি কারণ। কাজের চাপ ও বিভিন্ন ধরণের চিন্তা ও দুশ্চিন্তার দরুন ঘুমের কমতি শরীর একেবারেই নিতে পারে না।
অল্প পরিমাণে কয়েকবারে খেতে হবে
যারা দিনের মাঝে দুই-তিনবারে অনেক বেশি খাবার খান তাদের চাইতে যারা দুই-তিন ঘন্টা অন্তর অল্প পরিমাণ খাবার গ্রহণ করেন, তাদের মাঝে শারীরিক অবসন্নতা কম দেখা দেয়। এমনকি এই অভ্যাসের দরুন রক্তে চিনির মাত্রায় নিয়ন্ত্রণে থাকে। কয়েকবার খাবার খাওয়া হলেও প্রতি বারেই অল্প পরিমাণে খাবার খেতে হবে।
যোগব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে
যেকোন ঘরানার যোগব্যায়ামই অবসন্নতাকে দূর করতে কার্যকর। শুধু দূর করতেই নয়, শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ-ছয় দিন যোগব্যায়ামের অভ্যাস শরীর ও মনকে প্রাণবন্ত রাখতে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: প্রতিনিয়ত অকাল মৃত্যুকে ডেকে আনছি যার মাধ্যমে!
আরও পড়ুন: সুস্থতার জন্যে বিশ্রাম ও ঘুম কতটা জরুরি?