কীভাবে ঘুম ভালো হবে?
ঘুম নিয়ে সমস্যায় ভুগতে হয় কমবেশি সবাইকেই।
সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে রাতে শরীর যখন বিশ্রাম চায় তখনই হুট করে ঘুম গায়েব হয়ে যায়। দেরীতে ঘুমালেও ঘুম ভালো হয় না। এদিকে দেরী করে ঘুমানোর ফলে দিনভর ক্লান্ত ও অবসন্ন থাকে শরীর। সঠিক সময়ে ও ভালোভাবে ঘুম না হওয়ার জন্য অনেকাংশে দায়ী থাকে আমাদের নিত্যদিনের অভ্যাস। ছোট ও ক্ষেত্র বিশেষে নিরীহ অভ্যাসই ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়। কয়েকটি বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখলে ঘুম নিয়ে সমস্যা কমে যাবে অল্প সময়ের মাঝেই।
ক্যাফেইন গ্রহণের মাত্রা কমিয়ে ফেলুন
কফি শরীর ও মনকে চাঙ্গা করার ফলে দীর্ঘসময় সতেজ অনুভূত হয় ও কাজ করা যায় খুব সাবলীলভাবে। কিন্তু কফি বা চায়ে থাকা ক্যাফেইনের প্রভাব আমাদের শরীরে রয়ে যায় লম্বা সময় পর্যন্ত। এতে করে রাতে ঘুমের সময় সহজে ঘুম আসতে চায় না। তাই সারাদিনে দুই কাপের বেশি কফি/চা গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সন্ধ্যা ৬টার পরে ক্যাফেইন গ্রহণ করা যাবে না।
নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলুন
ঘুমের ব্যাপারটি খুবই রুটিন মাফিক হওয়া প্রয়োজন। নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠার ব্যাপারটি দৈনিক মেনে চলতে হবে। এতে করে শরীর ঘুমের সময় ও ঘুম থেকে ওঠার সময়ে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। ঘুমের সাইকেলের নির্দিষ্ট হয়ে গেলে রাতে ঘুম আসতে কোন সমস্যা হবে না।
আরামদায়ক পরিবেশে ঘুমানোর চেষ্টা করুন
আমাদের পরিচিত এমন এক-দুইজন আছেন, যারা যেকোন স্থানে খুব সহজেই ঘুমিয়ে যেতে পারেন। আলো, শব্দ বা স্থান এতে কোন প্রভাব ফেলতে পারে না। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘুমের জন্য আরামদায়ক ও নিজস্ব পছন্দের স্থান খুবই জরুরি। ঘুমানোর স্থান, ও অনুষঙ্গ যদি পছন্দমতো ও আরামদায়ক না হয় তবে চোখে ঘুম থাকলেও ঘুমাতে দেরী হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ঘর পছন্দমতো অন্ধকার বা আবছা অন্ধকার করে বিছানা-বালিশ পছন্দমতো সেট করে নিতে হবে।
ঘুমানোর আগে প্রস্তুতি নিন
অনেকেই রাতে ঘুমানোর আগে গোসল করেন। যদিও এই অভ্যাসের দরুন ঠাণ্ডার সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভবনা রয়ে যায়। এছাড়া ঘুমানোর আগে দাঁত মাজা, চুল আঁচড়ে নেওয়া, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার মতো যত্নগুলো সময় নিয়ে করে নিজেকে ঘুমের জন্য প্রস্তুত করলে শরীর রিল্যাক্স হবে এবং ঘুমভাব দেখা দেবে।
শরীরচর্চা করুন নিয়মিত
শরীরচর্চা শুধু ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা কিংবা নিজেকে সুস্থ রাখার জন্যেই প্রয়োজনীয় নয়, ঘুমের অভ্যাসে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রেও প্রয়োজন। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট সময়ের ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ ও ২০ মিনিটের হাঁটা শরীর থেকে চাপ কমাতে কাজ করে। এতে করে ঘুমানোর সময়ে শরীর তার প্রয়োজনীয় বিশ্রামের চাহিদা পূরণে ঘুম আসতে সাহায্য করে।
মানসিক চাপকে কমিয়ে ফেলুন
ঘুমানোর সময় সারাদিনের নানান দুশ্চিন্তা মাথায় এসে ভর করে। নানান চিন্তায় ঘুম চলে যায় সহজেই। সমীক্ষা বলছে মানসিক চাপ ও অশান্তির ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইনসমনিয়ার সমস্যাটি দেখা দেয়। হাজারো চিন্তা তো মনের মধ্যে ঘুরপাক খাবেই। কিন্তু চেষ্টা করতে হবে ঘুমানোর সময় এই চিন্তাগুলোকে একপাশে সরিয়ে রাখতে। এক্ষেত্রে কাজ করবে হালকা তালের সুর, বই পড়া অথবা ১৫ মিনিটের মেডিটেশন। যা মাথা থেকে যাবতীয় ভাবনাকে সরিয়ে দেবে ও ঘুম আনতে অবদান রাখবে।
আরও পড়ুন: ঘুম আনতে সাহায্য করবে এই খাবারগুলো
আরও পড়ুন: কেন সকালে দ্রুত ঘুম থেকে ওঠা প্রয়োজন?