জীবাণু দ্বারা প্রভাবিত হয় আমাদের আবেগ ও আচরণ!



ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
জীবাণু।

জীবাণু।

  • Font increase
  • Font Decrease

কোন ধারনা আছে কি, আপনার শরীরে কতগুলো জীবাণুর বসবাস? একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরে ১০ হাজার ভিন্ন প্রজাতির ১০০ ট্রিলিয়নের অধিক জীবাণু (মাইক্রোব) থাকে। উত্তরটা কিন্তু আঁতকে ওঠার মতোই।

মানবদেহে বসবাসকারী জীবাণুদের মোট ওজন ২-৬ পাউন্ড পর্যন্ত হয়ে থাকে। যা একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মগজের ওজনের দ্বিগুণ। যে কারণে বলা হয়ে থাকে, মানুষের শরীরের ৯০ শতাংশই হচ্ছে জীবাণু, বাকি ১০ শতাংশ মানবদেহ!

এতক্ষণ ধরে শরীরে বসবাসকারী জীবাণুদের সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো। মূল বিষয়টা জানানো হবে এখন। শরীরের বিভিন্ন অংশে বসবাসকারী এই সকল জীবাণুই কিন্তু মানুষের আবেগ ও আচরণের উপর দারুণ প্রভাব বিস্তার করে।

গবেষণা থেকে দেখা গেছে ডিপ্রেসেন্ট প্রভাব তৈরি হয় ল্যাকটোব্যাসিলাস (Lactobacillus) ও বিফিডোব্যাকটেরিয়াম (Bifidobacterium) নামক দুইটি পাকস্থলিস্থ ব্যাকটেরিয়ার সাহয্যে। উদ্বেগ, মানসিক চাপ ও হতাশার মতো আচরণগুলো তৈরির জন্যেও দায়ী থাকে ভিন্ন ধরণের জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া।

ব্যাপারটা কেমন যেন পুতুলখেলার মতো মনে হচ্ছে, তাই না? যেন জীবাণুগুলো আমাদের আচরণ ও আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করছে নিজেদের মতো করে। কিন্তু ব্যাপারটা আসলে তেমন নয়।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজি বিভাগের গবেষক ক্যাটেরিনা জনসন জানান, মাইক্রোব সমূহ আমাদের আবেগকে নিয়ন্ত্রন করে না। বরং স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী তারা পাকস্থলীতে জন্ম নেয় ও বৃদ্ধি পায় এবং প্রাকৃতিকভাবে আমাদের আচরণের উপর তাদের প্রভাব বিস্তার করে।

এবার জেনে নেওয়া যাক দারুণ একটি গবেষণা সম্পর্কে। এই গবেষণাটি বুঝতে সাহায্য করবে আসলেও জীবাণু আমাদের আবেগ ও আচরণের উপরে কীভাবে প্রভাব বিস্তার করে।

২০১১ সালে ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক দুইটি ইঁদুরের উপর গবেষণা চালায়। প্রথম ইঁদুরটি ছিল ভয়ার্ত ও চুপচাপ (ইনট্রোভার্ট)। যেখানে দ্বিতীয় ইঁদুরটি ছিল খুবই চঞ্চল ও সামাজিক (এক্সট্রোভার্ট)।

গবেষকেরা ইঁদুর দুইটিকে একটি উঁচু স্থানে ছেড়ে দেন। তারা দেখতে চেয়েছিলেন, ইঁদুর দুইটি উঁচু স্থান থেকে নিচে নামতে কতক্ষণ সময় নেয়। সময় হিসেব করে দেখা গেলো, ইন্ট্রোভার্ট ইঁদুরটি উঁচু স্থানে বেশ অনেকক্ষণ এদিকে-সেদিক ঘোরাফেরা করে প্রায় সাড়ে চার মিনিট পর খুব ধীরে ও ভয়ের সাথে নিচে নেমে আসে। ওদিকে এক্সট্রোভার্ট ইঁদুরটিকে উঁচু স্থানে রাখার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই লাফ দিয়ে নিচে নেমে যায়।

এই পরীক্ষাটির পর গবেষকেরা ইঁদুর দুইটির মাইক্রোবায়োটা একে-অন্যের শরীরে প্রবেশ করায়। এরপর পুনরায় একই পরীক্ষা চালায়। ফলাফলে দেখা গেলো, ইন্ট্রোভার্ট ইঁদুরটি আগের চাইতে এক মিনিট আগে নিচে নেমে আসে, অর্থাৎ সাড়ে তিন মিনিটের মাথায় ইঁদুরটি উঁচু স্থান থেকে নামে। ওদিকে এক্সট্রোভার্ট ইঁদুরটি এক মিনিট সময় পর নিচে নামে, যেখানে আগের পরীক্ষায় ইঁদুরটি কয়েক সেকেন্ডের মাথায় নিচে নেমে এসেছিল!

একইভাবে একজন মানুষের আচরণের উপর প্রভাব বিস্তার করে তার শরীরে বসবাসরত মাইক্রোব সমূহ। বিশেষত পাকস্থলিস্থ ব্যাকটেরিয়া শুধুই যে আচরণের উপর প্রভাব বিস্তার করে তাই নয়, ব্রেইন ক্যামিস্ট্রিতেও তারতম্য আনে, তৈরি করে সেরোটোনিন। সেরোটোনিন তৈরিকারী মাইক্রোব সমূহ হলো- ক্যান্ডিডা, স্ট্রেপটোকোক্কাস, ইশেরিকিয়া ও এন্ট্রোকোক্কাস। আনন্দ বোধ ত্বরান্বিত করার জন্য সেরোটোনিন বিশেষভাবে পরিচিত।

পাকস্থলীতে থাকা এই জীবাণু কিংবা ব্যাকটেরিয়া কীভাবে অনুভূতিগুলো আমাদের মগজে পৌছায়- খুব স্বাভাবিকভাবেই এমন প্রশ্ন মাথায় উঁকি দিবে। সেক্ষেত্রে জেনে রাখুন, আমাদের পাকস্থলী ও অন্ত্র থেকে সরাসরি মগজে এই অনুভূতিগুলো পৌছাতে সাহায্য করে ‘ভেগাস’ নামক নার্ভ। এই নার্ভ অন্ত্র থেকে একদম মগজ পর্যন্ত বিস্তৃত। যা অনুভুতিগুলোকে পৌছে দিতে সাহায্য করে। শুধু এই পদ্ধতিই নয়, এছাড়াও আরো বেশ কিছু পদ্ধতির সাহায্যে অনুভূতি মগজ পর্যন্ত পৌছে থাকে।

কিন্তু মূল প্রশ্ন হলো, কেন জীবাণু আমাদের আবেগ ও আচরণের উপর এই প্রভাব বিস্তার করে? উত্তরটাও খুব সহজ, নিজেদের বংশ বিস্তার ও নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য। এই ব্যাপারটি সহজভাবে বোঝানোর জন্য একটি মজার চক্র তুলে ধরা হলো।

এই চক্রটি আবর্তিত হয় বিড়াল থেকে ইঁদুরের মধ্যে। বিড়ালদের জন্য বিশেষ ধরণের একটি জীবাণু আছে, যার নাম টোক্সোপ্লাজমা গন্ডি। এই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত বিড়াল খোলা স্থানে জীবাণুর ডিমসহ মল ত্যাগ করার মাধ্যমে চক্রটি শুরু হয়। আমরা সকলেই জানি ইঁদুর সবকিছু খায়। যার ফলে টোক্সোপ্লাজমার প্রভাবে ইঁদুর গর্ত থেকে বের হয়ে বিড়ালের মল খেতে উদ্যত হয়। এই সুযোগে বিড়াল ইঁদুরকে সহজেই শিকার করে খেতে পারে। টোক্সোপ্লাজমা শুধু বিড়ালের পাকস্থলিতেই পুনরায় বংশবিস্তার করতে পারে। যে কারণে এই চক্রের মাধ্যমে টোক্সো তার বংশ বিস্তার করতে পারে।

ঠিক একই ঘটনা ঘটে থাকে মানুষের সাথেও। তাদের বিভিন্ন ধরণের আবেগ ও আচরণের প্রকাশের মাধ্যমে ত্বরান্বিত হয় জীবাণুদের বংশবিস্তার। কিছু জীবাণু আমাদের সামাজিক হতে সাহায্য করে ও আমাদের মন ভালো রাখে। যার ফলে আমরা বাইরে ঘুরতে বের হই, পরিচিতদের সাথে সাক্ষাৎ করি। এই সকল ক্রিয়ার মাধ্যমে খুব সন্তর্পনে জীবাণু তাদের বংশ বিস্তার করে থাকে।

তাইতো যে অনুভূতিকে আমরা মন খারাপ কিংবা মন ভালো থাকা বলছি, সেটা অনেকটাই আমাদের শরীরে বীরদর্পে বাস করা জীবাণুদের ষড়যন্ত্র!

 

   

মাইগ্রেনের সাধারণ উপসর্গ



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মাইগ্রেনের ব্যথা

মাইগ্রেনের ব্যথা

  • Font increase
  • Font Decrease

মাইগ্রেনের ব্যথা আমাদের মধ্যে সাধারণ সমস্যাগুলোর একটি। মূলত মাইগ্রেনের সমস্যার কারণে তীব্র মাথা ব্যথা হয়। মাথায় নির্দিষ্ট স্থানে তীব্র কম্পন অনুভূত হয় এবং টন টন করে। এছাড়া চোখে আলো পড়লে বা তীব্র বাতাসে সংবেদনশীলতার কারণে অস্বস্তি, মাথাব্যথার তীব্রতা বেড়ে ওঠা বা বমি বমি ভাব হওয়াও মাইগ্রেনের উপসর্গ। এই যন্ত্রণা কয়েক ঘণ্টা থেকে একাধিক দিন অবধিও স্থায়ী হতে পারে।

খুব সূক্ষ্ম মাত্রায় ঔষধ সেবনের মাধ্যমে যন্ত্রণা কমানো যেতে পারে। সঠিক চিকিৎসা এবং ভালো ওষুধের মাধ্যমে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে এটি নিরাময় করার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না।

মাইগ্রেনের সমস্যা যেকোনো বয়সের মানুষেরই হতে পারে। একেকজনের ক্ষেত্রে সমস্যা একেকরকম হয়। তবে সকলের ক্ষেত্রেই কয়েকটি সাধারণ ধাপে মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়তে দেখা যায়। এগুলো হলো- প্রোড্রোম, অওরা, অ্যাটাক, পোস্টড্রোম।

প্রোড্রোম: মূলত মাথাব্যথার তীব্রতা বাড়ার আগের ২৪ ঘণ্টার মুহূর্ত এটি। এই ধাপের উপসর্গ হতে পারে মেজাজ পরিবর্তন, কোষ্ঠ্কাঠিন্য, খাবার খাওয়ার ইচ্ছা, ঘন ঘন প্রসাব, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, বেশি হাই ওঠা সহ আরও অনেক কিছুই হতে পারে।  

অওরা: এই পর্যায়ে মাথা ব্যাথা হওয়ার আগ মুহূর্তে বা মাথাব্যথার সময়ে নানারকম অসুবিধা দেখা দিতে পারে। কয়েক মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এই সময়ে মুখ, বাকযন্ত্র, মাথার সংবেদনশীল অংশে উপসর্গ দেখা দিতে পারে।     

অ্যাটাক বা আক্রমণ: এই পর্যায়ে মাথা ব্যথা তীব্রতার পর্যায়ে চলে যায়। একটানা ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা অবধিও ব্যথা স্থায়ী হতে পারে। চিকিৎসা করা না হলে এই সময়কাল আরও দীর্ঘ হতে পারে।

পোস্টড্রোম: এই পর্যায়ে মাথা সমস্যা ১ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। উপসর্গগুলো অনেকটা অ্যালকোহল সেবনের পরে হ্যাংওভারের উপসর্গের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।  এজন্য এক মাইগ্রেন হ্যাংওভারও বলা হয়।

তথ্যসূত্র: নিউজ১৮

;

ভাইরাল হেপাটাইটিস নিয়ে ভুল যত ধারণা



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভাইরাল হেপাটােইটিস বা জন্ডিস

ভাইরাল হেপাটােইটিস বা জন্ডিস

  • Font increase
  • Font Decrease

যকৃত মানব শরীরের খুব একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নালীদের প্রবাহিত হওয়া রক্ত পরিশুদ্ধকরণ করা এর প্রধান কাজ। রক্ত থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে যকৃত। এছাড়াও ভিটামিন সঞ্চয় এবং হরমোনও তৈরি করে। তবে হেপাটাইটিস এমন এক ভাইরাস যা সরাসরি কলিজা, তথা যকৃতেই আক্রমণ করে। এতে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্থ হয়। মূলত হেপাটাইটিস ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘ডি’ এবং ‘ই’ ভাইরাল হেপাটাইটিসের জন্য দায়ী। হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং ‘ই’ খাদ্য ও পানি দূষণের ফলে হয়। অন্যদিকে হেপাটাইটিস বি এবং সি রক্তেএবং রক্তরসের মাধ্যমে ছড়ায়। হেপাটাইটিস ডি হওয়ার সম্ভাবনা তাদের থাকে যারা ইতোমধ্যেই হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত রয়েছেন।   

ভাইরাল হেপাটাইটি থেকে সাবধানে থাকার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কারণ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে নানারকম কুসংস্কার ছড়িয়ে আছে। এক প্রতিবেদনে ভারতীয় হেপাটোলজি বিশেষজ্ঞ অমিত মান্ডোট বলেছেন, `হেপাটাইটসের ক্ষেত্রে ভাইরাসের আক্রমণ যতটা শঙ্কাজনক, একইরকমভাবে এ্ সম্পর্কিত যে ভ্রান্ত ধারণাগুলো রয়েছে সেগুলোও নানারকম সমস্যা বৃদ্ধি করে। এতে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও বাঁধা পড়ে। অনেকে মনে করেন হেপাটাইটিসের সংক্রমণ এইডসের সংক্রমণের মতো। ভয়াবহ ড্রাগ নেওয়ার মাধ্যমে এবং অনৈতিক শারীরিক সম্পর্কে মাধ্যমে হেপাটাইটিস ছড়ায়। এসব একেবারেই ভুল ধারণা।‘

ভাইরাল হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগী

তিনি ভ্রান্ত ধারনা দূর করার ব্যাপারে বলেন, ‘রক্তের মাধ্যমে হেপাটাইটিস ছড়ায়। এমনটি শিশু জন্মদানের সময় হওয়াও অযাচিত নয়। রক্তদান বা ব্যবহৃত ইঞ্জেকশনের মাধ্যমেও হেপাটাইটিস ছড়াতে পারে। তাই এই রোগ সম্পর্কিত গোড়ামি ভেঙে রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য সাহায্য করতে হবে। এইজন্য সকলের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এই সংক্রান্ত আরও একটি ভুল ধারণা হলো, ব্যক্তি পছন্দ এবং জীবনধারার সিদ্ধান্তের কারণেও হেপাটাইটিসে কেউ আক্রান্ত হয়। রোগীর প্রতি সকলের এই বিরুপ দৃষ্টিভঙ্গি পরিস্থিতি আরও বিগড়ে দিতে পারে। একঘেয়ে গোড়ামি সমাজের অগ্রগতির পথেও বাঁধা।      

একত্রিত হয়ে এসব ভুল ধারণা দূর করার আহ্বান করেছেন ডাক্তার অমিত। তিনি বলেন, রোগ নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা, প্রাথমিক পর্যায়ে  শিক্ষাপ্রচার এবং আপপ্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা অত্যাবশ্যকীয়। তবেই সকল সাহায্য প্রত্যাশীদের সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব।  

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

;

ভিটামিনের ‘ডি‘ এর অভাব পূরণ করবে মাশরুম



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মাশরুম

মাশরুম

  • Font increase
  • Font Decrease

একটা সময় ছিল যখন আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ ভিটামিনের অভাবের কথা ভাবতো না। কারণ তাজা এবং পুষ্টিকর শাক, সবজি এবং ফল প্রায় ঘরে ঘরে পাওয়া যেত। বা বাজারেও ছিল তা বেশ সহজলভ্য। শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ সব অভাবই পূরণ করে এসব খাবার। এখন মানুষের জীবনে বেড়েছে ব্যস্ততা। অল্প পরিশ্রমে এখন যতটা সম্ভব বেশি পু্ষ্টি গ্রহণ করা এখন বেশ কঠিন হয়ে উঠছে।

বিভিন্ন প্রকার মাশরুম

ভিটামিন ডি-এর অভাব একটি অন্যতম গুরুতর সমস্যা। এর অভাবে অস্টিওম্যালেশিয়া, রিকেটস, কোমড় বা হাঁটুতে ব্যথা, হাড় ক্ষয়সহ নানারকম গুরুতর সমস্যা হয়।  বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা যেতে পারে। এতে শিশুদের হাড়ের বিকাশ পরিপূর্ণ হয় না। ক্যালসিয়ামের অভাবে তোদর হাড়ে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, পা ধনুকে মতো বেঁকেও যায়। একে রিকেটস রোগ বলে। ভিটামিন ডি এর অতিরিক্ত অভাব হলে শিশু চিরতরে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে।

ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুর রিকেটস রোগ

এই সমস্যার সমাধান হতে পারে মাশরুম। কারণ সাধারণত ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার বেশ খরচ সাপেক্ষ। মাছের লে, চর্বিযুক্ত মাছ, মাখন, ঘি, দুধ-এই জাতীয় খাবারে উচ্চপরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। উদ্ভিজ খাবারে যে পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকে তা অভাব পূরণে পর্যাপ্ত নয়। তবে এই ক্ষেত্রে মাশরুম কিছুটা ব্যতিক্রম।  এই খাবার যেমন পুষ্টিকর, তেমন সুস্বাদু। এক ইন্সটাগ্রাম রিলে পুষ্টিবিদ লিন্ডি কোহেন বলেন, ‘ভিটামিন ডি‘য়ের চমৎকার উৎস হলো মাশরুম। মাশরুম খাওয়ার যেমন নানা রকম পুষ্টিকর সুবিধা রয়েছে, তেমনই এটি বেশ সাশ্রয়ী। অন্যান্য দামী খাদ্যের বিকল্প হিসেবে মাশরুম খাওয়া একটি ভালো পদক্ষেপ হতে পারে। তবে উত্তম এই খাদ্য উপাদানকে আরও বেশি লাভজনক করা যেতে পারে। খুব ছোট একটি পদক্ষেপের মাধ্যমেই মাশরুমের পুষ্টিগুণ বাড়ানো যায়।’

রান্না করা মাশরুম

তিনি পরামর্শ দেন, বাইরে থেকে কিনে এনে মাশরুমকে রান্না করার আগে রোদে রাখতে। সকালের পরপর ১ থেকে ২ ঘণ্টার জন্য উন্মুক্ স্থানে মাশরুমকে রোদ পোহাতে রাখা যেতে পারে। লম্বা ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট বা চওড়া পাত্রে মাশরুমগুলোকে ছড়িয়ে দিয়ে রোদে রাখা যেতে পারে। এতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মাশরুমের বেশিরভাগ অংশ রোদের সংস্পর্শে আসতে পারে।  বিষুবরেখা থেকে দূরের অঞ্চলে এবং শীতকালে চাষ করা মাশরুমে ভিটামিন ডি এর কিছু ঘাটতি দেখা যায়। কারণ মাশরুমের ধরন, সূর্যের আলোর তীব্রতা ও সংস্পর্শ, চাষের সময়- বিভিন্ন বিষয়ের উপর মাশরুমের পুষ্টির সহজলভ্যতা নির্ভর করে।  

রোদের আলোয় ভিটামিন ডি

আমাদের দেশে যেসব মাশরুম খাওয়া হয় তা সম্পূর্ণরূপে ভিটামিন ডি সরবরাহ করতে পারে কিনা- তা নিয়ে সন্দিহান পুষ্টিবিদরা। ভারতীয় চিকিৎসক শুভ রমেশ এই নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। মাশরুমে এরগোস্টেরল নামের একটি যৌগ রয়েছে। সূর্যরশ্মি যখন মাশরুমে পড়ে তখন অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে এটি ভিটামিন ডি-২ তে রূপান্তরিত হয়। সকালেরেোদ শরীরে পড়লে যেমন শরীরে ভিটামিন ডি-৩ সংশ্লেষণ হয়, অনেকটা অনুরূপ পদ্ধতিতেই এই প্রক্রিয়া হয়। তবে ভিটামিন ডি২ এবং ডি৩ এর কার্যকারিতা এবং ধরন ভিন্ন হয়। ডি৩ সাধারণত ডি২ এ তুলনায় রক্তে ভিটামিন ডি বাড়াতে ও ধরে রাখতে বেশি কার্যকর।      

 তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

;

পিরিয়ডে হেভি ফ্লো-এর দিনগুলো হোক হ্যাসেল-ফ্রি



লাইফস্টাইল ডেস্ক বার্তা২৪.কম
পিরিয়ডে হেভি ফ্লো-এর দিনগুলো হোক হ্যাসেল-ফ্রি

পিরিয়ডে হেভি ফ্লো-এর দিনগুলো হোক হ্যাসেল-ফ্রি

  • Font increase
  • Font Decrease

পিরিয়ড মানেই মুড সুইং, ক্র্যাম্প, পেইন। তবু এটুকুই যথেষ্ট না। পিরিয়ডের সবচেয়ে কমন ফেনোমেনা হলো রক্তক্ষরণ, যা বয়স ও ব্যক্তিভেদে বিভিন্নরকম হয়। কারও কারও শুরুতে হেভি ফ্লো হয়ে পরে কমে যায়, আবার কারও পুরো সময়জুড়েই হালকা অথবা ভারী ব্লিডিং হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পিরিয়ডের সময় স্বাভাবিক রক্তক্ষরণের পরিমাণ ৩০-৫০ মিলিলিটার, কিন্তু যখন রক্তক্ষরণের মাত্রা এর চেয়ে বেশি হয়ে যায়, মেডিকেলের ভাষায় তাকে বলে হেভি মেন্সট্রুয়াল ব্লিডিং বা এইচএমবি। ধারণা করা হয়, শতকরা ২৫ ভাগ নারীর হেভি ফ্লো হয়। 

যেহেতু হেভি ফ্লো হলে প্রতি ২-৩ ঘন্টায় ন্যাপকিন পাল্টানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, এবং স্বচ্ছন্দে প্রতিদিনের কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এমনকি ভালোভাবে মেন্সট্রুয়াল হাইজিন মেইন্টেইন করাও কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে অনেকেই ডিপ্রেসড হয়ে যায়। 

এছাড়া হেভি ফ্লো হলে প্রয়োজনে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা ঠিক হবে কি হবে না, এ নিয়ে ক্লিয়ার কনসেপ্ট না থাকায় হেভি ফ্লো-এর সময়টা অনেকের জন্যই খুবই পীড়াদায়ক মনে হয়। বিশেষভাবে কর্মজীবী নারীরা এই বিষয়টা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন থাকে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন পরে থাকার সাথে গাইনোকোলজিকাল সমস্যার কোনো সম্পর্ক নেই। শুধু ন্যাপকিন কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে সেটা যেন সর্বোচ্চ শোষণক্ষমতা নিশ্চিত করতে পারে।


কারও ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন যদি ভালো শোষণক্ষমতা সম্পন্ন হয়, তবে হেভি ফ্লো-এর সময়ও কোনোরকম জটিলতা ছাড়াই ১০-১২ ঘন্টা পরে থাকা সম্ভব। তাই শুধুমাত্র গৎবাঁধা ধারণার উপর নির্ভর না করে, হেভি ফ্লো-এর কঠিন এই সময়টা স্বস্তি ও সুরক্ষার সাথে কাটাতে এমন স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা উচিত, যা সর্বাধিক সময় ধরে সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে। পাশাপাশি ইনফেকশন এড়াতে পরিষ্কার অন্তর্বাস ব্যবহার করতে হবে, প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

;