কমলালেবু খোসার ১০ দারুণ ব্যবহার
এ সময়ের মৌসুমি ফল কমলালেবু পাওয়া যাবে প্রায় প্রতি ঘরেই। উপকারী সাইট্রাস ঘরানার এই ফলটি শুধু স্বাদের জন্যই নয়, তার নানাবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্যেও পরিচিত। কমলালেবু খাওয়া শেষে নিশ্চিতভাবে তার খোসা ফেলে দেওয়া হয়। অথচ ফেলনা এই জিনিসটি ব্যবহার করা যাবে চমৎকার সকল কাজে। নিজের পরিচর্যা থেকে ঘরের আসবাব পরিষ্কার- সকল কাজেই কমলালেবুর খোসা দারুণ উপযোগী। জেনে নিন কমলালেবু খোসার ১০টি ব্যবহার।
১. অলিভ অয়েল ও কমলালেবুর খোসা মিশ্রণে খুব সহজেই তৈরি করে নিন অরেঞ্জ ইনফিউজড অলিভ অয়েল। অলিভ অয়েলের সাধারণ স্বাদের মাঝে কমলালেবুর মিষ্টি সুবাসের টুইস্ট যেকোন সালাদ বা রান্নায় ভিন্নতা আনবে।
২. লাল চায়ের সাথে আদা, লেবু, লবঙ্গ বা দারুচিনি তো খাওয়া হচ্ছেই। এই শীতে লাল চায়ে কমলালেবুর সুবাস ও স্বাদ আনতে লাল চায়ের সাথে যোগ করুন কমলালেবুর খোসা।
৩. কেক, মাফিন, পায়েস, পুডিং কিংবা সালাদে সাইট্রাস স্বাদ ও গন্ধ আনতে চাইলে কমলালেবুর খোসার চেয়ে ভালো আর কোন উপাদান হতেই পারে না। কমলালেবুর খোসার গুঁড়া অল্প পরিমাণ ব্যবহারেই পরিচিত এই খাবারগুলোতে আনা যাবে ভিন্নতা।
৪. কাঠের পুরনো আসবাবপত্রের চাকচিক্য হারিয়ে গেছে? চিন্তা নেই, হাতে থাকা সদ্য ছিলে নেওয়া কমলালেবুর খোসা ঘষে নিন কাঠের আসবাবের উপর। কাঠের আসবাবের মলিনতা কমে আসবে অনেকখানি।
৫. বাজারে যত ধরনের ক্লিনজিং স্প্রে ও পণ্য পাওয়া যায়, সবগুলোতেই থাকে নানা ধরনের ক্ষতিকর কেমিক্যাল উপাদান। যার ঘ্রাণ নিঃশ্বাসের সাথে গ্রহণ করাও ক্ষতিকর। কিন্তু ঘরের আসবাব ও জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখার তাগিদেই এই স্প্রেগুলো কিনতে হয়। তবে এই শীতকালে ক্ষতিকর স্প্রেগুলোকে একপাশে সরিয়ে কমলালেবুর খোসা ব্যবহার করে সহজেই ক্ষতিবিহীন নন-টক্সিক ক্লিনজিং স্প্রে তৈরি করা যায়। এর জনু প্রয়োজন হবে সাদা ভিনেগার ও কমলালেবুর খোসা। একটি কাঁচের জারে সাদা ভিনেগারের মাঝে দুই-তিনটি কমলালেবুর খোসা ডুবিয়ে রেফ্রিজারেটরে রেখে দিতে হবে তিন সপ্তাহের জন্য। এরপর এই মিশ্রণটি স্প্রে বোতলে নিয়ে প্রয়োজন মাফিক ব্যবহার করতে হবে।
৬. ধাতুর তৈরি বিভিন্ন জিনিসে পানির দাগ বসে যায় খুব সহজেই। সাবান বা গুঁড়া পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করার চেষ্টা করলেও এই দাগগুলো উঠতে চায় না। সাইট্রাস ধর্মের কমলালেবুর খোসা ধাতুর কল বা অন্যান্য জিনিসে ব্যবহার করলে খুব সহজেই পানির দাগ তুলে ফেলা সম্ভব হবে।
৭. মশা সাইট্রাস ঘরানার ফলের টক গন্ধ সহ্য করতে পারে না। ফলে লেবুর মতোই কমলালেবুর খোসা ঘরের কোনায় রেখে দিলে মশা থেকে নিশ্চিন্তে থাকা যাবে।
৮. মশার সাথে পিঁপড়ার উৎপাত নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন? যেখানে পিঁপড়ার আনাগোনা দেখবেন সেখানে ও তার আশেপাশে কিছু কমলালেবুর খোসা রেখে দিন কয়েকদিনের জন্য। পিঁপড়া নিয়ে আর সমস্যায় পড়তে হবে না।
৯. কমলালেবুর খোসা ও নারিকেল তেলের মিশ্রণে খুব চমৎকার অরেঞ্জ ইনফিউজড কোকনাট অয়েল তৈরি করা যায়। এই তেলের কয়েক ফোঁটাই ত্বকের পরিচর্যার জন্য যথেষ্ট। এই তেল তৈরির জন্য নারিকেল তেল গরম করে এতে শুকনো কমলালেবুর খোসা দিয়ে পনের মিনিট জ্বাল দিতে হবে। এরপর তেল ঠাণ্ডা করে ছেঁকে সংরক্ষণ ও ব্যবহার করতে হবে। অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ধর্ম বিশিষ্ট এই তেল ত্বকের জন্য খুব উপকারী।
১০. কমলালেবু খোসা থেকে তৈরি বডি স্ক্রাব হাত-পায়ের উজ্জ্বলতা ও কোমলতা আনতে সবচেয়ে ভালো কাজ করবে। কমলালেবুর খোসা শুকিয়ে ব্লেন্ড করে গুঁড়া করতে হবে। কমলালেবুর খোসা গুঁড়া এক চা চামচ, চিনি এক চা চামচ, মধু আধা চা চামচ ও অ্যালোভেরা পাতার জেল দুই চা চামচ মিশিয়ে তৈরি করতে হবে বডি স্ক্রাব।