রাজকন্যার চুল পেতে ব্যবহার করুন ভাতের মাড়!
চুলের যত্নে বহু উপাদান ব্যবহার করা হলেও ভাতের মাড় ব্যবহার খুব একটা প্রচলিত নয়। ভাতের মাড়ের মতো ফেলনা একটি উপাদানও যে চুলের যত্নে কার্যকর হতে পারে, এটা অনেকেরই অজানা। এই বিষয়টি জানাতে চলুন আপনাদের পরিচিত করা যাক চীনের একটি গোষ্ঠীর সাথে।
চীনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হুয়ানগ্লুও নামের একটি গ্রামে বাস করে রেড ইয়াও (Red Yao) নামক একটি গোষ্ঠী। মূলত এরা যেখানে বাস করে সে এলাকাটি ‘ল্যান্ড অব রাপাঞ্জেলস’ হিসেবে পরিচিত। কারণ এই গোষ্ঠীর বেশিরভাগ নারীদের রয়েছে কাল্পনিক রাজকন্যা রাপাঞ্জেলের মতোই লম্বা চুল। এমনকি গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও ‘ওয়ার্ল্ড লংগেস্ট হেয়ার ভিলেজ’ হিসেবে নাম লিখিয়েছে এই গ্রামটি।
জানা যায়, চুলের পরিচর্যার জন্য তারা অন্যান্য প্রাকৃতিক ও উপকারী উপাদানের সঙ্গে ব্যবহার করে প্রচুর পরিমাণ ভাতের মাড় বা বয়েলড রাইস ওয়াটার।
এমনকি গবেষণার তথ্য থেকেও দেখা যায়, ভাতের মাড়ে থাকা এক প্রকার কার্বহাইড্রেট আইনোসিটল ও অ্যামিনো অ্যাসিড চুলের সুস্বাস্থ্যে অবদান রাখে। দেখে নিন চুলের যত্নে ভাতের মাড় ব্যবহারের উপকারিতাগুলো।
চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে
ভাতের মাড়ের মতো এতো দ্রুত ও ভালোভাবে কোন উপাদানই চুল পড়া কমায় না এবং চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে না। বহু উপাদানের মাঝে এতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড সবচেয়ে ভালো কাজ করে। ভাতের মাড়ে অ্যামিনো অ্যাসিডসহ আরও পাওয়া যাবে ভিটামিন-বি, সি ও ই। ভাত মাড় ব্যবহারের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো, শ্যাম্পু ব্যবহারের পর ভাতের মাড়ের সাহায্যে চুল ধুয়ে কিছুক্ষণ পর সাধারণ পানিতে চুল ধুয়ে নেওয়া। সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহারই যথেষ্ট।
চুলের আগা ফাটা কমায়
চুলের অর্ধেক সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায় আগা ফাটার সমস্যায়। চুলের আগা ফাটার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকলেও, মূলত প্রোটিনের অভাবে এই সমস্যাটি দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে ভাতের মাড় খুব উপকারী। এখানেও ভাতের মাড়ের অ্যামিনো অ্যাসিড চুলের ক্ষতির মাত্রাকে কমাতে ও চুলের আগা ফাটার সমস্যা কমাতে কাজ করে। এর জন্য ভাতের মাড়ে চুলের আগা ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতি সপ্তাহে তিন বার এভাবে ব্যবহার করতে হবে ভাতের মাড়।
প্রাকৃতিক কন্ডিশনার
শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করা আবশ্যক। নতুবা সহজেই চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে ওঠে। কন্ডিশনার ব্যবহারে যে সমস্যাটি আর থাকে না। তবে কন্ডিশনারে যেহেতু প্রচুর পরিমাণ কেমিক্যাল উপাদান থাকে, তাই অনেকেই কন্ডিশনার ব্যবহার এড়িয়ে যেতে চান। সেক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেত পারে ভাতের মাড়। শ্যাম্পু করার পর ভাতের মাড় ব্যবহারে চুলের শুষ্ক ও রুক্ষভাব চলে যায় এবং চুলকে স্বাস্থ্যকরে দেখায়।
দূর করবে খুশকি
চুলের সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হলো খুশকি। বিশেষত শীতকালীন সময়ে এই সমস্যাটি আরও বেড়ে যায়। এই সমস্যাটি থেকেও মুক্তি মিলবে ভাতের মাড় ব্যবহারে। নিয়মিত অল্প পরিমাণ ভাতের মাড়ের সাহায্যে চুল ধুয়ে নিলে মাথার ত্বক তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও আর্দ্রতা পাবে। এতে খুশকির সমস্যাটি সহজে দেখা দেবে না এবং ১৫ দিনের মাঝে খুশকির সমস্যা কমে যাবে।
চুল করবে কোমল ও উজ্জ্বল
চুল সোজা বা কোকড়া যেমনটাই হোক না কেন, কোমল ও উজ্জ্বল চুল সকলেই চায়। এর জন্য এর জন্য দীর্ঘ সময় ধরে কোন হেয়ার মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। ভাতের মাড় ব্যবহারই যথেষ্ট। যেকোন সময় ভাতের মাড়ের সাহায্যে চুল ধুয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে এরপর চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।