অতিরিক্ত চিন্তা কমানোর ছয় সহজ উপায়
অতিরিক্ত চিন্তা করে কোন লাভ হয় না এবং কোন ঘটনার ফলাফল যা হওয়ার সেটাই হয়। কিন্তু এরপরেও অতিরিক্ত চিন্তাকে (Overthinking) দূরে সরিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। কোন না কোনভাবে মাথায় জেঁকে বসে। এক অতিরিক্ত চিন্তা থেকে অস্থিরতা, অশান্তি, দুশ্চিন্তা, মাথাব্যথা, উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যাগুলোও দেখা দিতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত চিন্তাকে বাদ দিতে জানলেই সরিয়ে রাখা সম্ভব বেশিরভাগ সমস্যা। কীভাবে বাদ দেওয়া যাবে অনাকাঙ্ক্ষিত এই অভ্যাসটি? সেটাই তুলে আনা হয়েছে আজকের ফিচারে।
অতিরিক্ত চিন্তা সম্পর্কে আগে জানুন
কীভাবে অতিরিক্ত চিন্তা করা কমাবেন সেটা জানার আগে জানুন অতিরিক্ত চিন্তার উৎপত্তি ও ধরণ সম্পর্কে। অতিরিক্ত চিন্তা কখন, কোন কারণে শুরু হচ্ছে সেটা জানতে পারলে তা রোধ করাও সহজ হয়ে যায়। ধরুন পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে চিন্তা কাজ করছে। সেটা চিহ্নিত করতে পারলেই অর্ধেক সমস্যা মিটে যাবে। এবারে চিন্তাকে কমানোর জন্য এটা মনে করুন, পরীক্ষা যেমন দিয়েছেন, ঠিক তেমনই ফল হবে। অহেতুক বাড়তি চিন্তা করলে ফলে কোন তারতম্য আসবে না। নিজেকে নির্ভার রাখতে এই পদ্ধতিটি খুব কার্যকর।
পরিচিত কারোর মতামত নিন
কোন একটি বিষয়ে একা একাই বাড়তি চিন্তা করে অসুস্থ হয়ে পড়ার মতো ঘটনা প্রায়শ হয়। এক্ষেত্রে অন্য কারোর সাথে সে বিষয় নিয়ে কথা বললে, আলোচনা করলে দুশ্চিন্তা অনেকটা কমে যায়। হয়তো আপনি এমন কোন বিষয় নিয়ে চিন্তা করছেন, যেটা নিয়ে চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই। কাছের কারোর সাথে আলোচনাকালে সে বিষয়টি সম্পর্কে তার মতামতের মাধ্যমে খুব সহজেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে এক্ষেত্রে এমন কারোর সাথে আলোচনা করতে হবে, যিনি আপনাকে ও আপনার অবস্থা বুঝে মতামত দিতে পারবে।
ইতিবাচক মনোভাব ধারণ করুন
একটু সময় নিয়ে ভাবুন তো, অতিরিক্ত চিন্তা কেন দেখা দেয়, কি নিয়ে দেখা দেয়? যেকোন পরিস্থিতিতে, অবস্থায় সর্বোচ্চ নেতিবাচক অবস্থার আশঙ্কা থেকেই অতিরিক্ত চিন্তার সূত্রপাত ঘটে। এ কারণেই মনরোগ বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন সবসময় ইতিবাচক মনোভাব ধারণ করার জন্য। যেকোন পরিস্থিতিতে ইতিবাচক মনোভাব অতিরিক্ত চিন্তা করা থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।
মনোযোগ ভিন্নদিকে রাখুন
অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা- বহুল প্রচলিত এই বাগধারার মতো বলতে হয়, অলস মস্তিষ্ক অতিরিক্ত চিন্তার জন্য দায়ী। মস্তিষ্ক যখন কাজ করার মতো কোন বিষয় পাবে না, তখন নিজ থেকে অতিরিক্ত চিন্তা করার জন্য পুরনো কোন বিষয়কে খুঁজে নেবে এবং সেই বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করবে। এই পরিস্থিতি থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্য কার্যকর কোন কিছু নিয়ে ভাবতে হবে অথবা কাজ করা শুরু করতে হবে। এমনকি সাধারণ হাঁটা, ঘর পরিষ্কার করা, কাপড় গুছানোর মত কাজগুলোও অতিরিক্ত চিন্তা থেকে মস্তিষ্ককে দূরে রাখবে।
পারফেকশনিস্ট না হলেও সমস্যা নেই
সঠিকভাবে বললে, পারফেকশনিস্ট হলেই অতিরিক্ত চিন্তার সমস্যাটি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকখানি। কোন কাজ একদম পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ও মনের মতো হয়েছে কি না, এই চিন্তা থেকেই দেখা দেয় অতিরিক্ত চিন্তার সমস্যা। অবশ্যই প্রতিটি কাজ সঠিকভাবে করত হবে, কিন্তু তার জন্য বাড়তি মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা বাদ দিন
নিজের চারপাশের সবকিছুকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা শুধু যে মানসিক অশান্তি তৈরি করে তাই নয়, এনে দেয় বাড়তি অতিরিক্ত চিন্তার বোঝাও। সবার আগে একটা বিষয় মাথায় আনতে হবে, নিজের চারপাশের সবকিছু আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। এটা প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার। অতিরিক্ত মানসিক ও শারীরিক চাপ নিয়ে সবকিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে আনার ফল স্বরূপ আবশ্যিকভাবে দেখা দেবে অতিরিক্ত চিন্তার সমস্যা। তাই এই বাড়তি চাপ থেকে নিজেকে যথাসম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
আরও পড়ুন: