এ সময়ে মন ভালো রাখবে যে খাবারগুলো
বৈশ্বিক মহামারীর আঁচ দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। যার প্রভাব পড়ছে প্রতিদিনের স্বাভাবিক জীবন প্রবাহের উপরে। অস্থির এ সময়ে নিজেকে সুস্থির রাখা বেশ চ্যলেঞ্জিং একটি বিষয়। এছাড়া লকডাউনে ঘরের চার দেওয়ালের মাঝে দিনের পর দিন বসে থাকতে হচ্ছে বলে, স্বাভাবিক নিয়মেই মানসিক স্বাস্থ্যের উপর তার ছায়া দেখা দেবে।
এ সময়ে অস্থিরতা, বিষণ্ণতা, হতাশা, মুড সুইংয়ের মত সমস্যাগুলোও তাই বেড়ে যায় অনেকটা। ‘ফুড অ্যান্ড মুড’ এর লেখিকা ও পারসনা নিউট্রিশনের মেডিক্যাল অ্যাডভাইসরি বোর্ডের একজন সদস্য ডায়েটিশিয়ান এলিজাবেথ সমার সিএনএন হেলথকে জানিয়েছেন বিশেষ কিছু উপকারী খাদ্য উপাদানের কথা। যা বর্তমান পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে অবদান রাখবে।
সবুজ সবজি: কচু শাক, ব্রকলি ব্রাসেলস স্প্রাউট
এ ধরনের সবুজ সবজি হল ফলেট, যা এক প্রকার ভিটামিন-বি এর অন্যতম বড় উৎস। এই ফলেট শরীরে সেরোটোনিন হরমনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে বলে জানাচ্ছে গবেষকেরা। এদিকে বেশ কিছু পরীক্ষামূলক গবেষণা থেকে দেখা গেছে শরীরে ফলেটের ঘাটতি থেকে বিষণ্ণতা, শারীরিক ক্লান্তি ও স্মৃতিশক্তিজনিত সমস্যা দেখা দেয়।
প্রোবায়োটিক্স: টকদই, কিমচি
পাকস্থলী সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে এবং খাদ্য ভালোভাবে পরিপাক হতে প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণের উপরে জোর দেওয়া হয় সবসময়। দারুণ বিষয় হল, গবেষকেরা জানাচ্ছেন, পেটকে ভালো রাখার সঙ্গে মনকেও ভালো রাখবে এই খাবারগুলো। একটি গবেষণার তথ্য থেকে দেখা যায়, প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার গ্রহনে মন ভালো থাকে, নেতিবাচন চিন্তা দূরে থাকে এবং কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
দানাদার খাবার: ওটস, ব্রাউন রাইস, হোল হুইট ব্রেড
দানাদার খাবারে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন-বি, যা শারীরিক এনার্জি ও মস্তিষ্কের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। এছাড়া এতে থাকা আঁশ রক্তে চিনির মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা একইসাথে ডায়বেটিসের সম্ভাবনা এবং ঘনঘন মন-মেজাজ পরিবর্তন হওয়ার সমস্যা কমায়।
ভিটামিন-ডি: ডিমের কুসুম, তৈলাক্ত মাছ, দুধ
হাড়কে দৃঢ় ও সুস্থ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভিটামিন-ডি অপরিহার্য। কিন্তু গবেষকেরা জানাচ্ছেন, মানসিক স্বাস্থ্যের সাথেও রয়েছে ভিটামিন-ডি এর সম্পর্ক। সাম্প্রতিক সময়ের একটি মেটা-অ্যানালিসিস থেকে ৩০ হাজারের বেশি মানুষের উপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ভিটামিন-ডি এর অভাব থেকে বিষণ্ণতা দেখা দেওয়ার সম্পর্ক রয়েছে।
পানীয়: চা ও কফি
চা ও কফি হল ক্যাফেইনের সবচেয়ে সহজলভ্য উপাদান। ক্যাফেইন গ্রহনে সার্বিকভাবেই মন ভালো হয়, নিজেকে ফুরফুরে লাগে। সেই সাথে উষ্ণ পানীয়ের উষ্ণতা মনকে প্রশান্তি দেয়।
ডার্ক চকলেট
চকলেট সবসময়ই জনপ্রিয় একটি খাবার। আর যেকোন সময়েই চকলেট মন ভালো করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তবে সেটা হতে হবে ডার্ক চকলেট এবং পরিমিত পরিমাণে। ডার্ক চকলেটে থাকা ক্যাফেইন ও থিওব্রোমাইন নামক উপাদান মনকে ভালো করতে এবং সেরোটোনিনের মাত্রা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।