আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে রাতের অন্ধকারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা সীমান্তের শূন্যরেখার মধ্যে লোহার বৈদ্যুতিক খুঁটি ও অজানা একটি যন্ত্র স্থাপন করে। পতাকা বৈঠকে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রংপুর ৬১ ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) এর অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল শেখ মুহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দিনগত মধ্যরাতে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সদর ইউনিয়ন সীমান্তের শূন্যরেখার মধ্যে লোহার বৈদ্যুতিক খুঁটি ও অজানা একটি যন্ত্র স্থাপন করে বিএসএফ।
বিজিবি ও স্থানীয়রা জানায়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের প্রধান পিলার ৮২৯ নম্বরের ২ নম্বর উপপিলার পাটগ্রাম সদর ইউনিয়নের গাটিয়ারভিটা সীমান্তের শূন্যরেখার ৫০ গজ অভ্যন্তরে রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার বিএসএফের ৯৮ ব্যাটালিয়নের ফুলকাডাবরী ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা সে দেশের নির্মাণ শ্রমিকদের নিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও যন্ত্র স্থাপন করে।
পরদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে চাষাবাদ করতে যাওয়া কৃষকরা বিষয়টি দেখতে পেয়ে বিজিবিকে খবর দেয়। বিজিবি বিএসএফের নিকট তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত বৈদ্যুতিক খুঁটি ও যন্ত্র সরিয়ে নিতে বলে এবং পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেয়। পরবর্তীতে ওই সীমান্ত পয়েন্টে বুধবার সন্ধ্যায় (সাড়ে ৫ টায়) বিএসএফ-বিজিবির মধ্যে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ২০ মিনিট স্থায়ী বৈঠকে ভারতের পক্ষে ৬ জন বিএসএফের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নের্তৃত্ব দেন ইন্সপেক্টর জিতেন্দ্র সিং। বাংলাদেশের পক্ষে ৬ জনের নের্তৃত্ব দেন সুবেদার মাহবুবর রহমান। বৈঠকে কোনোকিছু না জানিয়ে রাতের অন্ধকারে শূন্যরেখার মধ্যে খুঁটি ও যন্ত্র স্থাপন করার প্রতিবাদ জানায় বিজিবি।
বিএসএফকে শূন্যরেখার মধ্যে কোনোকিছু নির্মাণ বা স্থাপনে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন মেনে চলার আহ্বান জানায় বিজিবি। নির্মিত খুটি ও যন্ত্র সরায়ে নিতে আহ্বান জানালে স্থাপিত যন্ত্র ও খুঁটি সরিয়ে নেয় বিএসএফ।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রংপুর ৬১ ব্যাটালিয়ন (তিস্তা-২) এর অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল শেখ মুহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম বলেন, বিএসএফ জানিয়েছ তাদের চা বাগানে নাকি বিভিন্ন ধরণের ক্ষতি হয়, এজন্য যন্ত্র ও খুঁটি স্থাপন করেছিলো। আমরা স্পষ্ট জানিয়েছি শূন্যরেখার মধ্যে আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি অনুযায়ী কোনোকিছু স্থাপনা করার সুযোগ নেই। না জানিয়ে করা যাবে না। এ নিয়ে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছে। তারা নির্মিত স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছে। চুপিসারে আর যেনো না করে সেজন্য সর্তক দৃষ্টি রাখা হয়েছে।