চুয়াডাঙ্গায় পৃথক হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
চুয়াডাঙ্গায় পৃথক তিনটি হত্যা মামলায় এক পুলিশ সদস্যসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অস্ত্র মামলায় একজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে হত্যা মামলায় ছয়জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহা. রবিউল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। পরে দণ্ডিতদের পুলিশ প্রহরায় চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সিআইডির কনস্টেবল ও খুলনা জেলার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা গ্রামের অসীম কুমার ভট্টাচার্য, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কন্দর্পপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন আনার ও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা রামনগর গ্রামের জিয়ারুল ওরফে জিয়া। এরমধ্যে অস্ত্র মামলায় জিয়ারুল ওরফে জিয়াকে আরো ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৮ জুন রাতে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার মাদ্রাসাপাড়ায় সিআইডির কনস্টেবল আসীম কুমার ভট্টাচার্য ছুরিকাঘাত করে শাশুড়ি শেফালি আধিকারীকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। নিহতের স্বামী সদানন্দ আধিকারী বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় মামালা দায়ের করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলমডাঙ্গা থানার এসআই সাইফুল ইসলাম একই বছরের ২৭ জুন একজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন। ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসামির উপস্থিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
এদিকে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে কন্দর্পপুর গ্রামে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই দুপুরে আনোয়ার হোসেন আনারসহ বেশ কয়েকজন মিলে কুপিয়ে ও পিটিয়ে প্রতিবেশী গিয়াস উদ্দিনকে হত্যা করে। নিহতের ভাই বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে জীবননগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সিরাজুল ইসলাম সাতজনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আসামিদের উপস্থিতিতে আনোয়ার হোসেন আনারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। অন্য ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দেন।
এছাড়া ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর রাতে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের রতিরামপুর গ্রামে বাড়ি ফেরার সময় আব্দুর রহিমকে দৃর্বৃত্তরা বোমা মেরে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে জীবননগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে জিয়ারুল ওরফে জিয়াকে পুলিশ অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শফিকুল ইসলাম পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন ২০১৪ সালের ৩১ জানুয়ারি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন।