করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৩১ জন মারা গেছেন। এরমধ্যে পুরুষের সংখ্যা ১৩৬ জন এবং মহিলার সংখ্যা ৯৫ জন। এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৮ হাজার ১২৫ জন।
আজ সোমবার (১৯ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৭৩ জন, চট্টগ্রামে ৪৩ জন, রাজশাহীতে ১৬ জন, খুলনায় ৫৭ জন, বরিশালে ৬ জন, সিলেটে ৮ জন, রংপুরে ১৭ জন এবং ময়মনসিংহে ১১ জন।
এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৬৭ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৪৬ জন এবং বাসায় ১৮ জন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬৩৮টি পরীক্ষাগারে ৪৫ হাজার ১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৩২১ জন। এনিয়ে শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ লাখ ১৭ হাজার ৩১০ জন।
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় নগরীর টাইগারপাসের সমাবেশ থেকে তিনি এ আল্টিমেটাম দেন।
এসময় হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা ভুলে যায়নি আওয়ামী লীগের সহায়তায় এই ইসকন কীভাবে গত ১৬ বছর পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে উঠেছিল। আজকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে স্বৈরাচারের সঙ্গী হয়ে ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে ইসকন। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই ভারতের বুবু, ভারতের হাসিনা এই বাংলাদেশে তোমার আর ঠাঁই হবে না। ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করা হয় আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ সেই ষড়যন্ত্র রুখে দিবো।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, ৫ আগস্টের পর আমাদের দাঁড়ি-টুপিওয়ালা ভাইয়েরা মন্দিরগুলো পাহারা দিয়েছে। তারা রাস্তার মধ্যে জামায়াতে নামাজ আদায় করেছে। আমাদের দ্বারা কোনো হিন্দু ভাইয়ের সম্পত্তি উচ্ছেদ হয় নাই, আমাদের দ্বারা কোনো সংখ্যালঘুর সম্পদ লুণ্ঠন হয় নাই। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তি বিদেশে বসে বাংলাদেশে অশান্তি করতে বারবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চায়, ভারতে বসে আওয়ামী যত প্ল্যান আছে এগুলোর বাস্তবায়ন কখনও এই বাংলাদেশে হবে না, হবে না, হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সুশীল সমাজ একটা বিষয় এড়িয়ে যায়। এই বাংলাদেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদ রয়েছে। আমাদের দেশে সকল ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। যে হিন্দু সে হিন্দু ধর্ম পালন করবে, যে বৌদ্ধ সে বৌদ্ধ ধর্ম পালন করবে, যে খ্রিষ্টান সে খ্রিষ্টান ধর্ম পালন করবে। আমরা সকল ধর্মের মানুষের অধিকার রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু ভারতের দোহাই দিয়ে ধর্মের নামে যেসব উগ্রবাদী সংগঠন এসব কর্মকাণ্ড করবে তাদেরকে বাংলাদেশে একহাত জায়গাও দেওয়া হবে না।
এসময় তিনি বলেন, এই ইসকন একটা জঙ্গি, তারা হলো স্বৈরাচারের সঙ্গী। তাদেরকে নিষিদ্ধ করতে হবে। জড়িতদের গ্রেফতার করতে হবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
সমাবেশে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, জঙ্গি ইসকনকে বিতাড়িত করা আমাদের জন্য হাতের ময়লা। যে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা এই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, যে রক্তের উপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ এসেছে, সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এই চিন্ময়রা উসকানি দেয়। সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে খুনি হাসিনারা উসকানি দেয়। সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে জঙ্গি ইসকনরা উসকানি দেয়। সেই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে ভারতের কিছু প্রেতাত্মারা উসকানি দেয়।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে সকল প্রেত্মাতাদের বলে দিতে চাই, আমরা ১৬ বছরের খুনি হাসিনাকে দেশ ছাড়া করেছি এবং ছোটোখাটো কিছু জঙ্গি ইসকনকে দেশছাড়া করা আমাদের জন্য হাতের ময়লা।
এসময় ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা সকল ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু কেউ যদি আমাদের সহানুভূতিকে দুর্বলতা মনে করে আমরা কি তাদেরকে ছেড়ে দিবো? আমরা কি এই জঙ্গি ইস্কনকে ছেড়ে দিবো? আমরা আমাদের সাইফুল ভাইয়ের খুনিদের বিচার দেখতে চাই কিনা। এই বীর চট্টলায় খুনি ইস্কনের জায়গা হবে কিনা? এসময় সমস্বরে সবাই বলেন ‘না’।
এসময় সারজিস আলম বলেন, বীর চট্টলাবাসী আপনাদেরকে বলে দিতে চাই আমাদের চারপাশে অনেক চক্রান্ত ছিল, আরও চক্রান্ত হবে কিন্তু আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সকল চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে।
এর আগে চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে সাইফুল ইসলামের দ্বিতীয় নামাজে জানাজায় অংশ নেন হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম। এসময় আরও অংশ নেন সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফ ও চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, নগর জামায়াতের আমির শাহাজাহান চৌধুরী, বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ।
এদিকে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে চট্টগ্রাম। বেলা এগারোটা থেকে চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় বিক্ষোভ শুরু করে আইনজীবীরা। এসময় সাইফুল ইসলাম আলিফের মরদেহ সেখানে আনা হলে সেটি জড়িয়ে ধরে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। হাসনাত আব্দুল্লাহকেও কাঁদতে দেখা যায় সেখানে। পরে আদালতের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকেন আইনজীবীরা। নিউ মার্কেট চত্বরেও আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেন। শহরের অলিতে-গলিতে মিছিল হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো নেতাকর্মী নিয়ে বিক্ষোভ করছে। বিকাল তিনটায় বহদ্দারহাটে শিবির মহানগরী উত্তর শাখা এক বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে আশেপাশের উপজেলায়। গতকাল বাঁশখালী, সীতাকুণ্ডসহ কয়েকটি উপজেলায় আইনজীবী সমিতি ও রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে বিক্ষোভ হয়। আজ সীতাকুণ্ড, মিরসরাইসহ কয়েকটি উপজেলায় মিছিল হয়। এছাড়াও নগরে গতকাল রাতভর মিছিল চলে ইসকনের বিরুদ্ধে। সকালে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন নগরবাসী।
এদিকে বেলা সাড়ে এগোরোটায় শহরের টাইগারপাসে সংহতি সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শিবির, ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদসহ অন্যান্য সমমননা ছাত্র সংগঠনগুলো। জানাজা শেষে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে নগরের টাইগারপাসের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।
ছাত্র-জনতা স্লোগানে স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে তুলে। টাইগারপাসে জড়ো হলে ওই এলাকা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। এসময় সবার হাতে ছিল জাতীয় পতাকা ও কালেমা খচিত পতাকা। পরে সেখানে সমাবেশ শেষ করে মিছিল নিয়ে বহদ্দারহাটের দিকে যায় ছাত্র-জনতা।
অপরদিকে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল দশটায় সীতাকুণ্ডের কুমিরায় অবস্থিত মূল ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা এক বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সেখানে প্রথমে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মিছিল নিয়ে মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়। এর আগে গতকাল ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে সীতাকুণ্ডে বড় ধরনের মিছিল ও বিক্ষোভ করে ছাত্র-জনতা।
জুলাই গণহত্যায় জড়িতদের বিচার দাবিতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর বহদ্দারহাট থেকে শুরু হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি মুরাদপুর-দুই নম্বর গেট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় প্লানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ডা. ওসামা রাইয়ান।
এসময় চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি ফখরুল ইসলাম ও মহানগর দক্ষিণের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বলা হয়, অভ্যুত্থানের তিনমাস পার হলেও আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। এখনো তারা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পায়তারা করছে। জুলাই অভ্যুত্থানে হিন্দু-মুসলমান সকল ধর্ম ভেদাভেদ ভুলে আন্দোলন করেছিলেন ছাত্র-জনতা। কিন্তু পতিত সরকারে দোসর ও দিল্লি ষড়যন্ত্রে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্র চলছে।
বক্তরা হুঁশিয়ারি করে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা (আওয়ামী লীগ) হুংকার দিচ্ছে। আমরা বলে দিতে চাই। আপনার কাপুরুষের দল। আপনারা ছাত্রলীগ দিয়ে ও পেটুয়া পুলিশ দিয়ে আমাদের দমন করতে চেয়েছিলেন। রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল শক্তি দিয়ে আমাদের দমন করার চেষ্টা করেছিলেন। আমরা ছাত্রসমাজ বলে দিয়েছিলাম কোনো ফ্যাসিবাদকে এই বাংলার মাটিতে আমরা টিকতে দেব না।
শক্ত হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাতে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচারের পলায়নের পর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে একদিকে দীর্ঘ দেড় দশক ধরে অধিকার বঞ্চিত মানুষের চাওয়া পাওয়ার হিসাব, অপরদিকে পলাতক স্বৈরাচারের প্রতিশোধের আগুন সবমিলিয়ে দেশে ঘোলাটে পরিস্থিতি বিরাজমান। পলাতক স্বৈরাচার গত ১৫ বছরে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অনিয়মের পাহাড় তৈরি করেছিল। কেড়ে নিয়েছিল জনগণের সকল অধিকার। সেই হারানো অধিকার পুনরায় প্রতিষ্ঠা আর অনিয়মের পাহাড় ভাঙতে স্বৈরাচারমুক্ত পরিবেশে বর্তমানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দাবি দাওয়া নিয়ে রাজপথে নেমে আসছে। অবৈধ ক্ষমতা আর অবৈধ সুবিধা হারানো পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা সরকারকে অস্থিতিশীল করতে জনগণের দাবি আদায়ের এই আন্দোলনকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণের অধিকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যু কাজে লাগিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে চক্রান্তের জাল বিছিয়েছে। সারা দেশে একটি পরিকল্পিত নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা ক্রমেই দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। জনগণের মনে অসহিষ্ণুতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত কয়েক দিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব ঘটনা ঘটেছে এসব ঘটনাগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার অবকাশ নেই। সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা বিনষ্টকারীদের অপতৎপরতা উদ্বেগজনক হয়ে দেখা দিয়েছে।
জনগণের যৌক্তিক আন্দোলন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ ‘সাবোটাজ’ করছে কি না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তা নিবিড়ভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, মাফিয়া সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে জনতার আন্দোলনে যেই শিক্ষার্থীরা সামনের কাতারে থেকে সাহসী ভূমিকা রেখেছিল, হঠাৎ করেই এখন তারা কেন একে অপরের বিরুদ্ধে এতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠলো? জনমনে এই প্রশ্নটিই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। ছাত্র-জনতার এমন একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা কেন শিক্ষাঙ্গনে ভাঙচুর চালাবে? কেন আগুন ধরিয়ে দেবে? এসব ঘটনা স্বাভাবিকভাবে দেখার সুযোগ নেই। পরিস্থিতির ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে।
দেশের চলমান পরিস্থিতি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, সরকারকে আরেকটু সময় দিন। আরেকটু ধৈর্যের পরিচয় দিন। শান্ত থাকুন। পরিস্থিতির উপর সতর্ক এবং সজাগ দৃষ্টি রাখুন। দলমত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের প্রত্যেককে মনে রাখতে হবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যাত্রাপথে ষড়যন্ত্রকারীদের বাধা বিচক্ষণতার সঙ্গে অতিক্রম করতে ব্যর্থ হলে স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণকে চরম মূল্য দিতে হবে।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামে অবস্থিত ঘসেটি বেগমের নির্মিত ঐতিহাসিক মসজিদটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বাংলা, বিহার এবং ওড়িশ্যার নবাব আলীবর্দী খানের বড় মেয়ে এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার খালা ঘসেটি বেগম প্রায় সাড়ে ৩’শ বছর আগে এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি বিলীন হওয়ার পথে।
বাউফল উপজেলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, মসজিদটির নির্মাণকাল সংক্রান্ত সঠিক ইতিহাস কোথাও সংরক্ষিত নেই। স্থানীয়দের মতে, মধ্যযুগে এই অঞ্চল জমিদারির প্রধান কেন্দ্র ছিল। তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী এই অঞ্চলে ঘুরতে এসে মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন ঘসেটি বেগম। তবে দীর্ঘ সময় ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং সরকারী উদ্যোগের অভাবে আজ এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি অযত্নে পড়ে আছে এবং ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় জনগণের মতে, মসজিদটি কেবল ধর্মীয় নয়, ঐতিহাসিক গুরুত্বেও গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচীন এই স্থাপনাটি সংরক্ষণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। এটির সংস্কার করা গেলে এটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার ইতিহাসকে তুলে ধরতে সহায়ক হবে।