মানিকগঞ্জে ইউনিয়ন পর্যায়ে দৈনিক ৩৯ হাজার ব্যক্তি টিকা পাবে

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস
  • খন্দকার সুজন হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

করোনা সংক্রমণ রোধে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেওয়ার আয়োজন করেছে সরকার। আর মাত্র দুদিন পর থেকেই গ্রাম পর্যায়ের সাধারণ মানুষ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে খুব সহজেই টিকা নিতে পারবেন। টিকা নেওয়ার বিষয়ে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছে গ্রামীণ জনপদের বাসিন্দারা।

তবে সার্ভার ডাউন থাকার কারণে অনেকেই ইচ্ছে থাকা পরও আগেভাগেই করতে পারছে না টিকা নেওয়ার রেজিস্ট্রেশন। খুব সহসাই মিলছে না টিকা নেওয়ার কার্ড। এতে করে কিছুটা ভোগান্তি বাড়তে পারে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের। তবে সকল বাঁধা উপেক্ষা করে টিকা নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ।

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর পাশের জেলা মানিকগঞ্জে মোট ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা ৬৫টি। একযোগে সকল ইউনিয়নে টিকা দেওয়ার বিষয়ে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে মরিয়া প্রশাসন। সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের টিকাদান কেন্দ্র থেকে দৈনিক ৩৯ হাজার ব্যক্তিরা এই টিকা নিতে পারবেন।

বৃহস্পতিবার সকালে সিভিল সার্জন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ হলে তারা বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে কাজ করবে তিনটি করে টিম। প্রতিটি টিম দৈনিক ২০০ জন ব্যক্তিকে টিকা দিবেন। এতে করে প্রতিটি ইউনিয়নের ৬০০ জন বাসিন্দা দৈনিক টিকা নিতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন

মানিকগঞ্জে মোট ৬৫টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। সেই হিসেব অনুযায়ী ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিদিন ৩৯ হাজার ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া হবে। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে টিকাদান কর্মসূচি চলবে দুপুর তিন টা পর্যন্ত।

১৮ বছর বয়সী ব্যক্তিদের থেকে টিকা দেওয়া শুরু হবে। তবে বয়স্ক ব্যক্তিরা টিকা গ্রহণে অগ্রাধীকার পাবে। টিকা নেওয়ার জন্য সকলকে জাতীয় পরিচয় পত্র সঙ্গে নিয়ে টিকাদান কেন্দ্রে আসতে হবে। আর ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের কর্মীরা নিবন্ধন সম্পর্কে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করবেন। এরপর দেওয়া হবে করোনা ভ্যাকসিনের টিকা।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জেলার সাটুরিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুনর রশিদ বলেন, টিকা দেওয়ার জন্য প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদে তিনটি করে টিম থাকবে। প্রতিটি টিমের সদস্য সংখ্যা থাকবে ৫ জন। এর মধ্যে টিকাদান কর্মী থাকবে দুই জন। আর স্বেচ্ছাসেবী থাকবে তিন জন।

সরকার কর্তৃক ইউনিয়ন পরিষদে টিকাদান কর্মসূচির পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে গিয়ে টিকা নিতে অনেকেই অনিহা প্রকাশ করেন। সেক্ষেত্রে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে তারা খুব সহজেই টিকা নিতে পারবেন। আর টিকা নেওয়ার বিষয়ে এলাকায় মানুষের মাঝে বেশ উৎসাহ রয়েছে বলে জানান তিনি।

সাটুরিয়া উপজেলার দড়গ্রাম ইউনিয়নের এক সরকারি চাকুরীজীবী বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি সুবাদে শুরুতেই টিকা নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তবে চিন্তায় ছিলেন পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে। এবার সেই চিন্তার অবসান হতে যাচ্ছে। ৭ তারিখ ইউনিয়ন পর্যায় থেকে টিকা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করে কার্ড সংগ্রহ করে রেখেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মাকসুদুর রহমান নামের এক কলেজ ছাত্র বলেন, টিকা নেওয়ার বিষয়ে অবশ্যই সচেতন তিনি। টিকা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত চেষ্টা করেও রেজিস্ট্রেশন করতে পারেননি তিনি। এতে করে কিছুটা হতাশা রয়েছে। সুরক্ষা অ্যাপ সংশ্লিষ্টদেরকে ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

জেলার সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের কর্মী রেজাউল করিম বলেন, টিকা নেওয়ার জন্য অনেকেই তথ্যসেবা কেন্দ্রে আসছে। তবে সার্ভার ডাউন থাকায় কোন কাজ করা যাচ্ছে না। বুধবার সকাল থেকে সমস্যা আরও বেশি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, ৭ জুলাই থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনা ভ্যাকসিন প্রতিরোধে টিকা দেওয়া হবে। সেই উপলক্ষে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। মানিকগঞ্জ জেলায় প্রতিদিন ৩৯ হাজার ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া হবে।

৭ আগস্ট (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত চলবে টিকাদান কর্মসূচি। টিকা দেওয়ার জন্য জেলায় ৩৯০ জন স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৫৮৫ জন স্বেচ্ছাসেবী সরাসরি টিকাদান কাজে কাজ করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।