স্বাস্থ্যমন্ত্রী অসহায়!



শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক

  • Font increase
  • Font Decrease

‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ কথাটি যেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। লকডাউন ঘোষণা আবার লকডাউন তুলে নেওয়া। গার্মেন্টস বন্ধ আবার গার্মেন্টস খোলা। শ্রমিকদের আসতে বলে বাস বন্ধ করা। আবার গণটিকা কার্যক্রম চালু করে বন্ধ।

অন্যদিকে বিভিন্ন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও কর্মকর্তাগণ আগ বাড়িয়ে কথা বলায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার দায়ও তাকে নিতে হচ্ছে। কিছুদিন আগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হক বলেছিলেন, ১১ আগস্টের পর ১৮ বছর ঊর্ধ্বে নাগরিকরা ভ্যাকসিন কার্ড ছাড়া বের হলেই শাস্তি,পরদিন অবশ্য দুঃখ প্রকাশ করে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করেন তিনি।

এসকল বিষয় নিয়ে জবাবদিহি করতে হচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক কে। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সংসদ ভবন অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাগুলো নিয়ে মন্ত্রীর কাছে জবাব চান সংসদীয় কমিটি।

এসময় মন্ত্রী অনেকটা অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন বলে জানা গেছে। মন্ত্রী কমিটির সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে বলেছেন, যা কিছু হয় তার অনেক কিছুই আমি জানি না। আসলে কিভাবে হচ্ছে আমি কিছু বুঝতেছি না। অনেক কিছু আমার কন্ট্রোলের বাইরে, এটা সে স্বীকার করছেন মন্ত্রী।

বৈঠকে মন্ত্রী বলেছেন, অনেক সিদ্ধান্ত হয় যেটা আমি জানি না। গার্মেন্টস খোলার বিষয়ে চোর পুলিশ খেলার মতো অবস্থা তুলে ধরলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোনো জবাব দিতে পারেননি। এসময় সভাপতি বলেছেন, মানুষের যে ভোগান্তি, এই ভোগান্তিতে আমরা সবার কাছে বেইজ্জতি হলাম। মানুষ তো সরকারকে গালি দেয়। এটা নিয়ে আরও সর্তক হওয়ার পরামর্শ দেন সভাপতি।

বৈঠকে সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ই কথা বলবে। এনিয়ে উপস্থিত সকলেই সায় দেন। সভাপতি বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে অন্য কেউ কথা বলবে না। অন্যরা পরামর্শ দিতে পারে কিন্তু অন্যরা মন্ত্রণালয় চালাতে পারে না।’

বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী তো ওনার মন্ত্রণালয় চালাচ্ছেন। কিন্তু মাঝে মাঝে অন্যরা কথা বলায় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবিষয়ে মন্ত্রী একটু অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন।

গত ১০ম বৈঠকের কার্যপত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী দেখা গেছে বৈঠকে উপস্থিত সকল সদস্যই ক্ষুব্ধ ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতি। যদিও গত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী। তাই ১১তম বৈঠকে মন্ত্রীকে পেয়ে পূর্বের কথাগুলো রিপিট করেন সকলে।

কমিটি সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘৫০ ভাগ করে সরকারি ও বেসরকারি ভাবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন আমদানি করার কথা থাকলেও সেখানে সফলতা অর্জিত হয়নি। গোপালগঞ্জ জেলায় সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইডিসিএল থাকা সত্ত্বেও প্রাইভেট সেক্টরে ভ্যাকসিন প্রস্তুত করার কথা চিন্তা করা হচ্ছে কেন? ভ্যাকসিন আসার পূর্বেই ঘোষণা করা হয় যে ৭ কোটি ভ্যাকসিন আসছে এবং পরবর্তীতে দেখা যায় যে সেটা আসেনি এভাবে কিছু অযৌক্তিক তথ্য প্রদানের কারণে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে যা সরকারের জন্য বিব্রতকর।

সভাপতি আরও বলেন, যে সকল মানুষদের ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য রেজিস্ট্রেশন করা হলো তাদের ভ্যাকসিন না দিয়ে গ্রামে গিয়ে গণ টিকা প্রদানের ঘোষণা করা হলো, আবার বলা হয় যে আইডি কার্ড প্রদর্শন করা হলেই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। এটা কেন? তিনি আমদানি অনুযায়ী যত সংখ্যক লোককে টিকা দেওয়া সম্ভব তা সুনির্দিষ্টভাবে দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করার জন্য পরামর্শ দেন।

সভাপতি বলেন, বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হলে করোনা পরিস্থিতির সঠিক চিত্র তুলে ধরা সম্ভব। আগে সংখ্যা নির্ণয় করে করোনা টিকা দেয়ার ঘোষণা সরকারের জন্য বিব্রতকর বলে উল্লেখ করেন তিনি। হাজার হাজার মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন, ভ্যাকসিন সম্পর্কিত এ ধরনের ভুল তথ্য জনগণকে প্রদান না করার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া যারা রেজিস্ট্রেশন করেছে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রদানের পরামর্শ দেন।

কমিটির সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক বলেন, কি পরিমাণ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে সে তথ্যটি গ্রামগঞ্জের মানুষের কাছে যথা সময়ে পৌঁছে না। কোন এলাকায় কত সংখ্যক লোককে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে সে বিষয়টি নিশ্চিত করে মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করার অনুরোধ জানান।এছাড়া সকল প্রকার বিভ্রান্তি দূর করার স্বার্থে দায়িত্বশীল একজন মন্ত্রী বা একজন কর্মকর্তা দ্বারা করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত ব্রিফ করার বিষয়টি নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান।

কমিটি সদস্য ডা. আব্দুল আজিজ বলেন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মর্ডানা গ্রাম অঞ্চলের সিনোফার্মের টিকা কেন দেওয়া হল সে বিষয়টি পরিস্কার ভাবে মানুষকে অবগত না করার কারণে যারা সরকারের বিরোধিতা করছেন তারা মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে শহরের মানুষকে ভাল ভ্যাকসিন দিচ্ছে আর গ্রামের মানুষকে খারাপ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকার দরকার ছিল। তাছাড়া পূর্ব থেকে সংখ্যা নির্ণয় না করেই গণটিকার ঘোষণা প্রদান সরকারের জন্য বিব্রতকর বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন বাচ্চারা ঘরে বসে থাকার কারণে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই মানসিক অবসাদ রোগে ভুগছেন। তিনি দেশের শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ১২ বছর বয়সের স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার সুপারিশ করেন।

মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ের মানুষ ভ্যাকসিন পাচ্ছে না, বিধায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। তিনি করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সঠিক তথ্য নির্দিষ্ট একজন মুখপাত্র মাধ্যমে মিডিয়ায় ব্রিফিং প্রদানের সুপারিশ করেন।

কমিটি সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর বলেন, ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই কতজনকে কত দিনের মধ্যে ভেকসিন প্রদান করা হবে সে বিষয়টি তিনি কমিটিকে অবহিত করার অনুরোধ করেন। এছাড়া বর্তমানে করোনার পরিস্থিতি কি তা জানতে চান। লকডাউন বিভিন্ন নামে নামকরণ করায় মানুষের মাঝে আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য লকডাউনকে একটি বিশেষ নামে অবহিত করার অনুরোধ জানান।

এসব বক্তব্যের জবাবে সেদিন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব (স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ) বলেছিলেন, পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন আমদানির লক্ষে জি-টু-জি পদ্ধতিতে বিশ্বের সকল ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী দেশের সাথে চুক্তি হয়েছে। স্পুটনিক' ভি আমদানির ব্যাপারে রাশিয়ায় চূড়ান্ত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। তাছাড়া দেশে এ পর্যন্ত মোট ৩ কোটি ১০ লাখ ১৫ হাজার ৫১০ ডোজ ভ্যাকসিন আমদানি করা হয়েছে, যার খরচ হয়েছে ২ কোটি ৪ লাখ ৯ হাজার ৯১০ ডোজ। আর এখন হাতে আছে ১ কোটি ১ লাখ ২৫ হাজার ১০ ডোজ। অন্যদিকে বিভিন্ন কোম্পানির নামে যে ভ্যাকসিন আসছে তার গুণগতমানের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই বলে জানান সচিব।

কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম এর সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, আ.ফ.ম. রুহুল হক, মুহিবুর রহমান মানিক, মো. মনসুর রহমান, মো. আব্দুল আজিজ, সৈয়দা জাকিয়া নুর, রাহগির আলমাহি এরশাদ এবং মো. আমিরুল আলম মিলন বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে ‘বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট বিল, ২০২১’ এবং ই.ডি.সি.এল গোপালগঞ্জ শাখা কর্তৃক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরির বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

‘বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট বিল, ২০২১’ প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ জাতীয় সংসদে উত্থাপনের সুপারিশ করা হয়।

   

এলপি গ্যাসের দাম কমলো



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

ভোক্তা পর্যায়ে আরেক দফা কমানো হলো তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম। এ দফায় ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৪২ টাকা থেকে ৪৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৩৯৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) নতুন এ দর ঘোষণা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। যা আজ সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে।

ঘোষণায় জানানো হয়, বেসরকারি এলপিজির রিটেইলার পয়েন্টে ভোক্তা পর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি কেজি ১১৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহকৃত বেসরকারি এলপিজির মূসকসহ মূল্য প্রতি কেজি ১১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া ভোক্তা পর্যায়ে অটো গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৩ টাকা ৯২ পয়সা।

এর আগে এপ্রিল মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৪০ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

;

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার ইচ্ছে নেই: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা ও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার ইচ্ছে নেই। তবে যারা সরকারের উন্নয়নের অপপ্রচার করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। সেই সঙ্গে সরকারের উন্নয়ন কে থামানোর জন্য বিদেশি স্পনসরশীপে অপপ্রচার চালানো হয় বলেও জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজধানীর ধানমন্ডি টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৪ উপলক্ষে 'বর্তমান বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকটের প্রেক্ষাপটে মুক্ত গণমাধ্যম এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা' শীর্ষক আলোচনা সভায় এই অভিমত জানানো হয়। ইউনেস্কো, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এবং আর্টিকেল নাইনটিন-এর যৌথ এই সভার আয়োজন করা হয়।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, বিদেশি সহযোগীতা গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের কিছু জায়গা থেকে সিস্টেমেটিক ডিসইনফরমেশন ক্যাম্পেইন করা হয়।সরকারের উন্নয়ন কে বাঁধাগ্রস্থ করতে এ ধরণের প্রচারণা চালানো হয়। এটা কেনো হয় আমরা জানি। বিদেশী স্পনসরশীপে এটা করা হয় মাঝে মধ্যে। হিল ট্র‍্যাকস, গার্মেন্টস নিয়ে বিভিন্ন ধরণের ষড়যন্ত্র আছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে অনেক মিথ্যাচার হয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় মিথ্যা হচ্ছে ভারত নিয়ে মিথ্যাচার। রিপোর্টিং এর সত্যতা থাকতে হবে, যে কোন ধরণের সমালোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই, তবে মিথ্যাচারকে নয়। সরকারের কার্যক্রম নিয়ে যে কোন সমালোচনা যে কেউ করতে পারে, কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে যখন ধারাবাহিক মিথ্যাচার করা হয় তখন প্রশ্ন ওঠে।

রামপাল নিয়ে মিথ্যাচারকে অশুভ প্রচেষ্টা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় মিথ্যা হলো এটা বলা হয়েছে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভারতে করতে দেওয়া হয়নি, এজন্য বাংলাদেশের পরিবেশের ক্ষতি করে করা হয়েছে। এনটিপিসি যারা আমাদের পার্টনার তাদের কোন ঠেকায় পরেনি যে এখানে প্ল্যান্ট করবে। ভারতের নিজেরই প্রচুর জ্বালানি প্রয়োজন। এখানে এনটিমিসির আসার কোন প্রয়োজন নাই। আমরা নিজের স্বার্থে তাদের এনেছি। এনটিপিসিকে নিজে ৭০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ওর আরও ৭০ হাজার উৎপাদন করার সক্ষমতা আছে। ভারতের এক্সিম ব্যাংক থেকে আমরা বিনিয়োগ এনেছি, এনটিপিসির সঙ্গে পার্টনারশিপ করেছি। যেহেতু তাদের বিনিয়োগ ৫০ শতাংশ, অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশপাশি ৫০ শতাংশ লাভ নেওয়া যাবে। দিন শেষে এটা ব্যবহার করবে এদেশের মানুষ।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে যখন এর অপব্যবহার হয় তখন এটার পরিণাম খুবই ভয়াবহ, এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের প্রসার ও এর স্বাধীনতার জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে। আমার প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আমরা স্বাগত জানাই যারা বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করতে চায়। আমরা শুধু উন্নয়নই করতে চাই না আমরা টেকসই উন্নয়ন করতে চাই, যেটা আমাদের পরিবেশকে সুরক্ষা দিবে। পরিবেশ রক্ষায় সরকারকে যে সহযোগিতা করবে তাকে স্বাগত জানাচ্ছি।

পরিবেশ রক্ষায় কোন প্রতিবেদন করতে গিয়ে কোন সাংবাদিক আক্রমণের স্বীকার হয় তাহলে তাকে সুরক্ষা দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। তবে সেটা যেন সঠিক তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে, ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট, এআই অ্যাক্ট নিয়ে আইন হচ্ছে। কোন আইনের যেনো অপব্যবহার না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, তবে আইনের প্রয়োজনীয়তা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে কেউ যদি এর অপব্যবহার করে সেটা রোধ করতে হবে। আইন যেমন প্রয়োজন ঠিক একইভাবে কোন আইনের যাতে অপব্যবহার না হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে। কোন আইনের অপব্যবহার হলে সকলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। তথ্য অধিকার আইনে যে সকল তথ্য জনগণের জানার অধিকার রয়েছে সে সব তথ্য সরকারি সংস্থাকে দিতে বাধ্য।

অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কোন আইনে অসঙ্গতি থাকে সেগুলো আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সংশোধন করা হবে, সরকারের কোন উদ্দেশ্য নেই আইন দ্বারা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করা।

সভায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবির) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ মোকাবিলায় প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। ক্রমবর্ধমান ভূমি দস্যুতা, উন্ননয়নের নামে জীব বৈচিত্র ধ্বংস করা, নগরায়নের নামে জবর দখল এখন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে। পরিবেশের উপর এমন আগ্রাসনে ক্ষমতাসীনদের একাংশ লাভবান হচ্ছে বিধায় এদের সুরক্ষা দিচ্ছে তারা। এসব নিয়ে যারা কাজ করবে গণমাধ্যমসহ সুশীল সমাজ সেই পরিবেশ দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে। আইনের মধ্যেও দুর্বলতা রয়েছে। যাদের আইন প্রয়োগ করার কথা, জবাবদিহীতা নিশ্চিত করার কথা তাদের ও যোগ সাজোশ রয়েছে। সম্প্রতিক বছরগুলোতে ২৩টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, ৪৩ জন সাংবাদিক হামলা মামলার শিকার হয়েছে এই কাজ করতে গিয়ে। বিভিন্ন সংস্থার ফান্ড বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে, হামলার ঘটনা ঘটেছে, তৃণমূলে দখলটা বেশি এসব এলাকায় ঝুঁকিটা বেশি, যদি আমরা এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে না পারি।

তিনি আরও বলেন, কোনভাবেই মিডিয়া এবং সিভিল সোসাইটির স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা যাবে না। এর জন্য ভয়াবহ পরিণতি হবে। ক্ষমতার অপব্যবহারের সাথে আন্তর্জাতিক যোগসাজসেও পরিবেশ ধ্বংস করা হয়, এর বড় উদাহরণ সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর প্রতিবাদ করায় কিছু পরিবেশবাদী নেতার ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিলো।

ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট ফোরাম এর সভাপতি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বলেন, সাংবাদিকতা সারা বিশ্বেই চ্যালেঞ্জের মুখে। পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকতা একটু বেশি চ্যালেঞ্জিং। বালু মহল, পাহাড় কেটে লেক। এসবের পেছনে অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা জড়িত। তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়। টিভি সাংবাদিকদের দেখার কেউ নাই। ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকরা কোন একটা কাজ করতে গেলে বিপদে পড়লে কেউ পাশে থাকে না।

;

মোহাম্মদপুরে হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার জাকির হোসেন রোডে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয়দের দেওয়া খবরে ঘটনাস্থলে যায় থানা পুলিশ। পরবর্তীতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের বোম ডিসপোজাল ইউনিট গিয়ে গ্রেনেডটি উদ্ধার করে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তোফাজ্জল হোসেন।

তিনি বলেন, মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোড খেলার মাঠের পাশের ড্রেন তৈরির কাজ করার সময় একটি পরিত্যক্ত গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের বোম ডিসপোজাল ইউনিট গিয়ে গ্রেনেড উদ্ধার করে নিস্ক্রিয় করেছে।

তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে গ্রেনেডটি মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত। দীর্ঘদিন মাটির নিচে থাকায় জং ধরে গেছে। সতর্কতার সঙ্গে উদ্ধার হওয়ায় কোনো সমস্যা হয়নি।

;

নলকূপেও পানি মিলছে না ঠাকুরগাঁওয়ের কয়েকটি গ্রামে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশজুড়ে প্রচণ্ড দাবদাহ, নেই বৃষ্টি। পুড়ছে উত্তরের জনপদগুলো। এমন পরিস্থিতিতে ঠাকুরগাঁওয়ে কয়েকটি গ্রামে নেমে গেছে পানির স্তর। এতে অনেক নলকূপে মিলছে না পর্যাপ্ত পানি। ফলে খাবার পানিসহ দৈনন্দিন কাজে পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, জেলার সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের দক্ষিণ ঠাকুরগাঁও গ্রাম ও হরিপুর উপজেলার শাহানাবাদ, হাটপুকুর, খালেকপাড়া গ্রামের টিউবওয়েল গুলোতে পানি উঠছেনা। ক্রমশ বেড়ে চলছে এমন দূর্ভোগ। এতে দৈনন্দিন জীবনের কাজে ব্যত্যয় ঘটছে৷

দুই সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপপ্রবাহে নেমে গেছে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্থর। টিউবওয়েলের পানি ঠিকমতো উঠছে না। পাম্প বসিয়েও পানি মিলছে না। যারা বডিং করে পাম্প বসিয়েছেন, তারা কিছুটা পানি পাচ্ছেন। তাদের বাড়ি থেকে পানি আনতে গেলেও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারা পানি দিতে চাচ্ছেন না। বাড়িতে ব্যবহৃত কাপড়, থালাবাসন ধোয়া ও রান্নাবান্না করতে যে পানি দরকার তা মিলছে না। দীর্ঘ সময় পর একটু পানি উঠলেই কিছু সময়ের মধ্যে আবার তা শেষ হয়ে যায়।

শাহানাবাদ গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, এমনিতে গরমে জীবন অতিষ্ঠ। তারপর আবার টিউবওয়েল গুলোতে পানি পাওয়া যাচ্ছেনা। অনেকক্ষণ ধরে পানি দিয়ে পানি উঠানোর চেষ্টা করলেও পাওয়া যায়না। হঠাৎ করে অল্প পানি উঠলে আবার নাই হয়ে যায়। এ

রফিকুল ইসলাম বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের প্রায় সময়ে ওযু করার জন্য পানির প্রয়োজন হয়। কয়েকদিন থেকে টিউবওয়েল গুলোতে পর্যাপ্ত পানি মিলছে না। এতে সবারই অনেক রকম সমস্যা হচ্ছে। যদিও এটি এখন চলমান জাতীয় সমস্যা। আমরা আবদার করছি যাতে স্থানীয় ভাবে এটি সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ঠাকুরগাঁওয়ের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী পরিচালক শামীম আনোয়ার বলেন, সারাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে এ জেলায় কয়েকটি জায়গায় এমন চিত্র দেখা দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে এটির সমাধান করা যায়।

;