দেশের দরিদ্রতম উপজেলা রাজীবপুর



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের সবচেয়ে গরিব জেলা কুড়িগ্রাম। আর উপজেলা ভিত্তিতে কুড়িগ্রামের রাজীবপুর এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যছড়ি এবং আলীকদম দেশের সবচেয়ে দরিদ্রপ্রবণ উপজেলা।

সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এর করা এক সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর ‘এক্সট্রিম পোভার্টি দ্য চ্যালেঞ্জেস অব ইনক্লুশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের হিসেব অনুযায়ী দেশে দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএসের) ২০১৬ সালের জরিপে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল একই। পরবর্তী বছর গুলোতে দারিদ্র্যের হার কমতে থাকলেও করোনাভাইরাস সংক্রমণ এর ফলে দারিদ্র্যের হার বেড়ে আগের অবস্থানে ফিরেছে।

প্রতিবেদনে প্রকাশ অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে, অতি দরিদ্র মানুষের হার সবচেয়ে বেশি কুড়িগ্রাম জেলায়। এই জেলার ৫৩ দশমিক ৯ বা প্রায় ৫৪ শতাংশ মানুষ অতি দরিদ্র। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বান্দরবান জেলা এখানকার ৫০ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ অতি দরিদ্র।

রংপুর অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাস বার্তা২৪.কমের কাছে বর্ণনা করছিলেন কলামিস্ট নাহিদ হাসান নলেজ।

তিনি বলেন, মোগল আমলে উত্তরবঙ্গ ছিল দেশের অর্থনীতির মূল মেরুদণ্ড। সারা বাংলা থেকে যা খাজনা আদায় করা হতো তার প্রায় অর্ধেকের বেশি আয় হতো রংপুর অঞ্চল থেকে।হিমালয় পাহাড়ের পাদদেশে এবং সবচেয়ে সমতলভূমি হওয়ায় এই এলাকার মাটি ছিল খুব উর্বর। পাট, ধান এবং তামাকের চাষে এ অঞ্চলের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে বছরের খোরাক জোগাড় করতো। কিছু উদ্বৃত্ত থাকতো। কিন্তু দেশে যখন কৃষি থেকে শিল্প বিপ্লবের দিকে এগিয়েছে তখন থেকে গুরুত্ব হারাতে শুরু করে এ অঞ্চল। পরবর্তীতে আর গুরুত্ব পায়নি কখনোই। দেশের সব অঞ্চলের জন্য সমানভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা হয়নি। এখনও এসব অঞ্চলে শিল্পায়নের বিশেষ কোন উদ্যোগ নেই তাই দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত এখানকার জনজীবন।

বাংলাদশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর ২০১৬ সালের জরিপ অনুযায়ী কুড়িগ্রাম জেলায় দারিদ্র্যের হার ছিল ৭০.৮ শতাংশ। জেলার ৯ টি উপজেলা ভিত্তিক দারিদ্র্যের হার ছিল রাজীবপুরে ৭৯.৮, রৌমারী ৭৬.৪,চিলমারী ৭৩.৫,উলিপুর ৭০.৮, রাজারহাট ৭০.১, কুড়িগ্রাম সদর ৭২.৬, ফুলবাড়ি ৬৯.০, নাগেশ্বরী ৭২.৭ এবং ভূরুঙ্গামারীতে ৭১.৯ শতাংশ।

একই জরিপে বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দারিদ্র্যের হার ছিলো ৭৭.৮, নাইক্ষ্যংছড়িতে ৬৫.৮ এবং আলীকদম উপজেলায় ৬৯.১ শতাংশ।

এক্সট্রিম পোভার্টি দ্য চ্যালেঞ্জেস অব ইনক্লুশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে আরও জানা গেছে, নদ নদীময় কুড়িগ্রাম জেলায় গুরুতর অসুস্থায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় সংখ্যা ৫৭ শতাংশ। ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ৬০ শতাংশ, যা জাতীয় পর্যায়ে মাত্র ৮ শতাংশ। দিনমজুর শ্রমিক সংখ্যা এই জেলায় ৩৭ দশমিক ২ শতাংশ, যা জাতীয় পর্যায়ে ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে যুক্ত রয়েছেন জেলার ১৩ শতাংশ মানুষ, যা জাতীয় পর্যায়ে ৩৫ শতাংশ। নারীপ্রধান পরিবার গুলোতে অতি দরিদ্রের হার ১৬ দশমিক ৭০ শতাংশ, যা জাতীয় পর্যায়ে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ।

এই জেলায় দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাওয়ার অন্যতম স্থায়ী কারণ নদী ভাঙন। প্রতিবছর প্রায় ৫৫ হাজার পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে দারিদ্রতার কবলে পড়েন।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, কুড়িগ্রাম জেলা পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ কর্মসংস্থানের অভাব। দারিদ্র্যপ্রবণ এ জেলায় বছরের সব সময় মানুষের হাতে কাজ থাকে না। আর যেসময় কাজ থাকে, তখন ন্যায্য মজুরিও পান না অনেক সময়। সরকার যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি আছে সেখানেও অনিয়ম হয়।প্রাকৃতিক দুর্যোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যগত সমস্যাও তাদের এই জনপদের মানুষের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ।

কর্মসংস্থানের অভাব এবং স্থানীয় চাহিদা ও সম্ভাবনা বিবেচনায় কার্যকরী উদ্যোগ না নেওয়ায় দারিদ্র্যের কবল থেকে বের হতে পারছে না বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

২০১৬ সালে বিবিএস এর খানা আয়-ব্যয় জরিপ প্রথমবারের মতো জেলাওয়ারি দারিদ্র্যের জরিপ করা হয়। জরিপে দেখা যায়, দেশের মোট দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশে। কিন্তু কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, মাগুরা, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার অর্ধেকের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন।

ওই জরিপ করার দীর্ঘ ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এই জেলায় জরিপে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে সমস্যা দূর করার লক্ষে দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় হতাশা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, সরকারি জরিপ করা তথ্য নিয়ে যদি কোন কর্ম পরিকল্পনা তৈরি না করে তাহলে এই জরিপের কার্যকারীতা কি।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, সামাজিক সুরক্ষা খাতে দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের বেশ কিছু কর্মসূচি আছে। কিন্তু এ কর্মসূচির লক্ষ্য নির্ধারণে কিছুটা সমস্যা আছে। অনেক জায়গায় এলাকা চিহ্নিত করার কাজটি ঠিকভাবে হয়নি। অতিদরিদ্র এলাকাগুলোতে যে পরিমাণে সামাজিক সহায়তা পৌঁছানোর কথা ছিল তাও পৌঁছায়নি। আবার দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকায় যে পরিমাণ সহায়তা যাচ্ছে তা গরিব জনগোষ্ঠীর মধ্যে সঠিকভাবে বণ্টন হচ্ছে না। নগদ টাকা ও খাদ্য সহায়তা বিতরণে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম রয়েছে। শুধু সামাজিক সুরক্ষার ওপর ভিত্তি করে টেকসই দারিদ্র্য বিমোচন হবে না। স্থানীয় পর্যায়ে বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে শ্রম এবং আয় বাড়াতে হবে।

রাজীবপুর উপজেলার রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সদস্য সচিব শিপন আহমেদ বলেন, কুড়িগ্রামের ভৌগোলিক অবস্থান এই দারিদ্র্যের অন্যতম কারণ। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, সোনাভরি, জিঞ্জিরাম সহ ১৬টি নদী এ জেলার উপর দিয়ে চারপাশে জুড়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা ও নদীভাঙন এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে বড় বাধা। এ থেকে জনগণকে রক্ষার বিশেষ বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, এই অঞ্চলের রাজনৈতিক নেতারা দরিদ্র মানুষগুলোকে শুধু ভোটের সময়ই মনে করে! স্থায়ী ভাবে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকরি পদক্ষেপ এবং শিল্পকারখানা অথবা ইপিজেড নির্মাণ করে স্থায়ী কর্মসংস্থানের উদ্যোগ না নিলে এই অঞ্চলের দারিদ্রতা দূর করা সম্ভব হবে না।

   

সাবেক এমপি বদির বিরুদ্ধে ফাঁকা গুলি ছোড়ার অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী ও টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম জমায়েতের সামনে গিয়ে সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির ফাঁকা গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (০২ মে) রাতে টেকনাফের হোয়াইক্ষং পশ্চিম মহেশখালীয়া পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নুরুল আলম চেয়ারম্যান বলেন, আমার আজ কম্বোনিয়া পাড়া, হোয়াইক্ষ্যং পশ্চিম মহেশখালীয়া পাড়ায় মুরুব্বি ও মেম্বারদের সঙ্গে একটি আলোচনা সভা ছিল। সেখানে হঠাৎ সাবেক এমপি বদি ও জাফর চেয়ারম্যানসহ ২০-৩০ জন লোক আমাদের পাশে এসে ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে।

আব্দুর রহমান বদি নিজেই তার পিস্তল দিয়ে গুলি করেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম। তিনি বলেন, আমি এখন বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করতে যাচ্ছি।

এই বিষয়ে জানতে সাবেক এমপি বদির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে যার সঙ্গে থেকে আব্দুর রহমান বদি গুলি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে সেই প্রার্থী জাফর আলমের সাথে কথা হয় মোবাইল ফোনে। তিনি জানান, বদি ভাই আমার সাথে ছিলো। এ ধরণের কিছু হয়নি। তার (নুরুল আলম) ভাই নুরুল বশর জাতীয় নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকে বদি ভাইয়ের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন। এটিও এমন একটি কুৎসা বলে জানান জাফর আলম।

;

আটোয়ারীতে নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পঞ্চগড়
নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের প্রচারণাকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে পাল্টা-পাল্টি হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (১ মে) জেলার আটোয়ারী উপজেলার ধামোর হাটে এ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধায় একই বাজারে পাশাপাশি অবস্থিত মোটরসাইকেল মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদুল ইসলাম ও ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আনিছুর রহমানের নির্বাচনী ক্যাম্পে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এর পর আবারও বৃহস্পতিবার রাতে বিরোধে জড়ান তারা।

মোটরসাইকেল মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে নিজেদের ক্যাম্পে অগ্নি সংযোগ করেছে তারা। এর আগে আমার কর্মী-সমর্থকেরা প্রচারণা মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় তারা তাদের গতিরোধ করে হামলা ও মারধর করে। এর মাঝে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদের ক্যাম্পে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। একই সাথে তারা আমাদের ক্যাম্পে এসে হামলা ও মারধর করে।

ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আনিছুর রহমান বলেন, ধামোর ইউনিয়নে প্রায় ৯০ শতাংশ লোক আমার সমর্থক। আমার প্রতিপক্ষ মোটরসাইকেল, তারা বেশ কয়েকদিন ধরে সেখানে ঢুকার চেষ্টা করছে। বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে নিয়ে গিয়ে আমাদের ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এলাকার মানুষ ও সাধারণ ভোটার তাদের ঘেরাও করে আটক করে রাখে। বিষয়টি জানতে পেরে প্রশাসনকে অবগত করি। প্রশাসন ঘটনাস্থলে গেলে তারা একটি আপোষনামা দিলে সকলেই চলে যায়। আমরা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে কোন অভিযোগ দায়ের করিনি।

আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, ঘটনা জানার পরেই ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে পুলিশসহ সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। উভয় পক্ষে এ ঘটনায় কোন মামলা করবে না বলে সহকারী রিটার্টিং অফিসার বরাবর একটি আবেদন দাখিল করে। এসময় সবাইকে সতর্ক করা হয়।

;

কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড লামা, শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবা‌ন
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা তীব্র তাপপ্রবাহের পর স্বস্তির বৃষ্টির আগমন আনন্দের সংবাদ হলেও তা মুহূর্তেই ম্লান হয়েছে কালবৈশাখীর ঝড়ে। গতকাল বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার (০২ মে) হঠাৎ বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়েছে বান্দরবানের লামা উপজেলার পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক বাড়িঘর।

হতাহতের কোন সংবাদ পাওয়া না গেলেও কিছু গবাদিপশুর প্রাণহানি ঘটেছে। রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বৈদ্যভিটা এলাকায় বজ্রপাতে এক কৃষকের ৫টি ছাগল এবং পূর্ব শিলেরতুয়া এলাকায় রমজান আলী মেম্বারের খামারে ঘরচাপা পড়ে এটি ছাগল মারা গেছে।

এছাড়া, গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বৈদ্যুতিক খুঁটিতে গাছ পড়ে সঞ্চালন লাইন ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ভেঙে গিয়েছে ৩০টির অধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি। সেই সাথে তীব্র ঝড়ের কারণে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পার্বত্য বান্দরবান জেলার সবচেয়ে জনবহুল শহর লামা।

এই প্রতিবেদনে লেখা পর্যন্ত এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু হয়নি। বিদ্যুৎ সচল হতে আরও দুই-একদিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছে পিডিবি লামার আবাসিক প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন।

লামা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সকালে গাছ পড়ে চকরিয়া- লামা- আলিকদম সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাছ কেটে রাস্তা থেকে সড়িয়ে যোগাযোগ স্বাভাবিক করে।

লামা উপজেলার রূপসী পাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাচিং প্রু মারমা জানান, কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে সড়কে গাছ পড়ে লামা উপজেলার সাথে রূপসীপাাড়া ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই সাথে মানুষের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষেত খামারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। যাদের বসতবাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে তাদের ইউনিয়ন পরিষদ হতে সহায়তা করা হবে বলে জানান তিনি।

লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, আমার ইউনিয়নে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে দেড়-শতাধিক বাড়িঘর ভেঙে গেছে। গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা জানান, তার ইউনিয়নে ছোটবড় শতাধিক ঘর আংশিক ভেঙে গেছে।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ মাহবুবুর রহমান জানান, জেলা পরিষদ ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করে সহায়তা প্রদান করা হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করছি। তালিকা লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সুপারিশ নিয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে। বরাদ্দ পেলে ক্ষতি বিবেচনা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে কয়েকটি বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দিলে সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা করা হবে।

;

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে স্মার্টফোন ও বাইক নিয়ে প্রবেশ নিষেধ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে স্মার্টফোন ও মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়।

বৃহস্পতিবার (২ মে) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

নোটিশে উল্লেখ কর হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাস), স্নাতকোত্তর (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সার্বিক কল্যাণ ও কলেজের শৃঙ্খলার স্বার্থে জানানো যাচ্ছে যে, কলেজ ক্যাম্পাসে মোটরবাইক এবং শ্রেণিকক্ষে স্মার্টফোন ফোন নিয়ে কোনোভাবেই প্রবেশ করা যাবে না। কলেজ ক্যাম্পাসে মোটরবাইক নিয়ে প্রবেশ করা এবং স্মার্টফোন ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিষেধ। সেজন্য কোনো শিক্ষার্থী কলেজ ক্যাম্পাসে মোটরবাইক নিয়ে প্রবেশ করলে এবং শ্রেণিকক্ষে কারো কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নোটিশে শিক্ষার্থীদেরকে নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিধান করে কলেজে আসতে বলা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রেণিকক্ষে সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার অধিক মাত্রায় বেড়ে যায়। এতে তারা অমনযোগী থাকে। কখনো কখনো অতিমাত্রায় ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে একাধিকবার মৌখিক নির্দেশনা দেয় কর্তৃপক্ষ। এমনকি অভিযান চালিয়ে মোবাইল ফোনও জব্দ করে। কিন্তু এতেও কোনো কাজ হচ্ছিলো না। এছাড়া কলেজে অনেকে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশ করে পরিবেশ নষ্ট করে বিধায় এতেও মৌখিক নিষেধাজ্ঞা ছিলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, মোবাইল ফোনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে শিক্ষার্থীদেরকে রক্ষা করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাস একেবারেই ছোট হওয়ায় মোটরসাইকেলের চলাচল শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটে।

;