বেশি স্থায়িত্ব ছিল প্রথম ঢেউ, তীব্র দ্বিতীয় ঢেউ
বর্তমানে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে। এই তিন ঢেউয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্থায়িত্ব ছিল প্রথম ঢেউ। তবে তীব্র ছিল দ্বিতীয় ঢেউ। করোনার ডেল্টা ধরনের কারণে দ্বিতীয় ঢেউয়ে মানুষের সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছে। এ সময় রোগী ও মৃত্যু দুটোই বেশি ছিল। তবে সবচেয়ে কম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে চলমান তৃতীয় ঢেউয়ে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দেশে প্রথম ঢেউ ছিল ২০২০ সালের মার্চ থেকে সে বছরের অক্টোবর পর্যন্ত। দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয় গত বছর ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে। সংক্রমণ বাড়তে থাকে মার্চে। চূড়ায় ওঠে ৯ এপ্রিল। সেদিন শনাক্ত হার ছিল ২৪ শতাংশ। এরপর ১৬ এপ্রিল থেকে সংক্রমণ আবার নামতে থাকে। সেদিন শনাক্ত হার ছিল ২৩ শতাংশ। এরপর দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকে ২৫ মে থেকে। সেদিন শনাক্ত হার ছিল ১০ শতাংশ। দ্বিতীয় ঢেউয়ের দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ চূড়ায় ওঠে ৮ জুলাই। সেদিন শনাক্ত হার ছিল ৩২ শতাংশ।
চলমান তৃতীয় ঢেউ শুরু হয় এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে। সেদিন শনাক্ত হার ছিল ২ শতাংশ। এরপর প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়তে বাড়তে দুই সপ্তাহ পর ১৪ জানুয়ারি এক লাফে শনাক্ত হার বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ শতাংশে। পরে সংক্রমণ চূড়ায় ওঠে ২৮ জানুয়ারি। সেদিন শনাক্ত হার হয় ৩৩ শতাংশ। এর পরদিন থেকেই সংক্রমণ কমতে থাকে এবং গতকাল পর্যন্ত সংক্রমণ নিম্নমুখী ছিল।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, এখন দেশে করোনার কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা সামাজিক সংক্রমণ নেই। এখন ক্লাস্টার ট্রান্সমিশন বা গুচ্ছ গুচ্ছ সংক্রমণ। এখন কমতির দিকে। যদি আর নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট না আসে, পুরনো ভ্যারিয়েন্টই চলে, তাহলে অন্তত তিন মাস সংক্রমণ বাড়বে না, কমতির দিকেই থাকবে- এমনটা বলা যায়। কিন্তু নতুন ভ্যারিয়েন্ট এলে তখন পরিস্থিতির আবার অবনতি হতে পারে।
তিনি বলেন, সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। প্রতিষ্ঠানগুলোর বিধিনিষেধ শিথিল করা উচিত নয়। ঢোকার সময় সাবান দিয়ে হাত ধোয়া উচিত। সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। ব্যাংক, পরিবহন, রেস্টুরেন্ট, হোটেল, কমিউনিটি সেন্টার সব সেবাকেন্দ্রে দূরত্ব বজায় রেখে সেবা নিতে হবে। পলিটিক্যাল পার্টিগুলো জমায়েত করছে। তারা দূরত্ব রাখছে না। মাস্ক খুলে স্লোগান দিচ্ছে। স্লোগানের মাধ্যমেই তো মুখ থেকে ড্রপলেট ছড়ায়। সম্মেলন সমাবেশ শোভাযাত্রা করছে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই। এগুলো বিপজ্জনক।