রমনার বটমূলে চলছে নববর্ষ বরণে প্রস্তুতি
‘এসো হে বৈশাখ’প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ কড়া নাড়ছে বাঙালির দরজায়। পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে আসছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। উৎসব আর আনন্দ নিয়ে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটিকে বরণ করবে বাঙালিরা।
বৈশাখ বরণে ইতোমধ্যে সর্বত্র চলছে প্রস্তুতি। রাজধানীর রমনা বটমূলে প্রতি বছরের মতো এবারেও গান, কবিতা ও নানা আয়োজনে নববর্ষকে বরণ করবে ছায়ানট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে। থাকবে শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নানা আয়োজন।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে রমনা পার্কে দেখা গেছে বৈশাখ বরণে ছায়ানট শিল্পীদের ব্যস্ততা। হারমোনিয়ামের সুর আর তবলার তালে নিজেদের প্রস্তুত করছেন এসো হে বৈশাখ গানে। ‘স্বাভাবিকতা ও পরস্পরের প্রতি সম্প্রীতির সাধনা’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এখন চলছে মঞ্চ তৈরিসহ চূড়ান্ত প্রস্তুতি। রমনা পার্ক প্রাঙ্গণে টানা হয়েছে অনুষ্ঠানস্থলের সীমারেখা। সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও।
ছায়ানট ও চারুকলা অনুষদ সূত্রে জানা গেছে, বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে সকাল ৯টা থেকে। তৈরি করা হচ্ছে মুখোশ, পুতুল, চাকাসহ দেশি ঐতিহ্যের বিভিন্ন প্রতীক। শিক্ষার্থীরা রংতুলি, কাগজ, বাঁশ, বেত, চাটাই নিয়ে কাজ করছেন। শনিবার দুপুরে মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য ৪০ জন শিল্পীর আঁকা পোস্টার নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী হবে চারুকলা অনুষদে। কাঠামোর পাশাপাশি এবার মুখোশ, বড় মুখোশ, গাজীর পটের দুটি চিত্র বাঙালি সংস্কৃতির অংশ হিসেবে থাকবে। এবারের শোভাযাত্রায় মোটিফ ও কালারের মাধ্যমে বৈচিত্র্য আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা জানান, পহেলা বৈশাখের আগে মঞ্চে শিল্পীরা চূড়ান্ত মহড়ার অংশ নিচ্ছে। অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য সব ব্যবস্থা নেবে ডিএমপি।
মঙ্গল শোভাযাত্রার আহ্বায়ক সাদিত সাদমান বলেন, বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে সকাল ৯টা থেকে। এখন চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। মঙ্গল শোভাযাত্রার পোস্টার তৈরির জন্য যে কর্মশালা আয়োজিত হয়েছিল, তা থেকে ৪০ জন শিল্পীর আঁকা পোস্টার নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী হবে শনিবার দুপুরে। রংতুলি, কাগজ, বাঁশ, বেত, চাটাই নিয়ে ভাগে ভাগে কাজ করছে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে পহেলাবৈশাখ উদযাপনের সুনির্দিষ্ট কোন হামলার শঙ্কা নেই জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন,পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতিসত্তার অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রকাশ। এ কারণে বার বার এ আয়োজনে আঘাত হানা হয়েছে, জঙ্গি হামলা হয়েছে। তাই সবকিছু মাথায় রেখেই আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোন হামলার শঙ্কা নেই। পহেলা বৈশাখের সব আয়োজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ছায়ানটের অনুষ্ঠানকে নির্বিঘ্ন করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রমনা পার্কে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। এ ছাড়া আশপাশের ভবনের সিসি ক্যামেরাগুলোও মনিটরিং করা হবে।