যশোরে একলাখ নিষিদ্ধ আফ্রিকান মাগুর জব্দ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পোনা পরিবহনকারীকে জরিমানা করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পোনা পরিবহনকারীকে জরিমানা করা হয়।

  • Font increase
  • Font Decrease

যশোরে এক লাখ নিষিদ্ধ আফ্রিকান মাগুর জব্দসহ পোনা পরিবহনকারীকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

সোমবার (০১ জুলাই) দুপুর ১২টায় রাজার হাট বাজার হতে সিনিয়র মৎস্য অফিসার রিপন কুমার ঘোষের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থানে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান উপস্থিত হয়ে মৎস্য সুরক্ষা আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পোনা পরিবহনকারীকে ৩ হাজার টাকা জরিমানাসহ আফ্রিকান মাগুরের পোনা রোটেনন প্রয়োগে ধ্বংস করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কোতোয়ালী থানার এসআই।

সিনিয়র মৎস্য অফিসার রিপন কুমার ঘোষ বলেন, যশোর জেলার সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের জয়ন্তা গ্রাম থেকে আফ্রিকান মাগুরের পোনা পরিবহন করে। এ সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজারহাটে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ১ লাখ আফ্রিকান মাগুরের পোনা জব্দ করা হয়। এ পোনা ২'শ কেজি মত হবে।মাছের পোনা পরিবহনকারীকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করে পোনাগুলো রোটেনন প্রয়োগে ধ্বংস করা হয়েছে। এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

কোটা ব্যবস্থা বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন বাধাগ্রস্থ করছে: জিএম কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য চাকরি লাভে বিশেষ বড় অংকের কোটায় চিরস্থায়ী বন্ধবস্ত করা হয়েছে। যা স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য বৈষম্যমুক্ত ন্যায়বিচার ভিক্তিক সমাজ গঠন বাধাগ্রস্থ করে বলে মনে করি।

বুধবার (৩ জুলাই) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

জিএম কাদের বলেন, একথা যেন আমরা ভূুলে না যাই যে, এ দেশের মানুষ বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম আন্দোলনে জয়লাভের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে ও যে কোনো পর্যায় যেতে প্রস্তুত থাকে। স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের মূল অর্জন সংবিধান, সেখানে সুযোগ সুবিধাদির ক্ষেত্রে সাম্যের কথা বলা হয়েছে। আমাদের শহীদ মিনার বৈষম্য থেকে মুক্তি সংগ্রামের আত্মত্যাগের প্রতীক। আমাদের জাতীয় স্মৃতিশৌধ বৈষম্যহীন ন্যায় বিচারভিক্তিক নিজস্ব দেশে গঠনে অঙ্গীকারের প্রতীক।

কোটা পদ্ধতি নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণি, দ্বিতীয় শ্রেণি, তৃতীয় শ্রেণি এবং চতুর্থ শ্রেণিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ কোটি ছিল। এরমধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতী গোষ্ঠির মানুষদের জন্য এবং এক শতাংশ প্রতিবন্ধিদের জন্য সংরক্ষিত কোটা। বাকি ৪৪ শতাংশ মেধায় নিয়োগ দেওয়া হতো। ২০১৮ সালে ছাত্রদের দাবি ছিল সরকারি চাকরিতে ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি থেকে শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১ম ও ২য় শ্রেণির নিয়োগের ক্ষেত্রে সকল কোটা পদ্ধতি বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে পূর্বের ন্যায় কোটা পদ্ধতি বহাল থাকে।

বিরোধী দলীয় নেতা জিএম কাদের বলেন, ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করে। গত ৫ জুন রিটের রায় প্রকাশ করে আদালত। সেখানে জনপ্রশাসন কর্তৃক পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত অংশটির বাতিলকে অবৈধ ঘোষণা করেন। ফলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে চকরি প্রত্যাশি ও সাধারণ শক্ষার্থীরা সরকারের জারি করা সেই পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে পূনরায় মাঠে নামছে। যা নতুন সংকট সৃষ্টি করছে।

পুরান ঢাকার ৩৩নং ওয়ার্ডে মিরনজিল্লাহ হরিজন সুইপার কলোনী উচ্ছেদ প্রচেষ্টার কঠোর সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, হরিজনদের উচ্ছেদ করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকে কিছু ঘর-বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অন্য বাড়িগুলো ভাঙার সময় বাচ্চারা রাস্তায় শুয়ে পড়েছিল। তখনই তাদের হুমকি দেওয়া হয় পরবর্তীতে আরো ঘর-বাড়ি ভেঙে দেওয়ার হবে। সিটি কর্পোরেশনে যারা চাকরি করে তাদের চাকুরিচ্যুত করা হবে।

তিনি বলেন, এই উচ্ছেদের উদ্দেশ্য হলো, সেখানে মার্কেট করা। বৃটিশ আমল থেকে বসবাসরত এই পরিবার গুলোকে পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ খুবই অমানবিক। এ মুহুর্তে মার্কেট তৈরির উদ্দেশ্যে অবহেলিত, অসহায়, অস্পৃশ্য পরিবারগুলোকে তাদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করলে তা শুধু সরকারকে নয়, জাতিকে কলংকিত করবে। তাদেরকে পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ বন্ধ এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘রিপোর্ট অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ এর ২০২৩ সালের প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, এখনও সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ হয়নি। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিপিড়নে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মুসলিম জনগোষ্ঠির ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠির সদস্যদের ব্যবহার করে হয়রানি করা হচ্ছে। নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

;

জামালপুরে বাড়ছে নদীর পানি, বন্ধ হচ্ছে যোগাযোগ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, জামালপুর
ব্রীজের পাশের মাটি সরে দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন/ছবি: বার্তা২৪.কম

ব্রীজের পাশের মাটি সরে দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে জামালপুরের বিভিন্ন নদ নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৯১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ।

বুধবার (৩ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আজ সন্ধ্যার দিকে পানির স্রোতে দেওয়ানগঞ্জ থেকে খোলাবাড়ি যাওয়ার প্রধান সড়কের ব্রীজের পাশের মাটি সরে যায়। এতে দুইপাশের যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, নিচু এলাকা।

অপর দিকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ রক্ষা বাঁধ না থাকায় ইসলামপুরের চিনাডুলী ও পার্থশী ইউনিয়নের ২০টি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে।

এছাড়া পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাট, আখসহ ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে জানান, বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের জামালপুরের জামথল ঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আরও তিন থেকে চারদিন পানি বৃদ্ধি হতে পারে বলেও জানান তিনি।

;

থানা হাজতে আসামির ঝুলন্ত মরদেহ, তদন্তে কমিটি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
থানা হাজত

থানা হাজত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানা হাজত থেকে মো. জুয়েল (২৬) নামের এক আসামির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে নগর পুলিশের (সিএমপি) উত্তর বিভাগ এ কমিটি গঠন করে।

কমিটির সদস্যরা হলেন- সিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) মো. জাহাঙ্গীর, সহকারী কমিশনার (পাঁচলাইশ) আরিফ হোসেন ও পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) মো. মোখলেসুর রহমান।

তিনি বলেন, এই ঘটনায় থানা পুলিশের দায়িত্বের কোনো অবহেলা হয়েছে কিনা-সেটা তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এর আগে, বুধবার ভোরে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানা হাজতের দেয়ালের ভেন্টিলেটরের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় আসামি জুয়েলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, জুয়েলের বিরুদ্ধে ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। তার বাসা নগরীর চান্দগাঁওয়ের খেজুরতলা এলাকায়।

চান্দগাঁও থানার ভরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা এলাকা থেকে পরোয়ানামূলে জুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে হাজতে রাখা হয়েছিল। সকালে তার লাশ পাওয়া যায়।

ওসি আরও বলেন, হাজতখানার ভেতরে ভেন্টিলেটরের সঙ্গে নিজের পরনের শার্ট ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেন জুয়েল। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে জুয়েলের মৃত্যুর খবর পেয়ে থানায় ছুটে যান তার মা মিনারা বেগম ও বড় বোন সালমা আক্তার। সেখানে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সালমা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, তিন দিন আগে তার ভাই বাসার বাথরুমে পরনের বেল্ট ঝুলিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, তাদের কারণে পারেননি।

তিনি বলেন, আমার ভাই আগে খারাপ ছিল। ভালো হওয়ার চেষ্টা করছিল। কিস্তিতে তাকে একটি অটোরিকশা কিনে দিয়েছিল মা। ভাই চালায়নি। ভাড়ায় আরেকটি গাড়ি চালাচ্ছিল। মা ও ভাইয়ের কাছে ৬০ হাজার টাকার বেশি পেত পাওনাদাররা।

;

‘সফট লোন না পেলে অনিশ্চয়তায় পড়বে জাহাজভাঙা শিল্প’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
আন্তর্জাতিক সম্মেলন

আন্তর্জাতিক সম্মেলন

  • Font increase
  • Font Decrease

হংকং কনভেনশন অনুসারে ২০২৫ সালের মধ্যেই জাহাজভাঙা শিল্পের সবকটি শিপ ইয়ার্ডকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে গ্রিন ইয়ার্ডে রূপান্তর করতে হবে। এই কনভেনশন অনুসারে গ্রিন শিপ ইয়ার্ড ব্যতিত কোনো ইয়ার্ড ইউরোপ বা উন্নত দেশ থেকে পুরাতন স্ক্রাপ জাহাজ আমদানি ও কাটার সুযোগ নেই। কিন্তু দেশের সবকটি ইয়ার্ড গ্রিন ইয়ার্ডে রূপান্তরে বড় অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। মূলত অর্থের সংকুলান না হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জাহাজভাঙা শিল্পের আধুনিকায়নে সফট লোন (সহজ শর্তে ঋণ) দেওয়ার দাবি এসেছে।

বুধবার (৩ জুলাই) থেকে চট্টগ্রামে শুরু হওয়া দুইদিনের জাহাজভাঙা শিল্পের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রথমদিন জাহাজভাঙা শিল্পের মালিকেরা এই দাবি জানিয়েছেন। সম্মেলনে সফট লোনের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় জাহাজ কাটার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

প্রথমদিন নগরীর পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে দিনভর চলে এক সামিট। সামিটে সফট লোন দেওয়া না হলে এই শিল্প অনিশ্চয়তায় পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন জাহাজভাঙা শিল্প মালিকেরা।

ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটি ফর শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রি অব বাংলাদেশ শীর্ষক এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন যৌথভাবে আয়োজন করছে শিল্প মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থা (আইএমও), নরওয়ে দূতাবাস এবং বিএসবিআরএ। মূলত সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক, দেশি, বিদেশি বিনিয়োগকারী ও অর্থদাতা সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই জাহাজভাঙা শিল্প মালিকদের সংগঠন বিএসবিআরএ-এর অনুরোধে এই সামিট আয়োজন করা হচ্ছে।

সম্মেলনের প্রথমদিন ৫টি রাউন্ড টেবিল সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এই সেশনগুলো হলো, শিপ রিসাইক্লি: এনভায়রনমেন্টাল কেইস, বাংলাদেশ: ১০ বছরে শিপ রিসাইক্লিং শিল্পের অগ্রগতি, প্রত্যাশিত বাজার ও মুনাফা, হিউম্যান এলিমেন্ট, সাপোটিং ইন্ডাস্ট্রি ডেভলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ, ওভারভিউ অব ইন্ডাস্ট্রি ডেভলপমেন্ট চ্যালেঞ্জেস, ডিসকাসিং ফিন্যান্সিয়াল সল্যুশান।

সম্মেলনে অনলাইনে অংশে নেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা। আরও অংশ নেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, আইএমও-এর কর্মকর্তা জন আলনসো, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহ মো. হেলাল উদ্দিন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন, ক্লাস এনকে এর গ্রিন সার্টিফিকেশন বিভাগের তাকোশি নারোশি, আইএমও এর প্রতিনিধি জন এলনচো, আইআইইউসির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম আজিজ, জাহাজভাঙা শিল্পের পরামর্শক ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহবুবুর রহমান, বিএসবিআরএ-এর সভাপতি আবু তাহের, সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম রিংকু, গ্রিন শিপ ইয়ার্ড স্বীকৃতি পাওয়া কে আর শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ডের কর্ণধার মো. তসলিম উদ্দিনসহ এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক, জাইকা, আইএমও, আইএলও ও বিভিন্ন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) প্রতিনিধিরা।

জাহাজভাঙা শিল্পকে দেশের সম্ভাবনাময় খাত উল্লেখ করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা এই শিল্পকে ঝুঁকিমুক্ত এবং পরিবেশবান্ধব করতে অর্থায়নের জন্য উন্নয়ন অংশীদারদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের জাহাজভাঙা শিল্পে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন। তিনি বলেন, নরওয়ে এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করছে। সরকারেরও সহযোগিতা দরকার। আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। নরওয়ের জাহাজ মালিকরা বাংলাদেশে রিসাইক্লিং করতে আগ্রহী।

বিএসবিআরএ-এর সহসভাপতি ও পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জহিরুল ইসলাম রিংকু বলেন, জাহাজভাঙা শিল্প খাত থেকে প্রতি বছর আয় হয় প্রায় ৭৭০ মিলিয়ন ডলার। সরকারের রাজস্ব আয় হয় প্রায় ১১০ মিলিয়ন ডলার। এ শিল্পে প্রত্যক্ষভাবে ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার মানুষ কাজ করেন। পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ফলে দেশের সামগ্রিক টেকসই উন্নয়নে এ শিল্প ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে।

বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স রিসাইক্লিং অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ) সূত্রে জানা গেছে, ইয়ার্ডগুলোকে কমপ্লায়েন্ট হিসেবে উন্নীত করার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় ১০৮টি ইয়ার্ডের শিপ রিসাইকিং ফ্যাসিলিটি প্ল্যান (এসআরএফপি) অনুমোদন দিয়েছে। দেখা যায়, প্রতিটি ছোট আকারের ইয়ার্ডে এসআরএফপি বাস্তবায়ন করার জন্য প্রায় ৩০ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকা, মাঝারি আকারের ইয়ার্ডের জন্য ৪০ কোটি থেকে ৭০ কোটি টাকা এবং বড় আকারের ইয়ার্ডের জন্য ৮০ কোটি থেকে ১১০ কোটি টাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত চারটি ইয়ার্ড গ্রিন হয়েছে। এগুলো হলো পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ, কবির স্টিল, এস.এন করপোরেশন (ইউনিট-২) এবং কে আর শিপ রিসাইকিং ইয়ার্ড। অর্থ সংকটের কারণে বাকি ইয়ার্ড মালিকদের পক্ষে গ্রিন ইয়ার্ডে উন্নীত করা সম্ভব হচ্ছে না।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন চট্টগ্রামের জাহাজাভাঙা শিল্পের বিভিন্ন ইয়ার্ড পরিদর্শন করবেন অতিথিরা।

;