মৎস্য খামারের আড়ালে জঙ্গি প্রশিক্ষণ, গ্রেফতার নারী সদস্য



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
‘আনসার আল ইসলাম’র সক্রিয় সদস্য পারভীন আক্তার

‘আনসার আল ইসলাম’র সক্রিয় সদস্য পারভীন আক্তার

  • Font increase
  • Font Decrease

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’র সক্রিয় পারভীন আক্তার (২৪) নামের এক নারী সদস্যকে গ্রেফতার করেছে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)।

এটিইউ জানায়, গ্রেফতার পারভীন মৎস্য খামারের আড়ালে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে আসা সদস্যদের বসবাসের সুযোগ তৈরি করা, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় রান্নাবান্নাসহ প্রশিক্ষণের জন্য আসা নারী প্রশিক্ষণার্থীদের সার্বিক বিষয় সমন্বয় করতেন।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে এটিইউয়ের মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পুলিশ সুপার ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল এ তথ্য জানান।

গ্রেফতার পারভীন কক্সবাজার সদরের পূর্ব হামজার ডেল গ্রামের বাসিন্দা। তার কাছে থেকে উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

মাহফুজুল আলম রাসেল বলেন, গত মাসের ৯ জুন নেত্রকোনা মডেল থানাধীন বাসাপাড়া গ্রামের স্থানীয় একটি খামারবাড়ি ভাড়া নিয়ে মৎস্য খামার পরিচালনার আড়ালে আনসার আল ইসলাম’র একটি বড় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খোঁজ পায় পুলিশ। এরপর এটিইউয়ের বোম্ব ডিসপোজাল ও সোয়াট টিমসহ নেত্রকোনা জেলা পুলিশ যৌথভাবে ওই স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগসজিন ও তাজা গুলি, দূরুবীন, কম্পাস, ওয়াকিটকি সেট, হাতকড়া, ল্যাপটপ, এসএসডি, মোবাইল ফোন, পিকআপ গাড়িসহ মোট ৮৬ ধরণের উগ্রবাদী প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদান ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে।

তিনি বলেন, প্রায় ৩ বছর আগে এজাহারভুক্ত আসামি মো. হামিম হোসেন ওরফে ফাহিম ওরফে আনোয়ার আহমেদ ওরফে শাহজালাল ওরফে আরিফ (৩২) ২.৫ একর জায়গায় অবস্থিত একটি খামার বাড়ি ৫ বছরের জন্য ভাড়া নেন। হামিম হোসেন ওরফে ফাহিম এবং তার স্ত্রী এজাহারভুক্ত আসামি উম্মে হাফসা (২৫), গ্রেফতার পারভীন আক্তার ও তার স্বামী রশিদ আহম্মদ (সাংগঠনিক নাম তানভীর) মৎস্য খামারের দোতলা পাকা বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে বসবাস করতেন। হামিম হোসেন ওরফে ফাহিম ৫ জুন অস্ত্রগুলিসহ নরসিংদীর রায়পুরা থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর গ্রেফতার পারভীন আক্তার আত্মগোপন চলে যান।

মাহফুজুল আলম রাসেল বলেন, গ্রেফতার পারভীন আক্তারসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা মৎস্য চাষের আড়ালে নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলাম’র সদস্যপদ গ্রহণ কার্যক্রম করছিল। ভাড়া করা খামার বাড়িটিকে আনসার আল ইসলাম’র প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন তারা। নিজস্ব যানবাহন ব্যবহার করে সর্বোচ্চ গোপনীয়তার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগঠনের জন্য সদস্য সংগ্রহ করে প্রশিক্ষণ প্রদানের কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন চক্রটি।

তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে খামার বাড়িটিতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম স্থাপন এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গুলি, বিস্ফোরক দ্রব্য, দাহ্য পদার্থ ইত্যাদি অবৈধভাবে সংগ্রহ করে জমা রাখেন। গ্রেফতার পারভীন আক্তার তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে আনসার আল ইসলাম’র প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগৃহীত সমর্থকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছাড়াও ওই কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে আসা সদস্যদের বসবাসের সুযোগ তৈরি করা, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় রান্নাবান্না করাসহ প্রশিক্ষণের জন্য আসা নারী প্রশিক্ষণার্থীদের সার্বিক বিষয় সমন্বয় করতেন।

মৃত্যুর আগেই চল্লিশা, ৫ শতাধিক গ্রামবাসীকে খাওয়ালেন মারফত আলী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
বৃদ্ধ মারফত আলী (৭০)/ছবি: সংগৃহীত

বৃদ্ধ মারফত আলী (৭০)/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রাম-বাংলার রীতি অনুযায়ী কেউ মারা গেলে চল্লিশ দিন পরে চল্লিশা মেজবানীর আয়োজন করে জানাজায় শরীক হওয়া মুসল্লি, দরিদ্র অসহায় ও আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত করে খাওয়ার ব্যবস্থা করে। এতে মৃত ব্যক্তির আত্মা শান্তি পায় বলে জনশ্রুতি আছে। কিন্তু এর ব্যতিক্রম ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর ইউনিয়নে। ওই গ্রামের বৃদ্ধ মারফত আলী (৭০) জীবিত অবস্থাতেই গ্রামবাসী ও আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত করে চল্লিশার আয়োজন করেন। এমন ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে বড়হিত ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মারফত আলী ওই এলাকার মৃত উসন আলীর ছেলে।

এর আগে গত সোমবার (১ জুলাই) উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর গ্রামে বৃদ্ধ মারফত আলী মারা যাওয়ার আগেই অগ্রিম চল্লিশার আয়োজন করে প্রায় ৫ শতাধিক গ্রামবাসীকে গরু-খাসি ছাড়াও পায়েশ খাইয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, মারফত আলী দুই বিয়ে করে বেশ সুখেই দিন কাটাচ্ছেন। দুই সংসারে রয়েছে ৩ মেয়ে ও ৬ ছেলে। এলাকায় বিত্তশালী কৃষক হিসাবে ব্যাপক পরিচিত তিনি। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেরা কেউ বিয়ে করে আলাদা আবার কেউবা লেখাপড়া করছেন।

যার যার মতোই ব্যস্ত থাকে। এ অবস্থায় মারফত আলী চিন্তাভাবনা করছেন নিজের জমিজমা ভাগ বাটোয়ারা করে দিয়ে দেবেন। এরপর অপেক্ষা পরপারে চলে যাওয়ার। এর মধ্যে মাথায় আসে তিনি মারা গেলে সন্তানরা যদি চল্লিশা না করে। এই জন্য তিনি নিজ সিদ্ধান্ত নিজের চল্লিশা জীবিত অবস্থাতেই করে যেতে মনস্থির করেন।

 মারফত আলীর দাওয়াতে এসেছেন গ্রামবাসী।

পরে ঘটনাটি নিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বললে তাদের সম্মতিতেই আয়োজন করেন মেজবানি বা চল্লিশার। এই জন্য তিনি বেশ কয়েকদিন সময় নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে লোকজনকে দাওয়াত দেন। গত সোমবার দুপুরের পর থেকেই বাড়ির ভেতরে ডেকোরেটর দিয়ে ত্রিফল টানিয়ে বাবুর্চি দিয়ে রান্না-বান্না করে খাওয়ানো হয় কমপক্ষে ৫ শতাধিক নারী-পুরুষকে।

মারফত আলী জানান, বর্তমানে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন। নামাজ ছাড়া এখন তেমন কোনো কাজকর্ম করেন না। চল্লিশার জন্য এক লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গরু, ২০ হাজার টাকার খাসি, মুরগি ছাড়াও রয়েছে পায়েশ। পায়ে হেঁটে গ্রামের সব বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত দিয়েছি। আমার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সবাই চল্লিশায় অংশগ্রহণ করেছে। এখন আমি মরেও শান্তি পাব।

দাওয়াত খেতে আসা আব্দুল কদ্দুস বলেন, এই রকম দাওয়াতে তারা অনেক দিন পর গেছেন। তবে, জীবিত ব্যক্তি নিজের চল্লিশার আয়োজন করেছেন তা ব্যতিক্রম ঘটনা। তৃপ্তি সহকারে আমরা খেয়েছি।

রশীদ মিয়া নামে একজন বলেন, আগত সবার জন্য তৃপ্তি সহকারে খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন মারফত আলী। আল্লাহ তার মনভাসনা পুর্ণ করুক।

মারফত আলীর ছেলে সুজন বলেন, বাবার ইচ্ছা তিনি জীবিত থেকেই এই মেজবানী বা চল্লিশা করবেন। তাই আমাদেরও সম্মতি ছিল।

মেয়ে রেনুয়ারা বলেন, বাবার একটা সন্দেহ দূর করতেই এই আয়োজনে সবার সম্মতি ছিল। এতে তাদেরও ভালো লাগছে।

মারফত আলী জানান, মহান আল্লাহ তাআলা আমাকে অনেক সুখে শান্তিতে রেখেছেন। মালিক আমাকে যে পরিমাণ ধনসম্পদ দিয়েছেন তাতে আমি সন্তুষ্ট। আমার দুই সংসারে ছয় সন্তান রয়েছে। কিন্তু আমার মৃত্যুর পর সন্তানেরা যে গ্রামের মানুষকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াবে তার কোনো নিশ্চয়তা আছে? তাই আমি জীবিত থাকতে এই আয়োজন করেছি।

স্থানীয় মসজিদের ইমাম মওলানা আবুল কাশেম জানান, মারা যাওয়ার পর চল্লিশার আয়োজন এভাবে করার কোনো নিয়ম নেই। গরিব ও অসহায়দের আপ্যায়ন করা যেতে পারে। কিন্তু জীবিত থেকে ব্যাপক দাওয়াত দিয়ে যে কাণ্ড মারফত আলী করেছেন তা সম্পূর্ণ ইসলাম পরিপন্থী।

;

এডিসের লার্ভা পাওয়ায় স্কয়ার হাসপাতালসহ ৯ স্থাপনাকে জরিমানা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
স্কয়ার হাসপাতালের নির্মাণাধীন ভবনে অভিযান

স্কয়ার হাসপাতালের নির্মাণাধীন ভবনে অভিযান

  • Font increase
  • Font Decrease

এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় স্কয়ার হাসপাতালসহ ৯টি স্থাপনাকে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) ভ্রাম্যমাণ আদালত। ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ ও এডিস মশার প্রজননস্থল নিধনে করপোরেশন পরিচালিত ৭টি ভ্রাম্যমাণ আদালত এই জরিমানা করে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) করপোরেশনের কামরাঙ্গীরচর, পান্থপথ, নারিন্দা, স্বামীবাগ, করাতিয়া রোড, সারুলিয়া, ডেমরা, রানীমহল, নন্দিপাড়া এম ব্লক, বনশ্রী, খিঁলগাও এলাকায় এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এক নম্বর অঞ্চলে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পান্থপথ এলাকায় অবস্থিত স্কয়ার হাসপাতালের জন্য নির্মাণাধীন একটি ভবনের ৪র্থ তলার বেজমেন্টে মশার লার্ভা পাওয়ায় করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ টি এম মোর্শেদ হাসপাতালের প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। স্কয়ার হাসপাতালের নির্মাণাধীন ভবনটি ইউনিয়ন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজিস লিমিটেড কর্তৃক নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও অঞ্চল-১ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও ৪৪টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন।

তিন নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তায়েব-উর-রহমান আশিক ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের কামরাঙ্গীরচরের নূরবাগ এলাকায় ৫৮টি বাসাবাড়ি ও ৬ কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেন। আদালত এ সময় তৈজসপত্র প্রস্তুতকারী ১টি কারখানায় ৬টি পাত্রে মশার লার্ভা পাওয়ায় ১টি মামলায় ১ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করেন।

চার নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের ইমামগঞ্জ আশপাশ এলাকায় ১১০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করে ২টি বাড়িতে লার্ভা পাওয়ায় ২ মামলায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

পাঁচ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমির হামজা ০৫ ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের নারিন্দা, স্বামিবাগ, করাতিয়া রোড এলাকায় ৮৫টি বাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করে ৩টি স্থাপনায় লার্ভা পাওয়ায় ৩ মামলায় ৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

ছয় নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমান ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দিপাড়া এম ব্লক, বনশ্রী, খিঁলগাও এলাকায় ৪৮টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করে ১টি বাড়িতে লার্ভা পাওয়ায় ১ মামলায় ২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

আট নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পংকজ চন্দ্র দেবনাথ ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের সারুলিয়া, ডেমরা, রানীমহল এলাকায় ৪৬টি বাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করে কোন লার্ভা পাওয়া যায় নি।

নয় নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ শামসুল আরেফীন ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাতুয়াইল, শরিফপাড়া, যাত্রাবাড়ীর এলাকায় ৬০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করে ৯টি বাসা বাড়ি ও স্থাপনায় লার্ভা পাওয়ায় ১ টি মামলায় ৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

বৃহস্পতিবারের অভিযানে সর্বমোট ৪৫৮টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়েছে। এ সময় ৯টি বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ৯টি মামলায় সর্বমোট ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

;

পানির তোড়ে ভেঙে পড়ল সড়ক, দুর্ভোগে ২ জেলার বাসিন্দা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
পানির তোড়ে ভেঙে পড়ল সড়ক

পানির তোড়ে ভেঙে পড়ল সড়ক

  • Font increase
  • Font Decrease

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণ আর পানির তোড়ে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের সঙ্গে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে দুই জেলার বাসিন্দারা।

বন্যার পানির স্রোতে বুধবার (৩ জুলাই) রাত ৮টার দিকে দেওয়ানগঞ্জের কাঠারবিল বাজার এলাকায় নির্মাণাধীন মহারাণী ব্রিজের এপ্রোচ (বিকল্প সড়ক) সড়ক ভেঙে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর ও রৌমারী উপজেলার যোগাযোগের প্রধান সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী রাজিবপুর উপজেলার ছাড়াও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার উত্তরে ৪টি ইউনিয়নের মানুষ যাতায়াত করে থাকে। এছাড়াও সড়কটিতে যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, মিনিবাস, পিকআপ, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ শত শত ছোট বড় যানবাহন চলাচল করে।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেলে গিয়ে দেখা গেছে, ব্যস্ততম সড়কটি ভাঙনের ফলে রাজিবপুর-দেওয়ানগঞ্জ-জামালপুরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে ২ জেলার বাসিন্দা

স্থানীয় ব্যবসায়ী লালন মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় আমাদের খুবই কষ্ট হচ্ছে। দোকানের জন্য দুই লাখ টাকার মাল (পণ্য) অর্ডার ছিলো সেটা ফেরত নিয়ে গেছে। এতে ডিলারের গাড়িভাড়া ও আমার লোকসান হয়েছে।

হাতিভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থেকে সানন্দবাড়ী-রাজিবপুর সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিজের বিকল্প রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় উপজেলার ডাংধরা, চর আমখাওয়া, পাররামরামপুর, হাতিভাঙা ইউনিয়নসহ রাজিবপুরবাসী চলাচলে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী তোফায়েল আহাম্মেদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

;

পাঁচ বছরেও কার্যক্রম শুরু হয়নি ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চলের



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থান/ছবি: বার্তা২৪.কম

ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থান/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভিত্তি স্থাপনের পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজীবপুর ও উচাখিলা ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে বিশাল চরাঞ্চলে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রস্তাবনা ছিল।

জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলে অর্থনৈতিক অঞ্চলটির অবস্থান হলেও ব্রহ্মপুত্র নদটি ত্রিশাল উপজেলা সীমানায় থাকায় এর কিছু অংশ ত্রিশাল সীমানায় রয়েছে। আর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে ত্রিশাল উপজেলা হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে যেতে সহজ যাতায়ত এবং ঢাকার সাথে অন্তত ৩০কিলোমিটার দূরত্ব কমে আসবে। এর ফলে দুই উপজেলার মানুষ অর্থনৈতিক অঞ্চলটিকে ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু তা বাস্তবায়নে অগ্রগতি না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা হতাশ হচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিনিয়োগ আকর্ষণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে ২০১৬ সালের এপ্রিলে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) নতুন করে ৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান চূড়ান্ত করে। এর মধ্যে সরকারিভাবে পাঁচটি ও বেসরকারি উদ্যোগে বাকি চারটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। এই ৯টির একটি ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল, যেটি সরকারি উদ্যোগে নেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর ময়মনসিংহের সার্কিট হাউস ময়দানে আয়োজিত এক জনসভায় যোগ দেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০৩টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে ময়মনিসংহ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নামফলক উদ্ধোধন করেছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ২০১৬ সালের ১৬ মে ৪৮৭ দশমিক ৭৭ একর জমি নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। এর মধ্যে ৪৫৪ দশমিক ৮৪ একর বন্দোবস্ত ও ৩২ দশমিক ৯৩ একর অধিগ্রহণ করার কথা। ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট ভূমি মন্ত্রণালয় বেজার অনুকূলে সেই জমি বন্দোবস্ত করে দিতে ও প্রয়োজনী কিছু তথ্য চেয়ে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয়। একই মাসে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটির স্থান পরিদর্শন করে।

তারা কিছু জমি ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়ে যাওয়ায় নতুন করে প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশ দেয়। পরে ওই বছরের ২৪ অক্টোবর ৪৯২ দশমিক ৩৬ একর জমি নিয়ে নতুন করে প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধিশাখা-২ থেকে ২০২০ সালের ১ মার্চ পাঠানো এক চিঠিতে জানানো হয়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চররামমোহন মৌজায় ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত বিভিন্ন দাগের ৪২৩ দশমিক ৬১ একর খাস জমি ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হলেও প্রস্তাবিত জমি নিয়ে মামলা চলছে। তাই বন্দোবস্ত দেওয়ার আইনগত সুযোগ নেই।

পরে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নতুন একটি চিঠি দেওয়া হয়। তাতে মামলার কারণে জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার সুযোগ না থাকায় ২০০ একর জমি নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়। সে অনুযায়ী ২০২২ সালের ৫ জুন তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিকল্প হিসেবে ২০০ একর জমির প্রস্তাব জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেন। তারপর অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্বাচিত স্থানে ব্র‏হ্মপুত্র নদ খনন করে বালু ফেলে উঁচু করা হয়েছে। এর বাইরে দৃশ্যমান আর কোনো অগ্রগতি নেই। বর্তমানে এখানে কোনো কার্যক্রম নেই।

উচাখিলা গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, এখানে ইপিজেড হলে ব্রহ্মপুত্র নদের দুই পারের মানুষের জীবন পাল্টে যেত। মানুষের কর্মসংস্থান হলে বেকারত্ব কমতো এবং জীবনমান আরো উন্নত হতো। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন চাচ্ছি।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাইল হোসাইন বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ২শ একর জমির বন্দোবস্তের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী অধিগ্রহণ করতে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। মন্ত্রণালয় থেকে নিদের্শনা আসলে আমরা সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব।

ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি শংকর সাহা বলেন, ‘অর্থনৈতিক অঞ্চলটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। আমরা বার বার এই অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের জন্য চেম্বারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করেছি। কিন্তু অগ্রগতি হয়নি। এটি বাস্তবায়ন হলে শিল্পায়নের পাশাপাশি বহু মানুষের কর্মসংস্থান হতো। অর্থনৈতিকভাবে ময়মনসিংহ জেলার গুরুত্ব আরো বাড়তো। আমরা চাই দ্রুত এটি বাস্তবায়ন হোক।

ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুয়েল আহমেদ জানান, ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে নতুন কোনো তথ্য নেই। এখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে ত্রিশাল থেকে ঈশ্বরগঞ্জ যোগাযোগ সহজ হবে। এখানকার মানুষের জীবন মান উন্নত হবে।

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে নতুন কোনো অগ্রগতি নেই। জায়গাটি মাটি ভরাট করে রাখা আছে। নতুন কোনো নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

;