স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিস চালু করল ডিএনসিসি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

স্কুলের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও পরিবেশ রক্ষায় স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিস চালু করল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।

বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর বনানী বিদ্যা নিকেতন স্কুল এন্ড কলেজে ডিএনসিসি স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিস এর শুভ উদ্বোধন করেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রায়ই দেখা যায় আট থেকে দশজন শিক্ষার্থী ভ্যানে করে স্কুলে যাওয়া-আসা করে। অনেক স্কুলে মাইক্রোবাসে করেও যাওয়া আসা করতে দেখা যায়। এই ধরনের ভ্যান ও মাইক্রোবাসগুলো অনেকটা অনিরাপদ। ঝুঁকি নিয়ে আমাদের বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য ডিএনসিসি স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছি। পরীক্ষামূলকভাবে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল এন্ড কলেজে তিনটি বাস দিয়ে এটি শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য স্কুলগুলোতে এই স্কুল বাস সার্ভিস চালু করা হবে। স্কুল বাস সার্ভিস শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখবে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষায় যে বিনিয়োগ করছেন, তার সঙ্গে সিটি কর্পোরেশন যোগ হলে তখন ভিন্নমাত্রা পায়। এই স্কুল বাস সার্ভিস চালু করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন যুগান্তকারী অধ্যায় শুরু করেছে। আমরা অনুরোধ করবো বাস সার্ভিসটি শুধু স্কুল ভিত্তিক না করে, এলাকা ভিত্তিক কোনো রুট পরিচালিত করা যায় কিনা। প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে বাস দেয়া কতটা সম্ভব হবে জানিনা। তবে বাস শেয়ারিংটা যেন হয়, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। আশপাশের স্কুলের শিক্ষার্থীরা বাস সার্ভিসের সুবিধা পেলে সিটি কর্পোরেশনের কষ্ট সার্থক হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুধু সরকারি ও আধা সরকারি স্কুল নয়, বরং যে বিদ্যালয় বেশি নিজস্ব গাড়িতে চড়ে শিক্ষার্থীরা আসে সেই স্কুলগুলোকে মার্ক করতে হবে। গাড়ির বাস্তব ব্যবহার বোঝাতে হবে। গাড়ি যে কোনো ধরনের হতে হবে। পয়সা থাকেলই দামি গাড়িতে করে বাচ্চাদের স্কুলে আনতে হবে এমন মনোভাব থেকে অভিভাবকের বেরিয়ে আসতে হবে। স্কুলের পথ পায়েহাঁটা হলে হেঁটেই স্কুল আসার অভ্যাস করাতে হবে বাচ্চাদের। সন্তানকে যেভাবে গড়া হবে তারা তেমনি বেড়ে উঠবে। তাই আমাদের সন্তানদের ভোগবাদী মানসিকতা থেকে দূরে রাখতে হবে।

সভাপতির বক্তৃতায় ডিএনসিসি মেয়র জানান, সন্তানরাই বাবা-মায়ের সব থেকে মূল্যবান সম্পদ। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। স্মার্ট স্কুল বাসগুলোয় সিসি ক্যামেরাসহ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। অ্যাপসের মাধ্যমে ট্র্যাকিং ব্যবস্থাও থাকবে। একটি হটলাইন নম্বরের মাধ্যমে অভিভাবকেরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করতে পারবেন। প্রতিটি বাসে নিবেদিত ট্রিপ ম্যানেজার থাকবে। পরীক্ষামূলক চালু করেছি। প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মেয়র বলেন, প্রাথমিকভাবে ডিএনসিসির স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিসে বিদ্যা নিকেতন স্কুলের ৪৬০ জন শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে। স্কুলটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে আগামী জানুয়ারিতে তিন হাজার শিক্ষার্থী স্কুল বাস সার্ভিসের আওতায় আসবে। এজন্য ২০টি বাস প্রয়োজন হবে। যেখানে অনেকগুলো যানবাহনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যাওয়া আসা করতো সেখানে ২০টি বাসের মাধ্যমে সার্ভিসটি দেওয়া সম্ভব হবে। এর ফলে যানজট নিরসনের পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণ কম হবে, পরিবেশ দূষণ কমবে। অন্যান্য স্কুলগুলোকেও আমন্ত্রণ জানাবো এই বাস সার্ভিসের সুবিধার আওতায় আসার। আমারা নলেজ শেয়ারিং প্রোগ্রামে লন্ডনে গিয়েছিলাম, সেখানে দেখে এসেছি কিভাবে এই সার্ভিসটি চলছে আমরাও প্রক্রিয়াটিও সেভাবে করতে চাই। অভিভাবকদের সহায়তা চাই। কোনো সমস্যা সামনে আসলে সেটাও সমাধান করা হবে।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে এই স্কুল বাস সার্ভিস চালুর জন্য কাজ করতে হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বনানী এলাকায় তীব্র যানজট লেগেই থাকে। আমরা প্রাথমিকভাবে বনানী এলাকায় তাই সার্ভিসটি শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছি। কয়েকটি স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাধিকবার মিটিং করেছি। স্কুল বাসের সুবিধা সম্পর্কে বুঝিয়েছি। বিদ্যা নিকেতন স্কুলে কার্যক্রমটি শুরু করতে পেরেছি। ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলসহ অন্যান্য সকল সরকারি বেসরকারি স্কুলকে আহ্বান করছি বাস সার্ভিসের আওতায় আসার জন্য। স্কুলগুলোর প্রতি শিক্ষামন্ত্রীও এই বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য শবনম জাহান শিলা, হাছিনা বারী চৌধুরী ও খালেদা বাহার বিউটি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান ডিএনসিসির কাউন্সিলরবৃন্দ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

সিলেটে দুই নৌকা থেকে ভারতীয় ২৬৫ বস্তা চিনি উদ্ধার, আটক ১



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনি।

উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনি।

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের গোয়াইনঘাটে পুলিশের অভিযানে চিনি বোঝাই ২টি নৌকা থেকে ২৬৫ বস্তা চিনিসহ এক চোরাকারবারিকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার (০৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জাফলং ইউনিয়নের অন্তর্গত উত্তর প্রতাপপুর এলাকা থেকে চিনি উদ্ধার ও তাকে আটক করা হয়। 

আটককৃত আবুল হায়াত (৩০) পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের লুনি হাওর গ্রামের আব্দুল ওয়াহিদের ছেলে।

শুক্রবার রাতে গোয়াইনঘাট পুলিশ জানায়, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশনায় একটি আভিযানিক টিম উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের উত্তর প্রতাপপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে পলাতক আসামিদের ফেলে যাওয়া ২টি নৌকাসহ ২৬৫ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার এবং আবুল হায়াতকে আটক করা হয়। উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনির মূল্য ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। 

এদিকে এ ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে আটককৃত আবুল হায়াতকে প্রধান আসামি করে ও ৫ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা রুজু করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম পিপিএম।

;

নিরাপত্তাকর্মীকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা, আত্মগোপনে ফ্ল্যাট মালিক মফিদুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় গাড়িচাপা দিয়ে নিরাপত্তাকর্মী মো. ফজলুল হককে (২৫) হত্যার পর গাঁ ঢাকা দিয়েছে ঘাতক গাড়ি চালক ও ফ্ল্যাট মালিক ইঞ্জিনিয়ার মফিদুল ইসলাম (৬৯)।

গত বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) সকালে এ ঘটনার পর রাতে মফিদুলকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী। এরপর শুক্রবার (০৫ জুলাই) পর্যন্ত একাধিক অভিযান চালালেও তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেট ভেঙে ফজলুলকে চাপা দেয় মফিদুল। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, কোন কারণে জিদ থেকে বা পরিকল্পনা করে এই হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

মামলার এজাহারে নিহতের স্ত্রী শরীফা বেগম দাবি করেন, ঢাকায় সেফ ফোর্স সিকিউরিটি কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন ফজলুল। এক মাস আগেই এই ভবনে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিয়োগ পান। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে তার ডিউটি ছিল। এসময় সকাল সোয়া ৮টার দিকে আসামি মফিদুল গ্যারেজ থেকে বের হওয়ার সময় দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে ফজলুলকে ধাক্কা দিলে গেট ভেঙ্গে রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে সে। এসময় মফিদুল তার গাড়িটি ফজলুলের শরীরের উপর উঠিয়ে দেয়। এসময় তার কোমর ভেঙ্গে যায়, কপাল, ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটাসহ গুরুতর জখম হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন। এর মধ্যে গাড়ির মালিক মফিদুল তার গাড়িটি রেখেই পালিয়ে যান।

তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে শরিফা বেগম বলেন, আমার দুইটা মেয়ে। বড় মেয়ের বয়স ৫ বছর আর ছোট মেয়ের বয়স ১৬ মাস। আমার মেয়ে দুটো এতিম হয়ে গেলো। আমি এখন এদের নিয়ে কীভাবে থাকবো। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।

নিহতের বোন মিনারা বেগম বলেন, ঘটনার পর পুরো বিষয়টি ম্যানেজের চেষ্টা করছে রাজাবাজারের স্থানীয় বড় ভাই পরিচয় দেওয়া চুন্নু ও শাহজাহান নামে দুই লোক। কয়েক দফায় কাউন্সিলরের অফিসে তাদের বুঝানো হয়েছে মীমাংসার জন্য। 

তিনি বলেন, আমাদের সাথে মীমাংসার কথা বলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে মফিদুল ইসলামের গাড়ির চালক বলছেন, গাড়ির ব্রেকপ্যাড ক্ষয় হয়ে গিয়েছিল। স্যার সেটা চেক করতে গাড়িতে উঠে পা দিয়ে একসেলেটর চাপ দেন, এরপর গাড়ি চলতে শুরু করলে তিনি হয়তো থামাতে গিয়ে ব্রেকে পা না দিয়ে ভুলে একসেলেটরে আরও জোরে চাপ দেন। এতে গাড়ি মুহূর্তের মধ্যে গেট ভেঙে বাইরে গিয়ে ধাক্কা খায়।

এ ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেট ভেঙে ফজলুলকে চাপা দেয় আসামি মফিদুল। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। আমরা তাকে গ্রেফতারের জন্য কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছি। খুব দ্রুতই আসামিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

;

নরসিংদীতে নিখোঁজের একদিন পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
নিহত শিশু আয়েশা/ছবি: সংগৃহীত

নিহত শিশু আয়েশা/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নরসিংদীর মনোহরদীতে আয়েশা আক্তার নামে দেড় বছরের এক শিশু নিখোঁজের একদিনপর ধান ক্ষেত থেকে তার মরদেহ পাওয়া গেছে। 

শুক্রবার (০৫ জুলাই) বেলা এগারটার দিকে মনোহরদী পৌরসভার হাররদীয়া এলাকায় ধান ক্ষেত থেকে শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শিশু আয়েশা মনোহরদী পৌরসভার হাররদিয়া গ্রামের আসাদ মিয়ার মেয়ে। 

শিশুর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) সকাল ৯টার পর থেকে নিখোঁজ হয় শিশু আয়েশা। অনেক খোঁজাখুঁজি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ পোস্ট দেওয়ার পরও নিহত আয়েশাকে না পেয়ে চিন্তায় পড়ে যায় পরিবারের লোকজন। 

পরে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বাড়ির পাশে বৃষ্টির পানি জমে থাকা ধানের জমিতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশি। পরে শিশুটির পরিবারের লোকজন এসে মরদেহটি শনাক্ত করে এবং মনোহরদী থানায় খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করে। 

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া বার্তা২৪.কমকে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে।

;

সাপের খামারে রিমালের তাণ্ডব, ২৫০ সাপের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে পুরো পটুয়াখালী। বাদ যায়নি বাংলাদেশ স্নেক`স ভেনাম (Bangladesh snakes venom) নামের দেশের প্রথম বিষধর সাপের খামারটিও। রিমালের তাণ্ডবে খামারের প্রায় ২৫০টি বিষধর সাপের মৃত্যু হয়েছে।

তবে খামারটির সরকারি অনুমোদন না থাকায় বনবিভাগ তথা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতার সুযোগ নেই। আব্দুল রাজ্জাক বিশ্বাস নামের এক তরুণ দেশসেরা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ২০০০ সালে পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের নন্দিপাড়া গ্রামে তার নিজ বাড়ির পাশে একটি কিং কোবরা সাপ এবং ২৪টি ডিম নিয়ে গড়ে তোলেন দেশের প্রথম বিষধর সাপের খামার। পরিকল্পনা ছিল সরকারি অনুমোদন পেলে সাপের বিষ সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে হবেন দেশ সেরা উদ্যোক্তা। কিন্তু সেই রাজ্জাক বিশ্বাসের স্বপ্ন এখন অধরাই রয়ে গেল।

বর্তমানে দেশীয় নামে পরিচিত কিংকোবরা, পাইথন, পঙ্খীরাজ, কালকুলিন, সাদা গোমা, কেউটে, দাঁড়াশ, বাসুয়া, পদ্ম গোমা, বিষঝুড়ি ও গোঁড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দের শতাধিক বিষধর সাপ রয়েছে রাজ্জাক বিশ্বাসের খামারে।

নন্দিপাড়া গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, রাজ্জাক বিশ্বাস ভাই ২৩ থেকে ২৪ বছর পর্যন্ত এর সাপের খামার লইয়া কষ্ট করতে আছে। এই বইন্নায় আমাগো এলাকায় কোমর পর্যন্ত পানি উঠছিল, আর এই পানিতে ভাইর কয়েক'শ সাপ মারা গেছে। ভাই তার বাপ মায় মরণেও এতো কষ্ট পায় নাই, এই সাপগুলা মরণের কারণে যে কষ্ট পাইছে।

একই এলাকার হায়দার বিশ্বাস বলেন, রাজ্জাক ভাই এই সাপের খামার কইরা কইরা নিজের আর বাপের টাহা পয়সা সব শেষ করছে। এহন বাপের থুইয়া যাওয়া জমি বন্ধক আর বেইচা চলতেছে। সরকার যদি এই মুহূর্তে তারে একটু সাহায্য করতো তাহলে হয়তো রাজ্জাক বিশ্বাস আবারও ঘুইরা দাড়াইতে পারতো।

এ বিষয়ে রাজ্জাক বিশ্বাস বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই সাপের খামারটি এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছি৷ সাপের খামারটি টিকিয়ে রাখতে গিয়ে আজ আমি নিঃস্ব। কিছুদিন আগে আমার একমাত্র ছেলেটা মারা যায়, ছেলের মৃত্যু কথা শুনে আমার আব্বাও মৃত্যুবরণ করলেন। ছেলে আর বাবার মৃত্যুর এক মাস পর আমার মা মারা গেলেন! স্বজনদের হারানো শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই রিমালের কারণে পানি উঠে আমার খামারের প্রায় আড়াইশ সাপ মরে যায়। আমি শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি, কিছুই করতে পারি নাই! 

সাপের খামারের ২৫০ সাপের মৃত্যুর বিষয়ে পটুয়াখালী উপকূলীয় বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, 'যেহেতু রাজ্জাক বিশ্বাস অবৈধ ভাবে সাপের খামারটি পরিচালনা করছে, তাই তাকে সরকারি সহযোগিতার কোনো সুযোগ নেই। গত বছরের ১১ এপ্রিল বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ও উপকূলীয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে খামারটি বন্ধ করে সাপ বনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য একটি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু খামারটি এখনও চলমান আছে তাই এটিকে বন্ধের জন্য আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো৷

;