রাজধানী থেকে আনসার আল ইসলামের ৩ সদস্য গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত, রাজধানী থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের ৩ সদস্য গ্রেফতার

ছবি: সংগৃহীত, রাজধানী থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের ৩ সদস্য গ্রেফতার

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর মহাখালী থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে সিটিটিসির কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. মামুন হোসেন, আবু বক্কর ও হাসিবুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি ল্যাপটপ ও ৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

বুধবার (৩ জুলাই) বার্তা ২৪.কমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ডিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে, সিটিটিসি সূত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা স্বীকার করেছেন যে, তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন 'আনসার আল ইসলাম'-এর সক্রিয় সদস্য।

গ্রেফতার মো. মামুন হোসেন জানান, তিনি অনলাইনে মুফতি জসিমউদ্দিন রহমানী ও তামিম আল আদনানির বক্তব্য শুনে উগ্রবাদের দিকে আকৃষ্ট হন। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে বিভিন্ন আইডির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ‘আনসার আল ইসলাম’ সংগঠনের হয়ে কাজ শুরু করেন।

সংগঠনের সদস্য নাজমুল হাসান ওরফে ওসমান ও আবু কায়সার ওরফে রনির সঙ্গে মামুনের অনলাইনে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। রনি মামুনকে জানান, ‘পটাশিয়াম নাইট্রেট’ দিয়ে বিস্ফোরক বা বোমা বানানো যায়। সেইসঙ্গে আলীবাবা ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করার জন্যও মামুনকে নির্দেশনা প্রদান করেন। নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে একত্রিত হলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে এবং নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়।

এ সংক্রান্তে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ২০১৯ সালে গেণ্ডারিয়া থানায় একটি মামলা রুজু হয়।

এ ঘটনার সহযোগী নাহিদ ফেরদাউস, মালয়েশিয়ায় এবং জ্যাক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করায় তখন তাদের চিহ্নিত কিংবা গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

সে ঘটনার পর মামুন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে বন্দি আবু বক্করের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। মামুন আবু বক্করকে সংগঠনের নাহিদ ফেরদাউসের বিষয়ে বলে এবং নাহিদের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দেন।

আবু বক্কর কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে অনলাইনে নাহিদ ফেরদাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নাহিদ ফেরদাউস সংগঠনের জন্য বিদেশ থেকে আবু বক্করের কাছে নিয়মিত অর্থ পাঠান।

আবু বক্কর সে অর্থ সংগঠনের কাজে ব্যবহার করেন। নাহিদ ফেরদাউস সংগঠনের গুরুত্বপুর্ণ সদস্য জ্যাকের সঙ্গে আবু বক্করকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং জ্যাক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছে বলে জানান। জ্যাক আনসার আল ইসলাম সংগঠনে নিয়মিত অর্থায়ন করেন বলেও জানান তিনি।

সিটিটিসি সূত্র আরো জানায়, পরবর্তীতে গ্রেফতার আবু বক্কর অপর গ্রেফতার হাসিবুল ইসলামকে আনসার আল ইসলামের দাওয়াত দেন এবং নাহিদ ফেরদাউস ও জ্যাকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

হাসিবুল ইসলাম নাহিদ ফেরদাউস ও জ্যাকের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন। জনশক্তি বিদেশে পাঠানোর আড়ালে আনসার আল ইসলাম সংগঠনের সদস্যদের বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন এবং দেশে আনসার আল ইসলামের নেটওয়ার্ক স্থাপন করেন। বিদেশে অবস্থানরত সংগঠনের সদস্যরা বাংলাদেশে নাশকতার পরিকল্পনা করেন।

সূত্র আরো জানায়, গ্রেফতাররা তাদের পলাতক সহযোগীদের নিয়ে বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার নিমিত্তে সরকার ও রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা বিঘ্ন ও ক্ষতিসাধনের ষড়যন্ত্র করেন। তারা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডেরর পরিকল্পনা করার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে মিলিত হন।

তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

সিলেটে নৌকা থেকে ২৬৫ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার, আটক ১



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনি।

উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনি।

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের গোয়াইনঘাটে পুলিশের অভিযানে চিনি বোঝাই ২টি নৌকা থেকে ২৬৫ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ এক চোরাকারবারিকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার (০৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জাফলং ইউনিয়নের অন্তর্গত উত্তর প্রতাপপুর এলাকা থেকে চিনি উদ্ধার ও তাকে আটক করা হয়। 

আটককৃত আবুল হায়াত (৩০) পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের লুনি হাওর গ্রামের আব্দুল ওয়াহিদের ছেলে।

শুক্রবার রাতে গোয়াইনঘাট পুলিশ জানায়, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশনায় একটি আভিযানিক টিম উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের উত্তর প্রতাপপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে পলাতক আসামিদের ফেলে যাওয়া ২টি নৌকাসহ ২৬৫ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার এবং আবুল হায়াতকে আটক করা হয়। উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনির মূল্য ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। 

এদিকে এ ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে আটককৃত আবুল হায়াতকে প্রধান আসামি করে ও ৫ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা রুজু করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম পিপিএম।

;

নিরাপত্তাকর্মীকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা, আত্মগোপনে ফ্ল্যাট মালিক মফিদুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় গাড়িচাপা দিয়ে নিরাপত্তাকর্মী মো. ফজলুল হককে (২৫) হত্যার পর গাঁ ঢাকা দিয়েছে ঘাতক গাড়ি চালক ও ফ্ল্যাট মালিক ইঞ্জিনিয়ার মফিদুল ইসলাম (৬৯)।

গত বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) সকালে এ ঘটনার পর রাতে মফিদুলকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী। এরপর শুক্রবার (০৫ জুলাই) পর্যন্ত একাধিক অভিযান চালালেও তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেট ভেঙে ফজলুলকে চাপা দেয় মফিদুল। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, কোন কারণে জিদ থেকে বা পরিকল্পনা করে এই হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

মামলার এজাহারে নিহতের স্ত্রী শরীফা বেগম দাবি করেন, ঢাকায় সেফ ফোর্স সিকিউরিটি কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন ফজলুল। এক মাস আগেই এই ভবনে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিয়োগ পান। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে তার ডিউটি ছিল। এসময় সকাল সোয়া ৮টার দিকে আসামি মফিদুল গ্যারেজ থেকে বের হওয়ার সময় দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে ফজলুলকে ধাক্কা দিলে গেট ভেঙ্গে রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে সে। এসময় মফিদুল তার গাড়িটি ফজলুলের শরীরের উপর উঠিয়ে দেয়। এসময় তার কোমর ভেঙ্গে যায়, কপাল, ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটাসহ গুরুতর জখম হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন। এর মধ্যে গাড়ির মালিক মফিদুল তার গাড়িটি রেখেই পালিয়ে যান।

তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে শরিফা বেগম বলেন, আমার দুইটা মেয়ে। বড় মেয়ের বয়স ৫ বছর আর ছোট মেয়ের বয়স ১৬ মাস। আমার মেয়ে দুটো এতিম হয়ে গেলো। আমি এখন এদের নিয়ে কীভাবে থাকবো। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।

নিহতের বোন মিনারা বেগম বলেন, ঘটনার পর পুরো বিষয়টি ম্যানেজের চেষ্টা করছে রাজাবাজারের স্থানীয় বড় ভাই পরিচয় দেওয়া চুন্নু ও শাহজাহান নামে দুই লোক। কয়েক দফায় কাউন্সিলরের অফিসে তাদের বুঝানো হয়েছে মীমাংসার জন্য। 

তিনি বলেন, আমাদের সাথে মীমাংসার কথা বলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে মফিদুল ইসলামের গাড়ির চালক বলছেন, গাড়ির ব্রেকপ্যাড ক্ষয় হয়ে গিয়েছিল। স্যার সেটা চেক করতে গাড়িতে উঠে পা দিয়ে একসেলেটর চাপ দেন, এরপর গাড়ি চলতে শুরু করলে তিনি হয়তো থামাতে গিয়ে ব্রেকে পা না দিয়ে ভুলে একসেলেটরে আরও জোরে চাপ দেন। এতে গাড়ি মুহূর্তের মধ্যে গেট ভেঙে বাইরে গিয়ে ধাক্কা খায়।

এ ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেট ভেঙে ফজলুলকে চাপা দেয় আসামি মফিদুল। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। আমরা তাকে গ্রেফতারের জন্য কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছি। খুব দ্রুতই আসামিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

;

নরসিংদীতে নিখোঁজের একদিন পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
নিহত শিশু আয়েশা/ছবি: সংগৃহীত

নিহত শিশু আয়েশা/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নরসিংদীর মনোহরদীতে আয়েশা আক্তার নামে দেড় বছরের এক শিশু নিখোঁজের একদিনপর ধান ক্ষেত থেকে তার মরদেহ পাওয়া গেছে। 

শুক্রবার (০৫ জুলাই) বেলা এগারটার দিকে মনোহরদী পৌরসভার হাররদীয়া এলাকায় ধান ক্ষেত থেকে শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শিশু আয়েশা মনোহরদী পৌরসভার হাররদিয়া গ্রামের আসাদ মিয়ার মেয়ে। 

শিশুর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) সকাল ৯টার পর থেকে নিখোঁজ হয় শিশু আয়েশা। অনেক খোঁজাখুঁজি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ পোস্ট দেওয়ার পরও নিহত আয়েশাকে না পেয়ে চিন্তায় পড়ে যায় পরিবারের লোকজন। 

পরে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বাড়ির পাশে বৃষ্টির পানি জমে থাকা ধানের জমিতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশি। পরে শিশুটির পরিবারের লোকজন এসে মরদেহটি শনাক্ত করে এবং মনোহরদী থানায় খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করে। 

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া বার্তা২৪.কমকে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে।

;

সাপের খামারে রিমালের তাণ্ডব, ২৫০ সাপের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে পুরো পটুয়াখালী। বাদ যায়নি বাংলাদেশ স্নেক`স ভেনাম (Bangladesh snakes venom) নামের দেশের প্রথম বিষধর সাপের খামারটিও। রিমালের তাণ্ডবে খামারের প্রায় ২৫০টি বিষধর সাপের মৃত্যু হয়েছে।

তবে খামারটির সরকারি অনুমোদন না থাকায় বনবিভাগ তথা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতার সুযোগ নেই। আব্দুল রাজ্জাক বিশ্বাস নামের এক তরুণ দেশসেরা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ২০০০ সালে পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের নন্দিপাড়া গ্রামে তার নিজ বাড়ির পাশে একটি কিং কোবরা সাপ এবং ২৪টি ডিম নিয়ে গড়ে তোলেন দেশের প্রথম বিষধর সাপের খামার। পরিকল্পনা ছিল সরকারি অনুমোদন পেলে সাপের বিষ সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে হবেন দেশ সেরা উদ্যোক্তা। কিন্তু সেই রাজ্জাক বিশ্বাসের স্বপ্ন এখন অধরাই রয়ে গেল।

বর্তমানে দেশীয় নামে পরিচিত কিংকোবরা, পাইথন, পঙ্খীরাজ, কালকুলিন, সাদা গোমা, কেউটে, দাঁড়াশ, বাসুয়া, পদ্ম গোমা, বিষঝুড়ি ও গোঁড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দের শতাধিক বিষধর সাপ রয়েছে রাজ্জাক বিশ্বাসের খামারে।

নন্দিপাড়া গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, রাজ্জাক বিশ্বাস ভাই ২৩ থেকে ২৪ বছর পর্যন্ত এর সাপের খামার লইয়া কষ্ট করতে আছে। এই বইন্নায় আমাগো এলাকায় কোমর পর্যন্ত পানি উঠছিল, আর এই পানিতে ভাইর কয়েক'শ সাপ মারা গেছে। ভাই তার বাপ মায় মরণেও এতো কষ্ট পায় নাই, এই সাপগুলা মরণের কারণে যে কষ্ট পাইছে।

একই এলাকার হায়দার বিশ্বাস বলেন, রাজ্জাক ভাই এই সাপের খামার কইরা কইরা নিজের আর বাপের টাহা পয়সা সব শেষ করছে। এহন বাপের থুইয়া যাওয়া জমি বন্ধক আর বেইচা চলতেছে। সরকার যদি এই মুহূর্তে তারে একটু সাহায্য করতো তাহলে হয়তো রাজ্জাক বিশ্বাস আবারও ঘুইরা দাড়াইতে পারতো।

এ বিষয়ে রাজ্জাক বিশ্বাস বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই সাপের খামারটি এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছি৷ সাপের খামারটি টিকিয়ে রাখতে গিয়ে আজ আমি নিঃস্ব। কিছুদিন আগে আমার একমাত্র ছেলেটা মারা যায়, ছেলের মৃত্যু কথা শুনে আমার আব্বাও মৃত্যুবরণ করলেন। ছেলে আর বাবার মৃত্যুর এক মাস পর আমার মা মারা গেলেন! স্বজনদের হারানো শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই রিমালের কারণে পানি উঠে আমার খামারের প্রায় আড়াইশ সাপ মরে যায়। আমি শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি, কিছুই করতে পারি নাই! 

সাপের খামারের ২৫০ সাপের মৃত্যুর বিষয়ে পটুয়াখালী উপকূলীয় বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, 'যেহেতু রাজ্জাক বিশ্বাস অবৈধ ভাবে সাপের খামারটি পরিচালনা করছে, তাই তাকে সরকারি সহযোগিতার কোনো সুযোগ নেই। গত বছরের ১১ এপ্রিল বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ও উপকূলীয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে খামারটি বন্ধ করে সাপ বনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য একটি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু খামারটি এখনও চলমান আছে তাই এটিকে বন্ধের জন্য আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো৷

;