রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন মন্দির থেকে যাত্রা শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। ধর্মীয় এই উৎসব ঘিরে স্বামীবাগ ইসকন মন্দির প্রাঙ্গণে ঢল নেমেছে লাখো সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের।
রথযাত্রাটি রোববার (৭ জুলাই) বিকেল ৩টার পর রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন মন্দির থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে। আগামী ১৫ জুলাই বিকেল ৩টায় ঢাকেশ্বরী মন্দির হতে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরে এসে শেষ হবে উল্টো রথযাত্রা।
সরেজমিনে ইসকন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, এদিন বেলা ২টার পর থেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন সাজে আসতে শুরু করে ইসকন মন্দির প্রাঙ্গণে। বিভিন্ন সাজে মন্দির প্রাঙ্গণে এসে উপস্থিত হতে থাকে সনাতন ধর্মের অনুসারীরা। বেলা ৩টার পর শুরু হয় রথের দড়ি টানা। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের তালে নেচে গেয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের উদ্দেশে শুরু হয় যাত্রা।
এদিকে রথযাত্রা ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি জোরদারে পাহারায় রয়েছে পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
রথযাত্রায় ঢল নেমেছে লাখো সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের
সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে আনন্দমুখর পরিবেশে নয় দিনব্যাপী শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা মহোৎসবের আয়োজন করা হয়।
সনাতনীদের বিশ্বাস, জগন্নাথদেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। এই বিশ্বাসেই প্রতি বছর পালিত হয় শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পালিত হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব রথযাত্রা। বর্ণিল সাজ ও বাদ্যযন্ত্রের তালে রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন মন্দির থেকে রথ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) ৯ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামানায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, পদাবলী কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন।
‘শেখ হাসিনা আছেন বলেই অসহায়রা আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন’
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
শিল্পমন্ত্রী এড. নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন
জাতীয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই দেশের অসহায় মানুষ আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী এড. নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
রোববার (৭ জুলাই) সকালে নরসিংদী জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ শেষে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই দেশের অসহায় মানুষ আজ আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। একজন অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য ৫০ হাজার টাকা অনেক কিছু। এই টাকায় একজন অসহায় মানুষের চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে।
জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলমের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, সিভিল সার্জন ফারহামা আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুশফিকুর রহমান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুল হাসান তাপস, সহকারী পরিচালক নঈম জাহাঙ্গীর, আব্দুল্লাহ আল মামুন, রেজিষ্ট্রেশন কর্মকর্তা সুরভী আফরোজসহ অন্যরা।
এসময় সমাজসেবা অধিদফতরের উদ্যোগে জেলার ২০৬ জন রোগীকে ৫০ হাজার টাকা করে চিকিৎসা সহায়তার চেক বিতরণ করা হয়।
কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিল এবং সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে কোটা সংস্কারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৭ জুলাই) বিকাল ৩টায় শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের গেটের সামনে চাঁনখারপুল মোড় অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সড়ক অবরোধের কারণে রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
সড়কে যানবাহন আটকে আছে। মোড়ের মাঝখানে গোল করে বসে শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী নানা স্লোগান দিচ্ছেন। গাইছেন প্রতিবাদী গান। তাদের হাতে কোটাবিরোধী নানা প্ল্যাকার্ড ছিল। অবরোধ চলাকালে পাশেই পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য অবস্থান করছিলেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়, দিয়েছি তো রক্ত আরও দেব রক্ত’, ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে’, লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা না মেধা মেধা মেধা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে কোটা প্রথার কবর দে' সহ নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে চাঁনখারপুল মোড়।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের দাবি মূলত তিনটি। ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সব গ্রেডে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কোটা রেখে কোটা পুনর্বণ্টন বা সংস্কার; চাকরির পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা ও কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
জানা যায়, পবিত্র ঈদুল আযহার আগে ৫ জুন সরকারি দফতর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত। ওই দিন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী আন্দোলনে নামেন। এ অবস্থায় আদালতের ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানির জন্য ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়।
২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। সে সময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলনে ছাত্রলীগসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলার অভিযোগ করেন।
ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল থেকে যমুনা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। টানা পাঁচদিন পানি বেড়ে গতকাল শনিবার (৬ জুলাই) সকাল পর্যন্ত বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এতে জেলার ৬টি উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
জামালপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) আব্দুল মান্নান বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ধীরগতিতে কমছে যমুনার নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় বাহাদুরাবাদ ৭ সেন্টিমিটার পানি কমলেও এখনো বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, জেলার ৫টি উপজেলার বন্যার্তদের ৪৮০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৬লাখ টাকা ও ৪ হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।