লক্ষ্মীপুরে বিশুদ্ধ পানির সংকট, দুর্ভোগে ১০ লক্ষাধিক মানুষ

  বন্যা পরিস্থিতি
  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

লক্ষ্মীপুরে কমছে বন্যার পানি, ছবি: বার্তা২৪.কম

লক্ষ্মীপুরে কমছে বন্যার পানি, ছবি: বার্তা২৪.কম

লক্ষ্মীপুর জেলায় গত ৭ দিন ধরে বন্যার পানিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ। এতে প্রকটভাবে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারি-বেসরকারিভাবে পাওয়া ত্রাণের মাধ্যমে খাদ্যসংকট কিছুটা দূর হচ্ছে। তবে বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছেন বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকাল থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছে বন্যার্তরা।  এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দুই ইঞ্চি থেকে তিন ইঞ্চি পানি কমেছে। সদর উপজেলার দিঘলী-মান্দারী এলাকা ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকার মজুপুরের বাসিন্দা নিজাম উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পানি কমা শুরু হয়েছে ঠিকই, তবে ধীর গতিতে। আমার বাড়িতে এক দেড় ইঞ্চি পানি কমেছে।


সদর উপজেলার পশ্চিম জামিরতলি গ্রামের মহিন উদ্দিন বলেন, নিজ বাড়িতেই বন্দি হয়ে আছি ১৫ দিন। খাবার দাবারের সীমাহীন সংকটে যাচ্ছে দিন। সবচেয়ে বেশি সংকটে আছি খাবার পানি নিয়ে।

বিজ্ঞাপন

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে ভাসছে। তবে পানি কমতে শুরু করেছে। রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলায় উল্লেখযোগ্যভাবে পানি কমেছে। নদীতে ভাটা পড়লেই দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য মজুচৌধুরীর হাট এলাকার দুটি স্লুইচ গেইটের কপাটগুলো খুলে দেওয়া হয়। গেইটগুলো আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি।

বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থারের তথ্যমতে, প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। এরমধ্যে ৩০ হাজার মানুষ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে রয়েছে। অন্যান্যদের মধ্যে অনেকেই আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে ঠাঁই নিয়েছেন। তবে সর্বাধিক মানুষ কষ্ট করে বাড়িতেই অবস্থান করছেন।

তবে জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, লক্ষ্মীপুরে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। প্রায় ৩০ হাজার মানুষ আশ্রয়ণকেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।


অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান বলেন, ৭ লাখেরও বেশি মানুষ লক্ষ্মীপুরে পানিবন্দী রয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা ৭৮৯ মেট্টিক টন চাল ও ২০ লাখ ৭০ হাজার টাকা বিতরণ করেছি। এছাড়া শুকনো খাবারও বিতরণ করা হয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ২০ লাখ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। আমরা আরও ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। ওই টাকা বিতরণে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২৩ আগস্ট থেকে নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালী খাল, ওয়াপদা খাল ও ভুলুয়া খাল দিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলায় ঢুকে পড়ে। এতে সদর উপজেলাসহ জেলার ৫টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দেয়।