কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় মোহাম্মদ আরিফ নামের এক কলেজ শিক্ষককে অপহরণের অভিযোগ ওঠেছে।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে দ্রুত সুস্থ অবস্থায় আরিফকে ফিরে পেতে চট্টগ্রাম নগরীর এক রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেছেন পরিবারের সদস্যরা। দুই বছরের শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে হাজির হন অপহৃত কলেজ শিক্ষকের স্ত্রী মেহবুবা আনোয়ার লাইজু।
বিজ্ঞাপন
লিখিত বক্তব্যে স্ত্রী মেহবুবা আনোয়ার লাইজু বলেন, ‘গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫ টার দিকে পারিবারিক প্রয়োজনে আমার স্বামী বাড়ি থেকে বের হন। এরপর অনুমানিক রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ি না ফেরায় আমি তাকে ফোন করি। কিন্তু রিং হলেও তিনি ফোন ধরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে আমি পেকুয়া থানায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিখোঁজ ডায়েরি করি। ওইদিন বাদে এশা নাছির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে আমার স্বামীর জমি-জমা সংক্রান্তে বিরোধ নিষ্পত্তি বিষয়ে শালিশের কথা ছিল। এর পর রাত সাড়ে ১২ টার দিকে অজ্ঞাতস্থল থেকে আমার স্বামীর নম্বর থেকে শাশুড়িকে ফোন করে ছেলে অপহরণের শিকার হয়েছে বলে জানানো হয়। এরপর রাত ২টার দিকে আমাকে এবং শাশুড়িকে ফোন করে চট্টগ্রাম নগরীর ফ্রিপোর্ট এসে আমার স্বামীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন তারা।
পরদিন ফ্রি পোর্ট এলাকায় গিয়ে স্বামীকে পাননি বলে জানান মেহবুবা আনোয়ার লাইজু। তিনি বলেন, ‘২৯ সেপ্টেম্বর সকালে চট্টগ্রাম ফ্রিপোর্ট এলাকায় যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমার স্বামীর নম্বরে কল দিলে সেটি বন্ধ পাই। হতাশ হয়ে ফেরার পথে দুপুর আড়াইটায় আমার স্বামীর নম্বর থেকে ফোন করেন অপহরণকারীরা। তখন মুক্তির জন্য ৩৫-৪০ লাখ টাকা দাবি করেন তারা। পরদিন বিকেল ৪টার মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর নতুন ব্রিজ পুলিশ বক্সের সামনে আমাকে যেতে বলেন অহরণকারীরা। পাশাপাশি তারা হুমকি দিয়ে বলেন ‘কোন চালাকি অথবা পুলিশ, র্যাব কিংবা আর্মির দ্বারস্থ হলে তোর স্বামীর মরদেহ পাবি।’
কিন্তু এরপর আবারও মোবাইল বন্ধ করে দেন অপহরণকারীরা। তবে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সন্ধা ৬ টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত উল্লেখিত মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আমার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রাখে অজ্ঞাতনামা অপহরণকারীরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্বামীকে ফিরে পাইনি।
মেহবুবা আনোয়ার লাইজু কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী কেমন আছে, কি অবস্থায় আছে জানি না। প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও তার কোনো খোঁজ পাইনি। অপহরণকারীদের কাছে মুক্তিপণ দেব জানিয়েও স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। তিন সন্তানকে নিয়ে খুব কষ্টে আছি। আমার স্বামীকে উদ্ধারে সবার সহযোগিতা কামণা করছি।’
এদিকে মোহাম্মদ আরিফকে অপহরণের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে পেকুয়া থানায় মামলা করেছেন তার ছোট ভাই মোহাম্মদ রিয়াদুল ইসলাম।
কলা এমন একটি ফল যা সারা বছরই পাওয়া যায়। আর এর পুষ্টিগুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। তাই দেশজুড়ে এর চাহিদা ব্যাপক। পার্বত্য অঞ্চলে কলা চাষ হয় সব যায়গায়।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বান্দরবানের লামা উপজেলা শহর হতে ৯ কিলোমিটার পূর্ব অবস্থিত ইউনিয়নের রুপসী পাড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায় কলার পরসা সাজিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়ের চাষীরা।
এই বাজার থেকে স্থানীয় পাইকারদের হাত ধরে পাহাড়ি কলা ট্রাক ও পিকআপে চকরিয়া, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ঢাকাসহ দেশের বড় শহরে নিয়ে যান বড় পাইকারি ব্যবসায়ীরা। শুধু রূপসীপাড়া থেকে সপ্তাহের হাটবারে ১০ থেকে ১২ হাজার ছড়া কলা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়।
এদিকে আবহাওয়া ও মাটির উর্বরতার কারণে পাহাড়ে কলা চাষের উপযোগিতা ক্রমেই বাড়ছে। পাহাড়ের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখলেও কলা চাষিরা বরাবরই উপেক্ষিত হচ্ছে। এখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশি কলার চাষ বাড়লেও বাড়েনি কলা চাষের সুযোগ-সুবিধা। দুর্গম যোগাযোগের কারণে সঠিক সময়ে বাজারজাতকরণের অভাবে উপযুক্ত দাম মেলে না।
রূপসীপাড়া বাজার ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা কলা ব্যবসাযীরা বাজারে ঘুরাঘুরি করে কলা দেখছেন। দামদর করে একটি কলা সাইজ অনুযায়ী ২ থেকে আড়াই টাকা বিক্রিয় হয় হাটে। এক ছড়িতে ৬০ পিস কলা থাকলে সেটি সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা বিক্রিয় হয়। আবার ছড়িতে ১০০ বা ১২০ পিস কলা থাকলে বিক্রিয় হয় ৩০০ টাকা দরে। পাইকারি হিসেবে কলার দাম আড়াই টাকা হয়। সেই কলা শহরে যেতে যেতে হাতবদল হয়ে দাম ৫ গুণ বেড়ে হয় জোড়া ২৫ টাকা।
পাহাড়ি অঞ্চলে অনেক জাতের কলা চাষ হলেও বাংলা কলার পরিমাণই বেশি। চট্টগ্রাম শহরে চাকরি করেন স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদ হাসান বাপ্পি বলেন, এই বাংলা কলা আমরা চট্টগ্রামে জোড়া ২০ বা ২৫ টাকা করে কিনে খাই। তখন অবাক হই, আমার এলাকার কলা শহরে এতো চড়া দাম।
৫ গুণ দাম কিভাবে বাড়ে তার কারণ হিসেবে স্থানীয় কলা ব্যবসায়ী মানিম মিয়া বলেন, কলা পচনশীল পণ্য, সব কলা তো আর বিক্রি করা যায় না। আমরা যা ক্রয় করি এর মধ্যে ভালো খারাপ সব আছে। লেবার খরচ, পরিবহনে, স্থানান্তর ও বাজারজাত করতে গিয়ে কিছু কলা নষ্ট হয়।
তিনি আরও বলেন, ৫০ হাজার টাকার কলা কিনলে আরো ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। এছাড়া লাইন খরচ তো আছে। স্থানীয় বাজারের ইজারাদারকেও টাকা দিতে হয়। সবকিছু মিলে ১ লাখ টাকার কলা দেড় লাখ টাকা বিক্রিয় করলে ১০ হাজার টাকা লাভ হয়।
আরেক ব্যবসায়ী রফিক হায়দার বলেন, একটা কলার ছড়িতে ১শ কলা থাকলে তা ২ টাকা ধরে কিনলে ২শ টাকা হয়। এর পরিববহন খরচ পরে ৩০ টাকা, লাইন খরচ হয় ২০ টাকা, লেবার খরচসহ সব মিলিয়ে আরও ১শ টাকা দাম বেড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, শহরে পণ্য যেমন পাহাড়ে এলে পরিবহন খরচ সহ দ্বিগুণ দাম বাড়ে, তেমনি পাহাড়ের পণ্য শহরে গেলে দাম বাড়বে স্বাভাবিক।
কলা চাষিরা জানান, পাহাড়ে মাটিভেদে বিভিন্ন জাতের কলার আবাদ হয়। এর মধ্যে দুই জাতের কলার আবাদ বেশি হতে দেখা যায়। একটি দেশি জাতের বাংলা কলা, অন্যটি চম্পা কলা। এ ছাড়াও চাপা, সরবি ও সাগর কলার আবাদ হয় এখানে। সারা বছর এসব কলার ফলন পাওয়া গেলেও আগস্ট থেকে অক্টোবর মাসে ফলন মেলে সবচেয়ে বেশি।
'নানান বৈষম্যের শিকার হয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি পরিবারগুলো। উপজাতি পরিবারগুলো রাষ্ট্রীয় যেসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, ঠিক তার বিপরীতে বাঙালি পরিবারগুলো তা পাচ্ছে না। পার্বত্য চট্টগ্রামকে খ্রিস্টান অধ্যুষিত রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে।'
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে পাহাড়ের সব হত্যাকাণ্ডের বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ বক্তারা এসব কথা বলেন।
বৈষম্যবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা শিক্ষক সোহেল রানা, পরিবহণ শ্রমিক মামুনসহ পাহাড়ে সংঘটিত সকল হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেন।
ঐক্য পরিষদেই প্রধান সমন্বয়কারী তৌহিদ আজাদের সভাপতিত্বে উক্ত প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সাবেক সদস্য, চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের আমির আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী।
শাহজাহান চৌধুরী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল সমস্যা সমাধানের জন্য একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিশেষ কমিশন গঠনের কোন বিকল্প নাই। ভূমি সমস্যা সামাধান সবাইকে সাথে নিয়ে করতে হবে। রাজনৈতিকভাবে তিন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। সকল জায়গায় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধি নিশ্চিত করা হউক।
তিনি বলেন, ব্যাংক লোন নিলে উপজাতিদের কোনো সুদ দিতে হয় না, কিন্তু বাঙালিদের চড়া সুদ দিতে হয়। উপজাতিরা ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে না পারলে তাদের অনেক ক্ষেত্রেই তা মওকুফ করা হয়। কিন্তু বাঙালিরা পরিশোধ করতে না পারলে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং জেলখানায় যেতে হয়। লোনের ক্ষেত্রে সব সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য একই নীতি অবলম্বন করেছে।
১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিলসহ বৈষম্য, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গঠন ও পার্বত্য চুক্তি বাতিল করে দেশের সাংবিধানিক ধারাসমূহ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদ।
সমাবেশে তারা বলেন, আমরা পাহাড়িদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছি। নিভৃত এলাকায় নামাজ পড়তে পারি না। আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে হেয় করা হচ্ছে। আমাদের ছেলে-মেয়েদেরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপজাতিদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হতে হয়। পাহাড়ে কুকি-চিন ও অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনের ভয়ে অনেক বাঙালি পাহাড় ছেলে চলে যাচ্ছেন। এছাড়া খুন-হত্যার মতো নিয়মিত ঘটনা চলছে।
আরও বলেন, উপজাতিদের জন্য আয়কর ফ্রি, কিন্তু বাঙালিদের আয়কর দিতে হয়। তাই অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালিরা গরিব থেকে গরিব হচ্ছে আর উপজাতিরা দিন দিন ধনী থেকে ধনী হচ্ছে। আয়কর প্রদানে পার্বত্য অঞ্চলের সব সম্প্রদায়ের জন্য একই নিয়ম চালু করা উচিত।
ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক এডভোকেট ইব্রাহিম মুজাহিদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- খাগড়াছড়ি জেলা পারিষদের সাবেক সদস্য আবু বকর, শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, বান্দরবান জেলা নাগরিক পরিষদের সাবেক সভাপতি আতিকুর রহমান, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাদেক, ছাত্র শিবির বান্দরবান জেলার সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, এডভোকেট হাসান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ফজলুল হক শ্রাবণ, তারেক মানোয়ার প্রমুখ।
সিলেটে দুর্গন্ধযুক্ত খাসির মাংস নিয়ে এলাকার মানুষের তোপের মুখে পড়েছে মুখরোচক খাবারের প্রতিষ্ঠান সুলতান’স ডাইন। গত মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেলে সিলেট নগরীর দাঁড়িয়াপাড়াস্থ মাংস সংগ্রহশালা থেকে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় জড়ো হয়ে অভিযান চালান স্থানীয় কিছু যুবক।
এই ঘটনার খবর পেয়ে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে হাজির হলে সুলতান'স ডাইন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে যাতে সংবাদ প্রকাশ না হয় সেজন্য সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতে তোড়জোড় শুরু করেন।
এরপরে বার্তা২৪.কমসহ আরও কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে দৃষ্টিগোচর হয় সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার। তার নির্দেশে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সিলেট জেলা স্যানিটারি পরিদর্শক ও নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তার একটি দল সুলতান ডাইনের বিষয়ে তদারকিতে যান।
এরই মধ্যে মূল ঘটনাস্থলে না গিয়ে বা সিসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো ধরনের অফিসিয়াল পত্র, নির্দেশনা ছাড়া জেলা স্যানিটারি কর্মকর্তাসহ আরেকজনের ৫৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্নজনের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ঘটনাস্থলে না গিয়ে এরূপ ভিডিও নিয়ে ক্ষুব্ধ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সিসিকে সংযুক্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের ২ জন খাদ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ২ জন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পরিদর্শনে যান। তারা সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ সুলতান'স ডাইনের মাংস সংগ্রহশালা দাড়িয়াপাড়া ইমন হাউজিংয়ে না গিয়ে রেঁস্তোরা পরিদর্শন করে সাফাই গেয়েছেন। যা নিয়ম বহির্ভূতভাবে করা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেক কর্মকর্তারাই।
সুলতান'স ডাইন পরিদর্শনে যাওয়া কর্মকর্তারা হলেন- সিলেট সিটি করপোরেশনে সংযুক্ত স্যানিটারি ইন্সপেক্টর বেনু ভূষন দাস ও আব্দুল মুমিত, নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম এবং মনিতা রানী।
তারা সুলতান’স ডাইন পরিদর্শন করে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে সাফাই গেয়ে বক্তব্য দেওয়া কর্মকর্তারা ঘটনার উৎপত্তিস্থল দাড়িয়া পাড়া ইমন হাউজিং পরিদর্শনে যাননি। উপরন্তু স্যানিটারি ইন্সপেক্টর বেনু ভূষন পাল ও নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে দোষারূপ করে সুলতান’স ডাইনের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে, এমন মন্তব্য করেন। তারা সুলতান'স ডাইনের গুণগত মান ও পরিচ্ছন্নতার প্রশংসা করেন। তাদের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন সুলতান’স ডাইনের কর্মকর্তারা।
এবিষয়ে কথা হয় সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে।
তিনি বলেন, সুলতান’স ডাইন পরিদর্শনে যাওয়া দুজন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও ২ জন নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক একসঙ্গে যান। তাদেরকে পাঠানো হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে ও মাংস কোথা থেকে আস, সেটা জানতে। কিন্তু তাদের পক্ষে গিয়ে সাফাই গাওয়া জন্য পাঠানো হয়নি। বক্তব্য দেওয়ার এখতিয়ারও তাদের নেই। তারা কেবল দেখে এসে প্রতিবেদন দিতে পারতেন। তাদের এই বক্তব্যের দায় আমি নিতে পারব না। তাছাড়া সুলতান’স ডাইন তাদের পক্ষে সাফাই গাইতে নিয়ে গেছে কিনা এবং আর্থিক কোনো সুবিধার বিনিময়ে তারা এহেন কর্মকাণ্ড করেছেন কিনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, রোববার (৬ অক্টোবর) সুলতান’স ডাইনের কর্মকর্তাদের যাবতীয় ডকুমেন্ট নিয়ে সিটি করপোরেশনে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর বেনু ভূষন পাল বলেন, গণমাধ্যমে প্রতিবেদন দেখে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অনুমতি দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি। আমরা সেখানে কোনো মিডিয়ায় বক্তব্য দেইনি। তবে সুলতান’স ডাইন'র ভালো দিক ও নীতিবাচক দিক তুলে ধরি। তারা পুরো বক্তব্য রেকর্ড করে ভালো দিকটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়েছে। যদিও নিজের বক্তব্য দেওয়াকে অজ্ঞতা ছিল বলে স্বীকার করেন এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, মূলত ঘটনাস্থল দাড়িয়াপাড়াস্থ যে বাসায় মাংস সংরক্ষণ করা হতো বা যেখান থেকে সুলতান'স ডাইনে মাংস দেয়া হয় সে স্থানে তারা যাননি এবং স্থান সম্পর্কে তারা জানতেনও না। তবে সুলতান’স ডাইন পরিদর্শন করলেও এবিষয়ে কোনো প্রতিবেদন দেননি তারা।
এ বিষয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা চারজন সুলতান’স ডাইন পরিদর্শনে যাই প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশে। তার কথা মতোই পরিদর্শনে গিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পাই। পরিদর্শনকালে তারা পঁচা মাংসের বিষয়টি অস্বীকার করেন। সেখানে কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে কথা বলে, সেই বক্তব্য অজ্ঞাতসারে তারা রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেবো।
উল্লেখ্য- গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর দাড়িয়াপাড়ায় ইমন হাউজিং নামক টিনশেড বাসা থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। সংগ্রহশালা থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে অভিযান করেন স্থানীয় কিছু যুবক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেট নগরীর দাঁড়িয়াপাড়া এলাকার ইমন হাউজিংয়ে একটা বাসা থেকে কয়েক দিন ধরে দুর্গন্ধ আসছিল। এতে চরম ক্ষুব্ধ ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কয়েকজন স্থানীয় যুবক সেখানে যান এবং দেখতে পান ওই বাসায় খাসির মাংস মজুত করে রাখা আছে। পরে তারা জানায় এগুলো সুলতান'স ডাইনের খাসির মাংস। এ সময় তারা পঁচা মাংসের অভিযোগ তুললে, তাদের তোপের মুখে পড়েন সেখানকার দায়িত্বরতরা।
তারা জানান, এগুলো ঢাকায় জবাই করা মাংস। সেখানে জবাই করার পর সিলেটে আনা হয়। এসময় যুবকরা স্থানীয় মুরব্বিদের শরণাপন্ন হলে তারা সুলতান’স ডাইনের ম্যানেজারকে অবহিত করলে তারা এসে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাসায় বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন।
এবিষয়ে সিলেটের নিরাপদ খাদ্য অফিসার সৈয়দ সারফরাজ হোসেন বলেন, ‘তাপমাত্রা মাইনাস ১২-১৮–এর মধ্যে থাকে তাহলে উনারা মাংস রাখতে পারবে। নির্ভর করছে ওখানে উনারা টেম্পারেচার কন্ট্রোল করছেন কি না। ঢাকা থেকে আনার সময় ফ্রিজিং ভ্যান ব্যবহার করছেন কি না। সংরক্ষণের জায়গায় ফ্রিজিং ব্যবস্থা কেমন? যদি কোল্ড চেইন মেনটেইন হয়, তাহলে এ রকম দুর্গন্ধ হওয়ার কথা নয়। পচন ধরতেই দুর্গন্ধ হয়।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সুলতান'স ডাইনের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, এখন ঢাকায় আছি। সিলেটে ফিরে আমরা বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করব। সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে মাংস সরবরাহকারী মা-বাবা দোয়া প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী মোহাম্মদ সুমন বলেন, ‘আমাদের দোকান আছে ঢাকার কাপ্তান বাজারে। খাসিগুলো সেখানে জবাই করা হয়। পরে সেখান থেকে মাংসগুলো বস্তায় ভরে বাসে করে সিলেটের কদমতলীতে আনা হয়। সেখান থেকে আমরা কয়েকজন বস্তাগুলো দাঁড়িয়াপাড়ার এই বাসায় আনি। পরে এখানে মাংসের সাইজ করে সুলতান'স ডাইনে সাপ্লাই দিই।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে জোরালো ভূমিকা পালন করা উত্তরা পশ্চিম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. মনোয়ার ইসলাম চৌধুরী রবিনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে উত্তরার বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন গ্রেফতারকৃত অ্যাড. মনোয়ার ইসলাম চৌধুরী রবিন উত্তরা এলাকায় আন্দোলন দমন-পীড়নে জোরালো ভূমিকা পালন করেন। তিনি উত্তরা পশ্চিম থানায় সাতটি ও উত্তরা পূর্ব থানায় পাঁচটি মামলায় এজাহারভূক্ত আসামি।
গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে পরবর্তী বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছ বলেও জানান তিনি।