অপহরণের শিকার স্বামী, দুই বছরের সন্তান নিয়ে ঘুরছেন স্ত্রী

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অপহরণের শিকার স্বামী, দুই বছরের সন্তান নিয়ে ঘুরছেন স্ত্রী, ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

অপহরণের শিকার স্বামী, দুই বছরের সন্তান নিয়ে ঘুরছেন স্ত্রী, ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় মোহাম্মদ আরিফ নামের এক কলেজ শিক্ষককে অপহরণের অভিযোগ ওঠেছে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে দ্রুত সুস্থ অবস্থায় আরিফকে ফিরে পেতে চট্টগ্রাম নগরীর এক রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেছেন পরিবারের সদস্যরা। দুই বছরের শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে হাজির হন অপহৃত কলেজ শিক্ষকের স্ত্রী মেহবুবা আনোয়ার লাইজু।

বিজ্ঞাপন

লিখিত বক্তব্যে স্ত্রী মেহবুবা আনোয়ার লাইজু বলেন, ‘গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫ টার দিকে পারিবারিক প্রয়োজনে আমার স্বামী বাড়ি থেকে বের হন। এরপর অনুমানিক রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ি না ফেরায় আমি তাকে ফোন করি। কিন্তু রিং হলেও তিনি ফোন ধরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে আমি পেকুয়া থানায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিখোঁজ ডায়েরি করি। ওইদিন বাদে এশা নাছির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে আমার স্বামীর জমি-জমা সংক্রান্তে বিরোধ নিষ্পত্তি বিষয়ে শালিশের কথা ছিল। এর পর রাত সাড়ে ১২ টার দিকে অজ্ঞাতস্থল থেকে আমার স্বামীর নম্বর থেকে শাশুড়িকে ফোন করে ছেলে অপহরণের শিকার হয়েছে বলে জানানো হয়। এরপর রাত ২টার দিকে আমাকে এবং শাশুড়িকে ফোন করে চট্টগ্রাম নগরীর ফ্রিপোর্ট এসে আমার স্বামীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন তারা।

পরদিন ফ্রি পোর্ট এলাকায় গিয়ে স্বামীকে পাননি বলে জানান মেহবুবা আনোয়ার লাইজু। তিনি বলেন, ‘২৯ সেপ্টেম্বর সকালে চট্টগ্রাম ফ্রিপোর্ট এলাকায় যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমার স্বামীর নম্বরে কল দিলে সেটি বন্ধ পাই। হতাশ হয়ে ফেরার পথে দুপুর আড়াইটায় আমার স্বামীর নম্বর থেকে ফোন করেন অপহরণকারীরা। তখন মুক্তির জন্য ৩৫-৪০ লাখ টাকা দাবি করেন তারা। পরদিন বিকেল ৪টার মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর নতুন ব্রিজ পুলিশ বক্সের সামনে আমাকে যেতে বলেন অহরণকারীরা। পাশাপাশি তারা হুমকি দিয়ে বলেন ‘কোন চালাকি অথবা পুলিশ, র‍্যাব কিংবা আর্মির দ্বারস্থ হলে তোর স্বামীর মরদেহ পাবি।’

কিন্তু এরপর আবারও মোবাইল বন্ধ করে দেন অপহরণকারীরা। তবে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সন্ধা ৬ টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত উল্লেখিত মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আমার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রাখে অজ্ঞাতনামা অপহরণকারীরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্বামীকে ফিরে পাইনি।

মেহবুবা আনোয়ার লাইজু কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী কেমন আছে, কি অবস্থায় আছে জানি না। প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও তার কোনো খোঁজ পাইনি। অপহরণকারীদের কাছে মুক্তিপণ দেব জানিয়েও স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। তিন সন্তানকে নিয়ে খুব কষ্টে আছি। আমার স্বামীকে উদ্ধারে সবার সহযোগিতা কামণা করছি।’

এদিকে মোহাম্মদ আরিফকে অপহরণের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে পেকুয়া থানায় মামলা করেছেন তার ছোট ভাই মোহাম্মদ রিয়াদুল ইসলাম।