বাংলাদেশের নৌপ্রধানের সঙ্গে ভারতীয় নৌপ্রধানের সাক্ষাৎ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
অ্যাডমিরাল করমবীর সিং (বাঁয়ে) ও অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, ছবি: সংগৃহীত

অ্যাডমিরাল করমবীর সিং (বাঁয়ে) ও অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সফররত ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল করমবীর সিং। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বনানীতে অবস্থিত নৌ সদর দফতরে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন তারা।

এর আগে, ভারতীয় নৌপ্রধান নৌ সদরে এসে পৌঁছালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সহকারী প্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার অ্যাডমিরাল এম মকবুল হোসেন তাকে স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তাকে গার্ড অব অনার দেয়।

সাক্ষাৎকালে দুই দেশের নৌপ্রধানদ্বয় পরস্পর কুশল বিনিময় করেন। এ সময় বাংলাদেশ সফরের জন্য অ্যাডমিরাল করমবীর সিংকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী। তিনি বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের ঐহিত্যবাহী সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন। তারা আঞ্চলিক সমুদ্র নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়ন, সমুদ্র নিরাপত্তার ঝুঁকি মোকাবিলা ও সমুদ্র বাণিজ্য রক্ষায় বহুপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও সুদৃঢ় করার ওপর জোর দেন। এছাড়া, তারা পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে দুই দেশের নৌ সদস্যদের পারস্পরিক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাড়ানোর ব্যাপারে আলোচনা
করেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের ডিফেন্স অ্যাটাশে, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডিফেন্স অ্যাটাশে, নৌ সদরের পিএসওরা এবং উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সাক্ষাৎ শেষে ভারতীয় নৌপ্রধানকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অপারেশনাল কার্যক্রমের ওপর ব্রিফ করা হয়।

admiral
করমবীর সিংকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়

 

এর আগে, সকালে ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান শিখা অনির্বাণে ফুল দিয়ে একাত্তরের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাৎ বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। পরে তিনি পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। সফরের অংশ হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

বাংলাদেশ সফরকালে অ্যাডমিরাল করমবীর সিং খুলনা ও চট্টগ্রাম নৌঅঞ্চল সফর করবেন। এ সময় তিনি দুই নৌঅঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডারদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তাছাড়া, তিনি খুলনা শিপইয়ার্ড, বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি, বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স ও নৌবাহিনীর বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াডস্ ঘাঁটি নির্ভীক পরিদর্শন করবেন।

উল্লেখ্য, চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে তিনি ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসেন। সফর শেষে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে তার।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পরিচালকের পক্ষে সহ:তথ্য অফিসার এস এম শামীম আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

   

ঘূর্ণিঝড় রিমালের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের অগ্রভাগ। এতে পটুয়াখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

রোববার (২৬ মে) বিকেলে সচিবালয়ে রিমালের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এ তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আশঙ্কার তুলনায় আগেভাগেই ঘূর্ণিঝড় রিমালের অগ্রভাগের প্রভাবে পটুয়াখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। বাতাসের তোড়ে এসব এলাকায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এর আগে তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে উপকূলীয় এলাকার ৮ লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

;

আগামী কয়েক মাস বাংলাদেশের রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকবে: মুডিস



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচি চলমান রাখতে আগামী কয়েক মাস বাংলাদেশের রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকবে বলে জানিয়েছে মার্কিন রেটিং এজেন্সি মুডিস।

মুডিস মনে করে যে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ঋণ সহায়তা পাচ্ছে। 

আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বারবার ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি গত দুই বছর ধরে ডলারের মজুদ ক্রমাগত কমতে থাকা সত্ত্বেও আগামী কয়েক মাস বাংলাদেশের রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকবে বলে মুডিস পূর্বাভাস দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্য, গত জানুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার পর ব্যবসায় অনিশ্চয়তা ধীরে ধীরে কমতে থাকার পাশাপাশি আমদানি বিধিনিষেধ চলমান থাকায় চলতি অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স ইতিবাচক হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ দেওয়া চলমান রাখায় রিজার্ভে এই ইতিবাচক দিক দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচি চলমান রাখতে এই ইতিবাচক ধারা জরুরি।

২০২২ সালের জুনের আগে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এরপর থেকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় কমতে থাকে। এ ছাড়াও, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় আমদানি খরচ বেড়ে যায়। ফলে রিজার্ভ কমে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত ২১ মে রিজার্ভ ছিল ১৮ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

মুডিস বাংলাদেশের রেটিং নিয়ে পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনার পর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, স্থিতিশীল দৃষ্টিভঙ্গিসহ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের জন্য 'বি ওয়ান' রেটিং অপরিবর্তিত রেখেছে।

এতে আরও বলা হয়, 'এই স্থিতিশীল অবস্থার জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ঋণ সহায়তা পাচ্ছে।'

মুডিস আশা করে যে, মহামারির আগের অবস্থার বিবেচনায় বাংলাদেশের আর্থিক পরিস্থিতি দুর্বল হলেও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ সহায়তা রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

এতে বলা হয়, পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার পেছনে এই খাতের অবদান আছে।

দেশটির কম মাথাপিছু আয়, অবকাঠামো, মানবসম্পদ ও প্রতিযোগিতামূলক অর্থনীতির সীমাবদ্ধতা ও পোশাক খাতের ওপর ব্যাপক নির্ভরতা সত্ত্বেও এই স্থিতিশীলতা ভারসাম্যপূর্ণ।

মুডিস আরও বলছে, জোরালো প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বাংলাদেশের ঋণকে ভারসাম্যে রেখেছে। রাজস্বের তুলনায় বাড়তি ঋণ ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা দেশটির আর্থিক স্বস্তি কমিয়ে দিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রতিযোগিতামূলক পোশাক শিল্প দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের জিডিপি, রপ্তানি ও আয়ে অবদান রাখবে। তবে পোশাকের বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়া ও আর্থিক হিসাবের ঘাটতি বাংলাদেশের অবস্থানকে দুর্বল করার পাশাপাশি রেটিংয়ের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।

কম পরিমাণে রাজস্ব আদায়, সক্ষমতার তুলনায় সুদ মেটাতে বেশি খরচ ও তুলনামূলকভাবে ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণের কারণে বাংলাদেশের ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা কমে যাচ্ছে।

মুডিস বলেছে, 'এই পরিস্থিতি দুই থেকে তিন বছর আগের তুলনায় নাজুক থাকবে।'

এতে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি থাকবে, ক্রয় ক্ষমতা কমবে ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে সীমিত হবে।

এপ্রিলে ভোক্তা মূল্য সূচক বেড়েছে নয় দশমিক ৭৪ শতাংশ, যা গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত অর্থবছরে এই সূচক ছিল নয় দশমিক শূন্য দুই শতাংশ।

;

বিটিভির জেলা প্রতিনিধি নিয়োগে এমপির সুপারিশে প্রাধান্য!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ টেলিভিশন-এর জেলা প্রতিনিধি নিয়োগের ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের সুপারিশকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সেইসঙ্গে বিটিভির প্রতিনিধিদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ডিসি অফিসে চিঠি পাঠানো এবং তাদের জন্য ক্যামেরা সরবরাহ করতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে।

রোববার (২৬ মে) দুপুরে সংসদ ভবনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৩য় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

কাজী কেরামত আলী, এমপি-এর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, এমপি, মুহম্মদ শফিকুর রহমান, এমপি, আলী আজম, এমপি,আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী, এমপি এবং মো. আবদুচ ছালাম, এমপি বৈঠকে অংশগ্রহণ নেন।

এসময় বাংলাদেশ বেতার-এর চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত পর্যালোচনা এবং ভালোমানের অনুষ্ঠান প্রচারের জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়।

বৈঠকে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নিহত সব শহীদ, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনসহ সর্বস্তরের স্বাধিকার আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী সব শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বৈঠকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সিচিব, অতিরিক্ত সচিব, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, বিটিভির কর্মকর্তা এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

;

অবৈধভাবে ঋণ দেয়ায় ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে নিজ ও পরিবারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশন লিমিটেডকে অবৈধভাবে সাড়ে ৯ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া, ঋণ মওকুফ করা ও কার্যাদেশ দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। এ নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি অভিযোগও দায়ের করেছে।

রোববার (২৬ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর কাছে ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ( ডিএমডি) প্রদীপ কুমার কুমার সাহা এ অভিযোগ করেন। এ সময় আইন উপদেষ্টা মাসুদ আখতারসহ ব্যাংকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে প্রদীপ কুমার কুমার সাহা বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রায়শই বলে থাকেন তিনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে কখনও ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সুবিধা গ্রহণ করেননি। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদনে নিজ পারিবারিক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামে অবস্থিত প্যাকেজেস করপোরেশন লিমিটেডকে দাতা সংস্থার শর্ত লঙ্ঘনপূর্বক গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় আনা এবং ওই প্রতিষ্ঠানকে অর্থায়ন করার বিষয়ে আপত্তি উত্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক তার বাবা দুলা মিয়া, তিনি নিজে এবং তার অপর দুই ভাই আব্দুস সালাম ও মুহাম্মদ ইব্রাহীম।

এছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কর্তৃক গঠিত উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন রিভিউ কমিটির প্রতিবেদন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত স্বনামধন্য নিরীক্ষা ফার্ম কর্তৃক ১৯৮৩ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৪০ বছরের কম্প্রিহেনসিভ নিরীক্ষা রিপোর্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিজ ও পরিবারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনকে বেআইনিভাবে ঋণ প্রদান, ঋণ মওকুফ ও কোটি কোটি টাকার কার্যাদেশ প্রদান সম্পর্কিত ব্যাপক দুর্নীতির দালিলিক তথ্য পাওয়া গেছে। যেখানে অরিজিনাল ভাউচার, এ্যাডভাইস, ড. মুহাম্মদ ইউনূস কর্তৃক ঋণ ও বিলের অনুমোদন পত্রের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ডিএমডি প্রদীপ বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি থাকাকালীন সময়ে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তির লক্ষ্যে আইন ভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অর্পিত দায়িত্বের চূড়ান্ত অবমাননা করে ১৯৯০ সাল থেকে নিজের পারিবারিক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনকে সাড়ে ৯ কোটি টাকা অবৈধ সুবিধা প্রদান করেছেন। গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ-১৯৮৩ অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ সুবিধা শুধুমাত্র ভূমিহীন দরিদ্র ঋণগ্রহীতাদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকলেও তিনি আইন ভঙ্গ করে তার পরিবারিক রুগ্ন ও লোকসানি প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনকে বিপুল অঙ্কের ঋণ প্রদান করেছেন। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে সুদ, এমনকি আসলেরও কিছু অংশ সুকৌশলে মওকুফ করিয়ে নিয়েছেন।

তিনি বলেন, পরিচালানা পর্ষদের কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটিতে গ্রামীণ ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রেষণে নিয়োগ দেন এবং নিজ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষে গ্রামীণ ব্যাংকের অফিস বিনা ভাড়ায় ব্যবহার করেন। পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ব্যতিরেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই দর নির্ধারণী কমিটি গঠন পূর্বক নিজের প্রণীত ও স্বাক্ষরিত গ্রামীণ ব্যাংক ক্রয় নীতিমালা লঙ্ঘন করে নিজের মালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠানকে কোনো প্রকার প্রতিযোগিতামূলক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান ছাড়াই উচ্চদরে গ্রামীণ ব্যাংকের কোটি কোটি টাকার প্রিন্টিং সামগ্রী ছাপানোর কার্যাদেশ প্রদান করে নিজে ও পরিবারিকভাবে বিপুল অঙ্কের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন। আজ এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করে ন্যায়বিচার দাবি করছি।

২০২৪ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।

চার্জশিটভুক্ত ১৪ আসামিরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দফতর সম্পাদক কামরুল হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম।

ওই বছরের ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক।

;