রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, রেলের মূল সংকট রাজস্ব নাই। রেল একটা লোকসানি প্রতিষ্ঠান। একটা লোকসানি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে লোক জোগাড় করা সম্ভব না। লোকসানি প্রতিষ্ঠান লোক ছাটাই করে। রেলের রাজস্ব থেকে পরিচালন ব্যয় অনেক বেশি। এরমধ্যেও জনবল বাড়ানো কাজ করছে সরকার।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেল ৫ টার দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
রেলওয়ের মূল সমস্যা লোকমোটিভ ও রেলকোচ উল্লেখ করে রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, নতুন লোকমোটিভ ও রেলকোচ আমদানি করা ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ তাই রেলওয়ে কারখানায় মেরামত করে লোকমোটিভ, রেলকোচ ও ওয়াগন সংস্কার বা মেরামত করার জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার লোকবল ও বাজেট বৃদ্ধি করার জন্য কাজ করবে সরকার।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এই কারখানায় বর্তমানে যতগুলো কোচ মেরামত হওয়ার কথা তার অর্ধেক বা কম কোচ মেরামত হচ্ছে। আমরা লোকবল দেওয়ার চেষ্টা করছি। আর্থিক বাজেটের সমস্যা আছে সেটা সমাধান করার চেষ্টা করব। একই সাথে রেলের কর্মকর্তা কর্মচারীদের রেলের আয় যাতে বাড়ে এমন কাজ করতে হবে। কারখানা থেকে লোকোমেটিভ বা কোচ বেশি বের করতে পারলে বেশি গাড়ি চলবে, বেশি আয় হবে। এসময় প্রস্তাবিত নতুন ক্যারেজ শপ স্থাপন না করে পুরাতন কারখানার আধুনিকায়ন করে কারখানানে কার্যকর ও উৎপাদনমুখি করার ওপর জোর দেন তিনি।
এ সময় উপদেষ্টার একান্ত সচিব (উপসচিব) মুহাম্মদ হাসনাত মোর্শেদ ভুইয়া, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান ও কারখানার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বগুড়া সদরের নুনগোলা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবু ছালেককে (৫৬) গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বগুড়া সদরের ঘোড়াধাপ বন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বগুড়া ডিবি পুলিশের ইনচার্জ মোস্তাফিজ হাসান এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবু ছালেক বগুড়া সদরের হাজরাদীঘি দক্ষিনপাড়ার মৃত আছির উদ্দিনের ছেলে।
ডিবি পুলিশের ইনচার্জ মোস্তাফিজ হাসান বলেন ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আবু ছালেক আত্মগোপনে ছিলেন। তার নামে দুইটি হত্যা মামলা রয়েছে।গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের একটি দল ঘোড়াধাপ বন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
চোখের যত্ন ও পরিষেবা সম্প্রসারণের জন্য অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কাজ ও সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশ আগ্রহী বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
অরবিস ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট ও সিইও ডেরেক হডকির সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে চোখের যত্নের সেবা সম্প্রসারণ করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে আমরা অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।
আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অরবিস ফ্লাইং আই হাসপাতালের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডেরেক বাংলাদেশ সফর করছেন। ডেরেকে গত বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীতে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে দেখা করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অরবিস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মুনির আহমেদ। অরবিস প্রেসিডেন্ট প্রধান উপদেষ্টাকে ফ্লাইং আই হাসপাতালের একটি মডেল সংস্করণ উপস্থাপন করেন। অধ্যাপক ইউনূস এটির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ডেরেক অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কাজ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। অরবিস ১৯৮২ সালে বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি-সংরক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছিল। গত ৩৯ বছর ধরে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে সংস্থাটি।
ডেরেক বলেন, এই সময়ের মধ্যে, অরবিস এ পর্যন্ত কমিউনিটি আউটরিচ ইভেন্টে ৭ দশমিক ৮ মিলিয়নেরও বেশি চোখের স্ক্রীনিং পরিচালনা করেছে, প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে ৪ দশমিক ৫ মিলিয়নেরও বেশি ব্যক্তিকে ওষুধ ও অপটিক্যাল চিকিৎসা প্রদান করেছে, ২ লাখ ৫৮ হাজার টিরও বেশি চোখের সার্জারি করেছে এবং বাংলাদেশের ৪০ হাজারের বেশি লোককে চোখের যত্ন নেয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষিত করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে চক্ষু স্বাস্থ্য খাতে অরবিসের অবদানের কথা স্বীকার করেন এবং ফ্লাইং আই হাসপাতালের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অরবিস এখন চট্টগ্রামে ১১তম প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি অরবিসকে ভালোবাসি। আমি ফ্লাইং আই হসপিটালকে ভালোবাসি। অরবিস বাংলাদেশে চোখের স্বাস্থ্য খাতে ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম।’
ডেরেক বলেন, অরবিস ব্যক্তি, পরিবার ও জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করার জন্য বিশ্বব্যাপী ২ শতাধিক দেশ ও ভূখণ্ডে দৃষ্টি সংরক্ষণের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
বিশ্বজুড়ে প্রায় এক বিলিয়ন মানুষ সম্পূর্ণভাবে পরিহারযোগ্য অন্ধত্ব ও দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের সমস্যা নিয়ে বসবাস করছে উল্লেখ করে ডেরেক বলেন, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে অরবিস জোরদার ও টেকসই চোখের যত্ন ব্যবস্থা নিয়ে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।
অরবিস প্রেসিডেন্ট বলেন, অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকায় বিশেষ কর্মসূচি পরিচালনা করছে এবং প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ করছে।
তিনি বলেন, গত চার দশক ধরে অরবিস শিশুদের চোখের যত্ন, মাইক্রোসার্জারি, রেটিনাল সার্জারি, কর্নিয়ার রোগ, প্রিম্যাচুরিটি রেটিনোপ্যাথি এবং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ওপর গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের স্থানীয় অংশীদারদের দক্ষতা ও জ্ঞানের উন্নতিতে সাহায্য করেছে।
ডেরেক এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে আরো অবহিত করেন যে, অরবিস সারা দেশে বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ৪২টি দৃষ্টি সেবা কেন্দ্র স্থাপন করে চোখের যত্নের সাথে জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করেছে, ১৭টি সেকেন্ডারি হাসপাতাল, চারটি তৃতীয় হাসপাতাল, দুটি ওয়েট ল্যাব, একটি মানসম্পন্ন রিসোর্স সেন্টার ও একটি ডিজিটাল ট্রেনিং হাব প্রতিষ্ঠা বা উন্নতিতে সহায়তা করেছে।
এছাড়া, অরবিস ৪০০টি কমিউনিটি ক্লিনিককে ভিশন স্ক্রিনিং টুলস দিয়ে সজ্জিত করেছে এবং শৈশব অন্ধত্বের একটি প্রধান কারণ, প্রিম্যাচুরিটি রেটিনোপ্যাথির স্ক্রিনিং ও ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্দেশিকা তৈরি করেছে।
সূত্রঃ বাসস
বরগুনার আমতলী উপজেলায় একটি পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ৩২ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকাল থেকে বেলা ১২ টার মধ্যে আমতলী পৌরসভার ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক স্থানে একই কুকুরের হামলায় এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমতলী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এম.এ. কাদের ও নান্নু মোল্লা সড়কে হঠাৎ করে একটি কালো রঙের পাগলা কুকুর চলে আসে। এসময় ওই এলাকার এনএসএস অফিসের সাপোর্টিং স্টাফ মাসুদ রানাকে (৪৫) প্রথমে কুকুরটি আক্রমণ করে কামড় দিয়ে চলে যায়। পরে একই ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকার শিশুসহ আরও ৩১ জনকে ওই কুকুরটি কামড়ে আহত করে। পরে বিভিন্ন সময়ে কামড়ানো আহতদের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা দেয়া হয়।
আহতরা হলেন- রাফিন (৬), জাহিদ (১৫), তানিয়া বেগম (১১), আবু রায়হান (১২), তানজিল আহম্মেদ (১৫), লাল চান (১০), তমাল (২৪), আপন হাওলাদার (২০), শাকিব (১৪), শংকর (৩২), জোহামনি (৯), সীমা (২৯), শফালী (৫০), নির্মল (৫৫), ইয়ামনি (১১) নয়ন (১৯), মোমেনা (১৭), হাফছা (৩২) এখলাস (১৩) আব্দুল মন্নান (৩৩), ইয়ামিন (১৪), বাচ্চু মিয়া (৪০) তিন নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল্লাহ (৭), আরাফাত (৯), আব্দুল মালেক (৭৫), হাসিব (৭), ইউসুব (২৪), সাগর (১৯), আরিফ (১৮), শাহাভানু (১০৪), নির্মল (৫৫)।
এদিকে কুকুরের কামড়ে ৩২ জন আহতের খবর ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন আমতলী পৌর শহরের বাসিন্দারা। এ ছাড়া কুকুরটিকে ধরতে না পারায় নতুন করে আবারও আক্রমণের শঙ্কায় রয়েছেন তারা। এতে ওই পাগলা কুকুরটিকে ধরতে লাঠিসোটা নিয়ে পাহারাও বসিয়েছেন স্থানীয়রা।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী ভিবাগের চিকিৎসক ডাঃ মনিরুজ্জামান খান বলেন, কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে আসা রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌরসভার প্রশাসক মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, কুকুরের কামড়ে আহতের ঘটনা শুনেছি। পৌরসভার সংশ্লিষ্ট শাখাকে প্রয়োজীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।