ভারতে সব ফ্লাইট বন্ধ করল দেশীয় চার এয়ারলাইন্স
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসকরোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ থেকে ভারতে সবগুলো এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বন্ধ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ও নভোএয়ার তাদের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোকাব্বির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বিমান ভারতের কলকাতা রুটে সপ্তাহে ১৪টি এবং দিল্লীতে ৭টি ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বিমান ভারতে তার সব ফ্লাইট বাতিল করেছে।
ভারত সরকার ১৩ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকদের ভ্রমণ ভিসায় ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফ্লাইট পরিচালনাকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মতো রিজেন্ট এয়ারওয়েজ, ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ারও তাদের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার (পিআর) কামরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে জানান, যেহেতু ভারত সরকার ১৪ মার্চ থেকে তাদের দেশে পর্যটন ভিসায় সেদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সও সেই নিয়ম মেনে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করছে। তবে ১৫ মার্চ ঢাকা-চেন্নাই-ঢাকা ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে এবং এটিই হবে শেষ ফ্লাইট।
নভো এয়ারের সিনিয়র ম্যানেজার (মার্কেটিং) মাহফুজুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, বৃহস্পতিবারও তাদের ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা ফ্লাইট চলবে। মূলত ভারতে ফিরতি ফ্লাইটের যাত্রীদের ফিরিয়ে আনতেই সর্বশেষ এই ফ্লাইট পরিচালিত হবে।
রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ডিরেক্টর (মার্কেটিং) সোহেল মজিদ বার্তা২৪.কমকে জানান, ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে তারাও যথারীতি ফ্লাইট বাতিল করছে। তবে কাল শুক্রবার ও শনিবার ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে ফিরতি যাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে।
বাংলাদেশ থেকে ভারতের দিল্লী, কলকাতা ও চেন্নাই রুটে দেশীয় তিন এয়ারলাইন্স সপ্তাহে মোট ৩৭টি ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে।
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের আকাশপথে যাত্রী কমেছে। এর আগে যাত্রী সংকটে পড়ে ১০টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট কমিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
এছাড়া ঢাকা-কুয়েত ও ঢাকা-কাতার রুট পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স বিমান। বিমান সূত্রে জানা গেছে, যাত্রীর অভাবে ১০ রুটে ফ্লাইট সংখ্যা ৬১ থেকে ৩১টিতে নামিয়ে আনা হয়েছে।
এদিকে করোনাভাইরাস আতঙ্কে আকাশপথে সবচেয়ে বেশি যাত্রী কমেছে ঢাকা থেকে চীনের বিভিন্ন রুটে। এ কারণে ঢাকা থেকে চীনের চলাচলকারী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, চায়না ইস্টার্ন, চায়না সাউদার্ন তাদের ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বের নামি-দামি অনেক এয়ারলাইন্স চীনের মূল ভূখণ্ডে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করে দিয়েছে।
বিমান চলাচল খাতে ভয়াবহ অশনি সংকেত দেখা গিয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ) বলছে, যেভাবে এয়ারলাইন্সগুলোতে যাত্রী কমে গিয়েছে তাতে এ খাতে এ বছরে ২৯.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লোকসান হবে। এর মধ্য এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের এয়ারলাইন্সগুলোর লোকসান দেবে ২৭.৮ বিলিয়ন ডলার। আর এশিয়ার বাইরে ১.৫ বিলিয়ন ডলার লোকসান হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আইএটিএ বলছে, চীনের অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল খাতে লোকসান হবে ১২.৮ বিলিয়ন ডলার। ট্রেড বডিগুলো বলছে, এয়ারলাইন্সগুলোতে ১৩ শতাংশ যাত্রী কমেছে, যার বেশিরভাগ চীনে।