করোনা মোকাবিলায় গণমাধ্যম ও সরকার ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে: তথ্যমন্ত্রী

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস
  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বাসায় মতবিনিময় করেন তথ্যমন্ত্রী, ছবি: বার্তা২৪.কম

সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বাসায় মতবিনিময় করেন তথ্যমন্ত্রী, ছবি: বার্তা২৪.কম

করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় গণমাধ্যম ও সরকার আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

সোমবার (৩০ মার্চ) দুপুরে ঢাকায় তথ্যমন্ত্রী মিন্টু রোডের সরকারি বাসভবনে গণমাধ্যম নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা জানান।

বিজ্ঞাপন

করোনা সংকট মোকাবিলা ও এ সংকটের কারণে গণমাধ্যমে নতুনভাবে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগে একমত হওয়ার কথা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক দুর্যোগের এসময় আমাদের দেশও করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকেনি। এ প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্র ও টেলিভিশন মালিক, সম্পাদকীয় পরিষদ ও এডিটরস গিল্ড নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা হয়েছে। এ দুর্যোগ মোকাবিলায় মানুষকে অবহিত ও সতর্ক করা, সঠিক চিত্র তুলে ধরা ও সার্বিকভাবে গণমাধ্যমের ভূমিকা ব্যাপক।

সরকার ও গণমাধ্যমসহ আমরা সবাই যাতে একসঙ্গে কাজ করে এ সংকট থেকে উত্তরণ করতে পারি, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন,  আমরা বৈশ্বিক দুর্যোগের এসময় অবশ্যই  সবাই একযোগে কাজ করার ব্যাপারে একমত হয়েছি।  

বিজ্ঞাপন

জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, অতীতেও আমরা দেখেছি, এমন দুর্যোগের সময়ে নানা ধরনের গুজব রটানো হয়, কিছু সংবাদ মাধ্যম  থেকে মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য ভুয়া সংবাদ পরিবেশিত হয়। এ গুজব ও মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে আমাদের মূলধারার গণমাধ্যমগুলো ভূমিকা রাখতে পারে এবং রাখছে। সরকারও তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

এ ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কীভাবে আরো জোরালো ভূমিকা রাখা যায়, সে বিষয়ে আমরা মূলধারার গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়েছি, যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা সবাই একমত হয়েছি যে এসময় জনগণকে আতঙ্কিত করা কোনোভাবেই সমীচীন নয়, বরং সতর্ক করা দরকার এবং সরকার ও সবাই আর কী কী করতে পারি, ভবিষ্যত পরিকল্পনায় আরো কী যুক্ত করতে পারি, সে বিষয়ে আমরা আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করব।

করোনা পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমে সৃষ্ট সমস্যাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় এনেছেন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ সংকটময় সময়ে সংবাদপত্র ও টেলিভিশনও নানা সংকটের মুখোমুখি হয়েছে, বিশেষ করে সংবাদপত্রের সার্কুলেশন কমে গেছে, কোনোটা অর্ধেকে নেমে এসেছে, কোনোটা আরো কমে গেছে। হকারেরা ও সংবাদপত্রে যারা দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করেন, তারা নানা সমস্যায় পড়েছেন। টেলিভিশনেও কিছু সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যাগুলো মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে কী কী করা যায়, তাদের পাওনা বিলগুলো যাতে আমরা তাড়াতাড়ি দিতে পারি, সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

বৈঠক শেষে বিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম সংকট সময় উত্তরণে সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজের বিষয়ে ঐকমত্যের কথা জানিয়ে বলেন, বিশ্বব্যাপী সংকটের সময়ও গণমাধ্যম ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রাখে এবং রাখবে।

সংবাদপত্র শিল্পের স্বার্থে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে পত্রিকাগুলোর পাওনা বিলগুলো দ্রুত পরিশোধের অনুরোধ জানান তিনি। অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনারস (এটকো) সহসভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, সাংবাদিকরা এসময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। আগামী পাঁচ মাসের জন্য এটকোর জন্য একটি থোক বরাদ্দের অনুরোধ জানান তিনি।

তিনিও সরকারের কাছে টিভিগুলোর পাওনা বিজ্ঞাপন বিল দ্রুত পরিশোধের অনুরোধ জানান। গুজব প্রতিরোধে মূলধারার গণমাধ্যম দৃঢ় ভূমিকা রাখবে বলেও উল্লেখ করেন বাবু।

নিউজপেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সভাপতি এ কে আজাদ, নির্বাহী সদস্য মতিউর রহমান ও তারিক সুজাত, সম্পাদকীয় পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম, সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম, এটকো’র সিনিয়র সহসভাপতি ও এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু, এটকোর অন্যতম পরিচালক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বৈঠকে অংশ নেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাহানারা পারভীন এসময় উপস্থিত ছিলেন।