করোনায় শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে ‘আদর্শ বাড়তি খাবার’

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস
  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পুষ্টিকর খাবার সংকটে আছে দরিদ্র শিশুরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

পুষ্টিকর খাবার সংকটে আছে দরিদ্র শিশুরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া দুস্থ পরিবারগুলোকে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এ সহযোগিতায় চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ থাকলেও শিশুদের জন্য নেই কোনো খাবার।

এতে মহাসংকটে পড়েছে কর্মহীন এসব পরিবার। সেই লক্ষ্যে দুস্থ পরিবারগুলোর শিশুর পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে ‘আদর্শ বাড়তি খাবার’ নামে একটি কর্মসূচি চালু করেছে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর। এরই মধ্যে এ কর্মসূচির আওতায় যশোরের এক হাজার শিশুর বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বার্তা২৪.কমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মুহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনায় কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাপনে নেমে এসেছে অসহায়ত্ব। হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী পড়েছে সবচেয়ে বিপাকে। তবে সরকারের পাশাপাশি তাদের সহযোগিতা করছেন বিত্তবানরাও। কিন্তু এ সহযোগিতার মধ্যে শিশুদের জন্য খাবার ছিল না। তাই ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে যশোরের দরিদ্র পরিবারের শিশুদের জন্য খাবার বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যার মাধ্যমে শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত হবে।

বিজ্ঞাপন
পুষ্টিকর খাবার সংকটে আছে দরিদ্র শিশুরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, শিশু পুষ্টির নিশ্চয়তায় শিশুদের মাঝে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘আদর্শ বাড়তি খাবার’ কর্মসূচির জন্য ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এ কর্মসূচিতে তিন লাখ টাকা ব্যয়ে এক হাজার শিশুকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রতি দু’জন শিশুর মধ্যে তিনশ’ টাকার শিশু খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। শিশু খাদ্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দুধ, দুগ্ধজাত খাবার, সাগু, সুজি। এতিম, হতদরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষের শিশু সন্তানরা এসব ত্রাণ পাবে। প্রথম ধাপে এ কর্মসূচিতে জনসংখ্যা অনুসারে যশোরের সদর উপজেলায় ৫০ হাজার টাকা, মণিরামপুরে ৪০ হাজার টাকা এবং বাকি ছয় উপজেলার প্রতিটিতে ৩০ হাজার টাকার শিশু খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে।

পুষ্টিকর খাবার সংকটে আছে দরিদ্র শিশুরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী বার্তা২৪.কমকে জানান, করোনাভাইরাসে কর্মহীন হয়ে পড়া জনগণের পরিবারে ছোট বড় সবাই খাবার সংকটে রয়েছেন। যেসব অসহায় পরিবারে একাধিক শিশু রয়েছে, সেসব পরিবার পড়েছে মহাসংকটে। এক দিকে এসব মানুষের আয়ের পথ বন্ধ থাকায় শিশুদের নিয়ে তারা পড়েছেন বিপাকে। তাই ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরের অধীনে শিশুদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরে বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে খাবার কিনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পৌঁচ্ছে দেওয়া হচ্ছে।

পুষ্টিকর খাবার সংকটে আছে দরিদ্র শিশুরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে জানান, করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর শ্রমজীবী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অনেকেই পড়েছেন খাদ্য সংকটে। এ সংকটের ফলে বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও খাদ্যাভাবে ভুগছে। অনেক হতদরিদ্র পরিবার তাদের শিশুদের নিয়মিত খাবার দিতে পারছে না। ফলে অনেক শিশু না খেয়ে থাকছে। তবে এবার শিশুদের ত্রাণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তালিকা তৈরি শেষে এসব ত্রাণ শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। করোনা বিপযর্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে যশোরের আট উপজেলার শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে শিশু খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে।