ঠাকুরগাঁওয়ে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় স্কুলছাত্রকে হত্যা, গ্রেফতার ৭
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় স্কুলছাত্র রাসেল রানা’কে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিবেশী কয়েকজন কিশোর। এ ঘটনায় পুলিশ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে।
রোববার (৩ মে) দুপরে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান মনির এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের মধ্য ভোপলা গ্রামের হেলাল ইসলাম ওরফে নাপিত (২২),পশ্চিম ভোপলা গ্রামের নাঈম ইসলাম নাসির (১৯),বোচাপুকুর ডাক্তারপাড়া গ্রামের কুদ্দুস আলী সুন্দর (১৭),রতন ইসলাম (১৭), সোহেল ইসলাম (২২), উত্তর বোচাপুকুর গ্রামের আল আমিন ইসলাম শাহিন (২০) ও বোচাপুকুর বিশুরদিঘী গ্রামের সামিউল ইসলাম (২৬)।
পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গ্রেফতারকৃত যুবকরা ওই ইউনিয়নের পশ্চিম ভোপলা গ্রামের এক কিশোরীকে প্রায় সময় উত্যক্ত করত। এটির প্রতিবাদ করে কিশোরীর ছোট ভাই ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া রাসেল রানা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রেফতারকৃত কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা ওই স্কুলছাত্রকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।
পরে ইভটিজিংয়ের বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার নাম করে গত ২৪ এপ্রিল কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা কৌশলে স্কুলছাত্র রাসেলকে তার বাড়ির পাশে ঈদগাঁহ মাঠে নিয়ে যায়। এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই স্কুলছাত্রকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করে তারা। এক পর্যায়ে কিশোরী গ্যাং এর সদস্যরা ওই স্কুলছাত্রের গলা কেটে হত্যা করে। এরপর নিহত স্কুলছাত্রের মরদেহ পার্শ্ববর্তী একটি ধান খেতে ফেলে তারা পালিয়ে যায়।
পরদিন ২৫ এপ্রিল খবর পেয়ে সকালের দিকে স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের ধান খেত থেকে গলাকাটা অবস্থায় স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় ওইদিনই নিহত স্কুলছাত্রের বড়ভাই রাজু আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, মামলা দায়েরর পর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) আবু তাহের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) গোলাম মর্তুজা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চন্দন কুমার ঘোষসহ অন্যরা মিলে দিনরাত পরিশ্রম করেছে হত্যাকাণ্ডের সঠিক রহস্য উদঘাটনের জন্য। আমরা সফল হয়েছি, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছি।
তিনি বলেন, ৩০ এপ্রিল গ্রেফতারকৃত ৭ জনের মধ্যে ৩জন হেলাল ইসলাম, নাঈম ইসলাম ও কুদ্দুস আলীকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আদালতের বিচারক আরিফুল ইসলাম ওই ৩ জনের কাছ থেকে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি নেন। আদালতে তারা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। এরপর আদালতের বিচারক তাদেরকে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন।