ঠাকুরগাঁওয়ে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় স্কুলছাত্রকে হত্যা, গ্রেফতার ৭



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান মনির সংবাদ সম্মেলন করছেন, ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান মনির সংবাদ সম্মেলন করছেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় স্কুলছাত্র রাসেল রানা’কে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিবেশী কয়েকজন কিশোর। এ ঘটনায় পুলিশ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে।

রোববার (৩ মে) দুপরে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান মনির এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের মধ্য ভোপলা গ্রামের হেলাল ইসলাম ওরফে নাপিত (২২),পশ্চিম ভোপলা গ্রামের নাঈম ইসলাম নাসির (১৯),বোচাপুকুর ডাক্তারপাড়া গ্রামের কুদ্দুস আলী সুন্দর (১৭),রতন ইসলাম (১৭), সোহেল ইসলাম (২২), উত্তর বোচাপুকুর গ্রামের আল আমিন ইসলাম শাহিন (২০) ও বোচাপুকুর বিশুরদিঘী গ্রামের সামিউল ইসলাম (২৬)।

পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গ্রেফতারকৃত যুবকরা ওই ইউনিয়নের পশ্চিম ভোপলা গ্রামের এক কিশোরীকে প্রায় সময় উত্যক্ত করত। এটির প্রতিবাদ করে কিশোরীর ছোট ভাই ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া রাসেল রানা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রেফতারকৃত কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা ওই স্কুলছাত্রকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।

পরে ইভটিজিংয়ের বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার নাম করে গত ২৪ এপ্রিল কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা কৌশলে স্কুলছাত্র রাসেলকে তার বাড়ির পাশে ঈদগাঁহ মাঠে নিয়ে যায়। এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই স্কুলছাত্রকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করে তারা। এক পর্যায়ে কিশোরী গ্যাং এর সদস্যরা ওই স্কুলছাত্রের গলা কেটে হত্যা করে। এরপর নিহত স্কুলছাত্রের মরদেহ পার্শ্ববর্তী একটি ধান খেতে ফেলে তারা পালিয়ে যায়।

পরদিন ২৫ এপ্রিল খবর পেয়ে সকালের দিকে স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের ধান খেত থেকে গলাকাটা অবস্থায় স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় ওইদিনই নিহত স্কুলছাত্রের বড়ভাই রাজু আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, মামলা দায়েরর পর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) আবু তাহের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) গোলাম মর্তুজা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চন্দন কুমার ঘোষসহ অন্যরা মিলে দিনরাত পরিশ্রম করেছে হত্যাকাণ্ডের সঠিক রহস্য উদঘাটনের জন্য। আমরা সফল হয়েছি, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছি।

তিনি বলেন, ৩০ এপ্রিল গ্রেফতারকৃত ৭ জনের মধ্যে ৩জন হেলাল ইসলাম, নাঈম ইসলাম ও কুদ্দুস আলীকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আদালতের বিচারক আরিফুল ইসলাম ওই ৩ জনের কাছ থেকে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি নেন। আদালতে তারা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। এরপর আদালতের বিচারক তাদেরকে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন।

   

লিচুর ফলনে ধস, হাজার টাকা শ’



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লিচুর ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এবার ফলন বিপর্যয় ও অধিক দামের কারণে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন মানুষ। তাপপ্রবাহ দীর্ঘমেয়াদী হওয়ার কারণে বেশিরভাগ লিচু বাগানের লিচুর গুটি রোদে পুড়ে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে; ধারণ করেছে কালো রঙ।

গত কয়েক দিনের অতি তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে লিচু বাগানের অধিকাংশ গাছের লিচু ঝরে পড়েছে; যার ফলে এখন লিচুশূন্য হয়ে পড়েছে বাগানগুলো অথচ কিছুদিন আগেও এলাকার লিচু বাগানগুলো লিচুর গুটিতে ভরপুর ছিল।

কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার লিচু উৎপাদনকারী গ্রামের নাম মঙ্গলবাড়িয়া। দেশ এবং বিদেশে এই মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের লিচুর বেশ খ্যাতি রয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, অল্প কিছু গাছে সামান্য পরিমাণ লিচু টিকে আছে। গাছের নিচে অনেকেই লিচু বিক্রি করছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছে মানুষ। ১০০ লিচু এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেউ অল্প হলেও নিচ্ছেন আবার কেউ দাম শুনে কিনার আগ্রহ হারিয়েছেন। 

লিচুর গুটি রোদে পুড়ে, শুকিয়ে কালো রং ধারণ করেছে

মনোহরদী থেকে আসা শাহ বকুল বলেন,' আগ্রহ নিয়ে এসেছিলাম দেখতে কিন্তু হতাশ হলাম। এবার লিচু কম। যাও আছে চড়া দাম। এর চেয়ে এলাকা থেকে লিচু কিনব ভাবছি।'

কাপাসিয়া থেকে আসা রাজিব মাহমুদ বলেন, দাম বেশি তাই ৫০ টি লিচু পাঁচশো টাকা নিয়ে নিলাম। শুধু খেয়ে দেখার জন্য৷ নেওয়ার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু সিদ্ধান্ত বদল করতে হলো দামের কারণে৷ 

জানা যায় প্রায় দুইশত বছর পূর্বে সুদূর চীন দেশ থেকে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের একজন পুলিশ কর্মকর্তা সর্বপ্রথম এ জাতের লিচুর চারা নিয়ে এসেছিলেন এই গ্রামের । পরবর্তীতে এ লিচুর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ার পর কলম পদ্ধতিতে সংগৃহীত চারা উক্ত গ্রামের ছড়িয়ে পড়ে এবং শুরু হয় লিচুর আবাদ।

মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের এক লিচু চাষী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব দুইশত লিচু গাছ আছে। এছাড়াও আমি শতাধিক লিচু গাছ কিনে রেখেছিলাম। লিচু গাছগুলোতে মৌসুমের শুরুতে মকুলে ভরপুর ছিল। কিন্তু এবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও গত কয়েকদিনের অতি গরমের কারণে লিচু বাগানের অধিকাংশ গাছের লিচু ঝরে পড়েছে। এর ফলে এখন লিচু বাগানের গাছগুলো লিচু শূন্য হয়ে পড়েছে। এর ফলে এখন আমাদের মাথায় হাত পড়েছে।’

তিনি বলেন, প্রতিবছর এই গ্রাম থেকে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হলেও এবার লিচু চাষীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

লিচু আকারেও বেশ ছোট

এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর ই আলম জানান, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে প্রায় ৫ হাজার লিচু গাছ রয়েছে। এই গ্রাম থেকে ৮ থেকে ১০ দশ কোটি টাকার লিচু বেচাকেনা হতো তবে এবার প্রাকৃতিক প্রচণ্ড গরমের কারণে অন্যান্য ফসলাদীর ন্যায় লিচু চাষিরা অনেক ক্ষতি সম্মুখীন হয়েছেন। আমরা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই এলাকায় লিচু চাষীদের নিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে লিচু চাষের করণীয় বিষয় নিয়ে প্রচারপত্র বিতরণ করেছি। এছাড়াও ৪ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে লিচু বাগানের খোঁজখবর নেওয়া এবং লিচু চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবার লিচু চাষীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামার বাড়ি) উপপরিচালক মো. আবদুস সাত্তার বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহ এবং উপযুক্ত সেচ সুবিধার অভাবে এবার মঙ্গল বাড়িয়া জাতের লিচুর ফলনে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সেচ সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে চাষিদের কৌশলী ভূমিকা পালন করতে হবে।

;

রংপুরে তুলা গবেষণা কেন্দ্রে আগুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে নগরীতে তুলা গবেষণা কেন্দ্রে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশকিছু তুলার বস্তা পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

বুধবার (১৫ মে) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তুলার গুদামে এ ঘটনা ঘটে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তুলার  গোডাউনে আগুন জ্বলে উঠে। এতে প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। 

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক শওকত আলী জানান, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের দোতলায় একটি পাকা গোডাউন ঘর ছিল, সেখানে আগুন লাগলে আমাদের খবর দেয়। খবর পেয়ে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। তুলার বস্তা ছাড়া অন্য কিছু পোড়া যায়নি।

তিনি বলেন, কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না।

;

রেস্তোরাঁয় নেই রান্নাঘর, চলে অসামাজিক কাজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর শিক্ষাপাড়া খ্যাত চকবাজার থানার অদূরে গুলজার মোড়ে অবস্থিত 'কফি ম্যাক্স' রেস্তোরাঁ। নামে রেস্তোরাঁ হলেও তার আসল কর্মকাণ্ড ধরা পড়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একটি অভিযানে। এসময় ওই রেস্তোরাঁ রান্নার কোনো আলামত না পেলেও পাওয়া যায় অসামাজিক কাজে বেশকিছু উপকরণ। পরে এই রেস্তোরাঁকে সার্বিক বিষয় বিবেচনায় সিলগালাসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দেয় আভিযানিক দল।

বুধবার (১৫ মে) দুপুরে চকবাজার এলাকায় পরিচালিত এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মাদ ফয়েজ উল্লাহ। এরপর পৃথক একটি অভিযানে একই থানার কেয়ারি মোড়ে অবস্থিত দাবা রোস্তারাঁকে অস্বাস্থ্যকর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার উৎপাদন এবং পরিবেশনের দায়ে সিলগালা করে দেওয়া হয়।

এ অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রানা দেবনাথ, সহকারী পরিচালক মোহাম্মাদ আনিছুর রহমানসহ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সহযোগিতা করেন।

ভোক্তা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মাদ ফয়েজ উল্লাহ জানান, কফি ম্যাক্স রোস্তোরাঁয় অভিযানের সময় আমরা বেশ কিছু অসামাজিক কার্যকলাপের আলামত ও উপকরণ পাই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটিকে বন্ধের আদেশসহ সিলগালা করা হয়েছে। এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির মালিক জনাব নজরুল ইসলাম নামক ব্যক্তি। কিন্তু অভিযান পরিচালনার সময় প্রতিষ্ঠানটির কর্তব্যরত কর্মচারী প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারেনি।

তিনি আরও জানান, অন্যদিকে দাবা নামক ফাস্টফুড আন রেস্টুরেন্টে খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং নোংরা পরিবেশে খাবার উৎপাদন ও পরিবেশন করা হচ্ছে। যেখানে পূর্বের দিনের নষ্ট খাবার গুলোও নতুন করে পরিবেশন করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। যিনি মেসার্স কফি ম্যাক্স নামক প্রতিষ্ঠানটিরও স্বত্বাধিকারী। দাবা নামক রেস্টুরেন্টে সার্বিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটিকে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধের নোটিশ প্রদানসহ সিলগালা করা হয়েছে।

;

যাত্রী সংকটে বরিশাল-ঢাকা রুটে চলছে একটি লঞ্চ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল-ঢাকা নৌ-পথে যাত্রী সংকট চরম আকার ধারন করেছে। এ কারণে জনপ্রিয় এই রুটে এখন একটিমাত্র লঞ্চ চলাচল করছে। মঙ্গলবার বরিশাল নৌ-বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে মাত্র একটি লঞ্চ। বুধবার (১৫ মে) ছেড়ে গেছে দুইটি। যা সাধারণ মানুষের কাছে বিস্ময় হিসেবে দেখা দিয়েছে।

পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকে বরিশাল-ঢাকা নৌ-পথে যাত্রী সংকট শুরু হয়। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পূর্বে প্রতিদিন উভয় রুটে ৭ থেকে ৮ টি লঞ্চ চলাচল করতো। সেখান থেকে কমে অর্ধেকে নেমে আসে। এখন তা একটিতে নেমে এসেছে।

বরিশাল নৌ-বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া এমভি পারাবত-১২ লঞ্চের যাত্রী মো. লোকমান হোসেন বলেন, বরিশাল নৌ-বন্দর থেকে মাত্র একটি লঞ্চ চলবে তা আমরা কখনো কল্পনাও করিনি। এ বিষয়ে বরিশাল নৌ-বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে একটি করে লঞ্চ চলাচল করছে। যাত্রী সংকটের ফলে মালিক পক্ষের রোটেশনের কারনে একটি করে লঞ্চ চালানো হচ্ছে। কিন্তু দুইটি করে লঞ্চ চালানোর কথা ছিল।

তিনি জানান, বর্তমানে প্রতিদিন ৫/৭ শ’র বেশি যাত্রী হয় না। একটি লঞ্চ দিয়ে তা পরিবহন সম্ভব। তাই হয়তো মালিকরা মিলে একটি করে লঞ্চ চালাচ্ছে।

একটি করে লঞ্চ চালানোর জন্য যাত্রী ভোগান্তি হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের সদ্য অবসরে যাওয়া পরিদর্শক মো. কবির হোসেন। তিনি বলেন, বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলের জন্য ২০ টি লঞ্চ রয়েছে। 

প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৬/৭টি এবং একইভাবে বরিশাল থেকে ৬/৭টি ছেড়ে যেতো। ঈদ ও কোরবানির সময় একেকদিন ২০/২৫ টি লঞ্চও চলাচল করেছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাত্রী সংকট শুরু হয়। বর্তমানে যে যাত্রী রয়েছে তাতে দুইটি লঞ্চ ঠিক ছিল। কিন্তু একটি লঞ্চ চলাচল যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে। একটি লঞ্চ চালানোর কারণে কেবিন নিয়ে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ নয়-ছয় করে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একটি লঞ্চে ঠাসা যাত্রী। তবে সেটি ধারণ ক্ষমতার বেশি নয়। লঞ্চের নিচতলা ও দুই তলার ডেকে যাত্রী ভর্তি। লঞ্চ যাত্রীরা জানিয়েছেন, দুইটি লঞ্চ থাকলে তারা স্বাচ্ছন্দে যেতে পারতেন। কিন্তু একটি লঞ্চ হওয়ায় গাদাগাদি করে যেতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে লঞ্চ কর্মচারীরা জানান, যত যাত্রী রয়েছে তা নিয়ে দুইটি লঞ্চ চললে আর্থিক ক্ষতি হয়। তাই একটি লঞ্চ চালানো হচ্ছে। তারা স্বীকার করেছেন, একটি লঞ্চ চলাচল করায় যাত্রীরা একটু গাদাগাদি হয়।

দেশের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় নৌ-রুট বরিশাল-ঢাকা। লিফটসহ নানা অত্যাধুনিক সুবিধার লঞ্চগুলোতে এক সময় যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড় থাকত। ভিভিআইপি, ভিআইপি, সেমি ভিআইপি,  প্রথম শ্রেণির এক শয্যা ও দুই শয্যার কেবিন, সোফা পেতে হেনস্তা হতে হতো। কিন্তু পদ্মা সেতু পাল্টে দেয় সেই চিত্র। যাত্রী সংকটের কারণে লঞ্চের সংখ্যা কমতে শুরু করে।

অভিযোগ রয়েছে, যাত্রী সংকটের অজুহাত দিয়ে বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চ মালিকরা সিন্ডিকেট করে। তারা রোটেশনের মাধ্যমে লঞ্চের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। এখনো যত সংখ্যক যাত্রী রয়েছে তাতে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি লঞ্চ প্রয়োজন। কিন্তু মালিকরা বিআইডব্লিউটিএ ও যাত্রীদের জিম্মি করে একটি/দুইটি লঞ্চ চালায়। এতে ভোগান্তিতে যাত্রীরা।

তবে লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, যাত্রী সংকটে লঞ্চ এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রত্যেক লঞ্চ মালিক কম বেশি ঋন নিয়েছেন। তারা এখন ঠিকমতো ঋনের টাকা পরিশোধ করতে পারেন না। একটি লঞ্চ ব্যাংক নিয়ে গিয়ে কেটে বিক্রি করছে। এক স্বনামধন্য কোম্পানীর একটি লঞ্চ বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

শুধু ঢাকা বরিশাল নয়, দক্ষিনাঞ্চলের সকল রুটে যাত্রী নেই জানিয়ে সুন্দরবন নেভিগেশনের মালিক রিন্টু বলেন, এ ব্যবসাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এজন্য সরকারকে পরিকল্পনা নিতে হবে।

;