সাতছড়িতে পাহাড়ি ঢলে টিলায় ধস, ঝুঁকিতে ত্রিপুরা পল্লী
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ত্রিপুরা পল্লীতে টিলায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বাড়ি-ঘরের ভিটে ভেঙে পড়ায় রাস্তায় বসার উপক্রম হয়েছে তিনটি পরিবারের।
কিন্তু মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে সেখানেই বসবাস করতে হচ্ছে তাদের।
জানা যায়, পল্লীতে ২৪টি পরিবারের বসবাস। তাদের বসবাস করা টিলাতে কয়েক বছর ধরে পাহাড়ি ঢলের কারণে ভাঙন দেখা দেয়। টিলা ধসে পড়ায় দুই বছর আগে সেখান থেকে তিনটি পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। এ বছরও টিলায় ধস দেখা দেয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন ত্রিপুরা পল্লীর বাসিন্দারা। ভাঙন কবলিত এলাকার আরো তিনটি পরিবার সেখান থেকে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে উপজেলার প্রশাসন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে চুনারুঘাটসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে নতুন করে ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা সেখানে গাইডওয়াল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর দেখতেও যান না তারা।
এদিকে, হুমকিতে রয়েছে সেখানে বসবাস করা ২৪টি পরিবার। তাদের পল্লীতে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটিও ভেঙে যেতে পারে এ বছরই। যদি রাস্তাটি ভেঙে যায়, তাহলে পাহাড়ের মধ্যেই সম্পূর্ণভাবে বন্দি হয়ে পড়বে পরিবারগুলো।
স্থানীয় শনকা তন্তবায় বলেন, অনেক কষ্ট করে সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে একটি ঘর বানিয়েছিলাম। কিন্তু টিলায় ধস দেখা দেওয়ায় এখন সেই ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। রাতে ভয়ে ঘুমাতে পাড়ি না। কখন যেন ভেঙে পড়ে।
এ ব্যাপারে ত্রিপুরা পল্লীর হেডম্যান চিত্ত দেববর্মা বলেন, ত্রিপুরা পল্লীতে আগে অনেক মানুষের বসবাস ছিল। বিভিন্ন কারণে এখান থেকে মানুষজন চলে গেছেন। বর্তমানে আমরা ২৪টি পরিবার এখানে বসবাস করছি। কিন্তু টিলা ভেঙে পড়ায় ইতোমধ্যে এখান থেকে তিনটি পরিবার চলে গেছে। এ বছর নতুন করে আরো তিনটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছাড়ার উপক্রম।
তিনি বলেন, এখানে গাইডওয়াল নির্মাণসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আমাদের সবাইকে পথে বসতে হবে। নির্বাচনের সময় সবাই আমাদের আশ্বাস দেন। কিন্তু পরে আর কোনো খবরও নেন না তারা।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যোনের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোতালিব হোসেন বলেন, শুধু ত্রিপুরা পল্লী নয়, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়ছে। উদ্যানের ভেতরে যাওয়ার জন্য যে ব্রিজটি রয়েছে, সেটিও ভেঙে পড়ার উপক্রম। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ারও অনেকটা ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সত্যজিৎ রায় দাশ বলেন, ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা তিনটি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া স্থায়ী সমাধানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আলাপ আলোচনা চলছে।