সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি মো: নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব- ২। নজরুল শের-ই-বাংলা নগর ৯৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি।
গ্রেফতারের বিষয় নিশ্চিত করেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও র্যাব-২ এর সহকারী মিডিয়া কর্মকর্তা শিহাব করিম।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ), বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর (এস কে সুর) চৌধুরী, স্ত্রী সুপর্ণা সুর চোধুরী, মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী উজ্জল মল্লিকেররও বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
মামলার অনুসন্ধান চলাকালে দুদকের পক্ষ থেকে দেশত্যাগ নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মীর আহাম্মদ আলী সালাম ও মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক (প্রসিকিউশন সার্বিক) আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পাঠ্যপুস্তক সংস্কারে ইসলামপন্থী শিক্ষাবিদ রাখার দাবি জানিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজ নামে একটি সংগঠন।
বুধবার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে এ দাবি জানায় তারা।
সংগঠনের আহবায়ক মুফতি সাইফুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমাদের পাঠ্যপুস্তকের অনেক কনটেন্টই ইসলামের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক ছিলো। ইতিহাসে ছিলো অখণ্ড ভারতের বয়ান। তাছাড়া মুসলিম শাসন আমলকে সচেতনভাবে বিকৃত ও নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার প্রচেষ্টাও পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া শিল্প ও সংস্কৃতি বইটা বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে, মুসলিম সন্তানদের নাচগানে বাধ্য করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। অন্যদিকে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস এবং সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের শরিফার গল্প তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয়। এই গল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিকৃত পশ্চিমা এলজিবিটি মতাদর্শের প্রবেশ ঘটে।
তিনি বলেন, বর্তমানে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন হবে সেটা নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পাঠ্যপুস্তক সমন্বয় কমিটি জনসম্মুখে প্রকাশ হবার পর থেকে আবারও বিতর্ক শুরু হয়। কমিটির কয়েকজন সদস্য এলজিবিটি মতাদর্শের সমর্থক এবং গভীর ইসলাম বিদ্বেষ লালন করেন। আমরা দাবি জানাই, এই বাস্তবতায় ধর্ম উপদেষ্টার নেতৃত্বে শিক্ষাবিদদের উপযুক্ত টিম কতৃক পাঠ্যপুস্তকগুলো রিভিউ করা জরুরি, যারা ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে সংবেদনশীল যে কোনো বিষয়বস্তু চিহ্নিত করবেন এবং সংশোধন করবেন, প্রয়োজনে বাদ দেবেন।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টার বরাতে জানা গেছে, পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ শেষের দিকে এবং মধ্য অক্টোবরে বই প্রেসে যাবার পরিকল্পনা আছে। সঙ্গত কারণেই বইগুলো রিভিউ করা জরুরি। আপত্তিকর আলোচনাসহ বইগুলো বাজারে আসলে তীব্র আন্দোলন তৈরি হবার সম্ভাবনা আছে যেটা সরকারের স্থিতিশীল হবার পথে প্রতিবন্ধক হতে পারে। তাছাড়া বই ছাপানোর পর বাতিল করতে হলে সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্চাও যাবে। ফলে, বইগুলো আগেই রিভিউ করা হলে অনেক জটিলতা এড়ানো যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, তবে নতুন বই কেমন হবে কিছু মানুষও এই পাঠ্যপুস্তকের কাজ করেছেন, শব্দের মারপ্যাচে এলজিবিটি মতাদর্শের কোন কন্টেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিনা সেটা নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে। তাছাড়া ইসলাম শিক্ষা বইয়ের কাজ করেছেন আবু সাঈদ খান নামক একজন ঘোষিত হাদিস অস্বীকারকারী। এ নিয়েও গণপরিসরে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে।
বিদ্যমান বাস্তবতায় আমরা নিন্মলিখিত পাঁচ দফা দাবি পেশ করছি,
১। পাঠ্যপুস্তক চূড়ান্ত এবং ছাপানোর আগে তা অবশ্যই একদল শিক্ষাবিদের দ্বারা পর্যালোচনা করাতে হবে যারা ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে সংবেদনশীল যে কোনো বিষয়বস্তু চিহ্নিত করবেন এবং সংশোধন করবেন, প্রয়োজনে বাদ দেবেন। এই টিমে অবশ্যই আলিমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
২। পাঠ্যপুস্তকে এমন কোনো ভিনদেশি মতাদর্শ প্রচার করা যাবে না, যা দেশের সাংস্কৃতিক, নৈতিক এবং ঈমানী মূল্যবোধের সাথে বিরোধপূর্ণ। বিশেষ করে এলজিবিটি এবং জেন্ডার আইডিওলজিসহ ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কনটেন্ট বইতে থাকা যাবে না।
৩। পাঠ্যপুস্তক থেকে অখন্ড ভারতের বয়ান বাদ দিয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে আনতে হবে। ইতিহাস পাঠে অবশ্যই মুসলিম শাসনের সোনালী ইতিহাস ও অবদানের আলোচনা নিশ্চিত করতে হবে।
৪। কিসের ভিত্তিতে এই সমন্বয় কমিটি এবং সংশোধন ও পরিমার্জন টিম গঠিত হলো ও সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হল, এবং কেন সেখানে কোনো শিক্ষাবিদ ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ নেই সেটা জাতির কাছে স্পষ্ট করতে হবে।
৫। গণমানুষের চাহিদাকে আমলে নিয়ে নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সমাজের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতিফলন থাকতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আব্দুল হাই মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, ডা. মেহেদী হাসান, প্রফেসর মুখতার আহমেদ, আজিজুল হক ইসলামাবাদী, লুৎফর রহমান ফরায়েজি, সাইমুম সাদী, রেজাউল করিম আবরার, শরিফ আবু হায়াত অপু প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও সাবেক সংসদ সদস্যসহ বরিশালে পৃথকভাবে দায়ের করা চারটি মামলায় ৮৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে তিনটি কোতয়ালি মডেল থানায় ও একটি মামলা মেহেন্দীগঞ্জ থানায় দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, এজাহারে বিগত ২০১৪ সালে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল, বোমার বিস্ফোরণ, ব্যালটে সিল জালিয়াতিসহ নৈরাজ্যে সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি দায়ের করেছেন তৎকালীন ওই নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চুর সমর্থক মনিরুজ্জামান জামাল।
মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বরিশাল সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু, আক্তার হোসেন আকেজ, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুয়াল হোসেন অরুণ এবং নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বর্তমানে কুমিল্লার আঞ্চলিক কর্মকর্তা মো. দুলাল তালুকদারের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ওসি আরও জানান, মহানগর বিএনপির সাবেক সহশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ফারজানা খান রোজী বাদি হয়ে দায়ের করা একটি মামলায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ ২৬ জনের নামোল্লেখ করে আরও ৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে মারধর, শ্লীলতাহানি, চুরি, খুন জখমের হুমকিসহ বিস্ফোরণ ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
অপর মামলার বাদি সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান মিন্টু এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে তারা নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় আসেন। তখন আওয়ামী লীগের নামধারী ৩৮ জনসহ অজ্ঞাতপরিচয় দুইশ’ নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলা করে।
বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি এমাদুল করিম জানান, ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, দখল ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মুক্তা বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুলুসহ ৬৮ জনের নামোল্লেখ করে আরো দুইশ’ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।