করোনা মোকাবিলায় বার্জারের জীবাণুমুক্তকরণ সেবা
কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব সবার মাঝে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। ভাইরাসটির প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক কার্যক্রমে। এ পরিস্থিতিতে, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষ যেনো নির্দ্বিধায় তাদের প্রতিদিনের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে সে লক্ষ্যে ‘বার্জার এক্সপার্ট স্যানিটাইজেশন সার্ভিস’ চালু করলো বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড।
রোববার (১৯ জুলাই) ডিজিটাল মাধ্যমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘বার্জার এক্সপার্ট স্যানিটাইজেশন সার্ভিস’ নামের নতুন জীবাণুমুক্তকরণ সেবা চালুর ঘোষণা দিয়েছে বার্জার পেইন্টস।
বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের নতুন এ সেবাটি সহজে ও কার্যকরভাবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িকে জীবাণুমুক্ত করবে। ফলে, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতা সুরক্ষা নিশ্চিত করে সেবা দিতে পারবে। একই সঙ্গে বাসায় অবস্থান করা মানুষও নির্বিঘ্নে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুসরণ করে জীবাণুমুক্তকরণ এ সেবাটি প্রদান করবে বার্জারের প্রশিক্ষিত ও পেশাদার সদস্যরা।
এ নিয়ে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের বিপণন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক একেএম সাদেক নাওয়াজ বলেন, ‘কোভিড-১৯ সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে বেশ কিছুদিন ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। বর্তমানে, বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে তাদের কার্যক্রম চালু করেছে। এ পরিস্থিতিতে, কর্মী ও ক্রেতাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের আত্মবিশ্বাসী হওয়া প্রয়োজন। আমাদের বিশ্বাস, নতুন এ সেবা উন্মোচনের মাধ্যমে আমাদের পেশাদার ও প্রশিক্ষিত সদস্যরা জীবাণুমুক্তকরণ সেবা দান করে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষের উৎকণ্ঠা দূর করে তাদের সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করবে।’
সেবা প্রদানের আগে সেবাদাতা দলের সদস্যরা প্রথমে জীবাণুমুক্ত হয়ে পিপিই, মাস্ক, গ্লাভ ও গগলের মতো প্রয়োজনীয় সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহার করবে। যে জায়গা জীবাণুমুক্ত করতে হবে সেখানে থাকা মানুষকে আগে থেকেই সরিয়ে নিতে হবে এবং জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহারের ৩০ মিনিট পর্যন্ত জায়গাটি খালি রাখতে হবে। এছাড়াও, জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়া চলাকালে বৈদ্যুতিক গোলযোগ এড়াতে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা গ্রহণ করবেন সেবাদাতা দলের সদস্যরা।
জীবাণুমুক্ত করার জন্য বার্জার এক্সপার্ট স্যানিটাইজেশন সমাধানটি পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (ইপিএ) এবং ইএন ১৪৪৭৬ স্বীকৃত। এ সমাধানটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে চার সপ্তাহ পর্যন্ত সুরক্ষা দেবে। এ জীবাণুমুক্তকরণ সেবাটি পরিবেশ বান্ধব, এতে কোনো বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য নেই বলে খাবারকেও সুরক্ষিত রাখবে এবং এটি চোখ ও চামড়ারও ক্ষতি করবে না। অর্থাৎ, প্রতিষ্ঠানটির নতুন এ জীবাণুমুক্তকরণ সমাধানটি মানুষ ও প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়। এছাড়াও, এ জীবাণুমুক্তকরণ স্প্রেটি সকল পৃষ্ঠতল এবং পদার্থ বা বস্তুর ওপর ব্যবহার করা যাবে। এমনকি কাপড়েও এটি স্প্রে করা যাবে, যা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক। কারণ, ডব্লিউএইচও’র তথ্য অনুযায়ী, কোভিড-১৯ পৃষ্ঠতলে ২ ঘণ্টা থেকে নয় দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এ সমাধানটি ৯৯.৯৯ শতাংশ ভাইরাস ও জীবাণু ধ্বংস করতে পারবে।
জীবাণুমুক্তকরণ এ সেবাদানে বিশ্বের স্বনামধন্য প্রস্তুতকারকদের কাছ থেকে জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ ও রাসায়নিক দ্রব্য সংগ্রহ করেছে বার্জার পেইন্টস। কোভিড-১৯ জীবাণুমুক্তকরণে এ সমাধানটি বেশ কার্যকর বলে সুপারিশ করেছে সিডিসি, ডব্লিউএইচও এবং যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ। জীবাণুমুক্তকরণে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড গ্রেকো আল্ট্রা, গ্রেকো জিএক্স ২১ ও ইউএলভি ফগার- এসব সরঞ্জাম ব্যবহার করবে।
বার্জার এক্সপার্ট স্যানিটাইজেশন সেবাটি পেতে আগ্রহীদের বার্জার পেইন্টসের সেবা কেন্দ্রগুলোতে (বার্জার এক্সপেরিয়েন্স জোনের আউটলেট, ২৪/৭ কল সেন্টারের নম্বর-, অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ও অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজ) যোগাযোগ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক মো. মহসিন হাবিব চৌধুরী, বিপণন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক একেএম সাদেক নাওয়াজ, প্রজেক্ট, প্রোলিংকস ও এক্সপেরিয়েন্স জোনের প্রধান সাব্বির আহমেদ , ডেকোরেটিভ ব্র্যান্ডের প্রধান নোমান আশরাফী রহমান, চ্যানেল এনগেজমেন্ট বিভাগের প্রধান এএমএম ফজলুর রশিদ এবং গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল আশরাফ সহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
উল্লেখ্য, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করে ১৯৭০ সালে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় ঢাকায়। সারাদেশব্যপী বার্জারের ১৪ টি সেলস ডিপো, ১৬ টি এক্সপেরিয়েন্স জোন রয়েছে। রাজধানী ঢাকা এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠানটির দুটি কারখানা রয়েছে। বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশে প্রায় ১০০০ মানুষ কর্মরত আছেন এবং সারাদেশব্যপী প্রতিষ্ঠানটির ৩০০০ হাজারেরও বেশি ডিলার রয়েছে। রং শিল্পে প্রতিষ্ঠানটির ২৫০ বছরেরও বেশি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। রং সংশ্লিষ্ট পণ্যের বৈচিত্র্যতা এবং গ্রাহকদের মানসম্মত সেবা প্রদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি দেশের শীর্ষ রং কোম্পানিগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ গুণগত মানের পণ্য উৎপাদন এবং গ্রাহক সেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।