কী থাকছে বিএনপির বুধবারের কর্মসূচিতে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: বিএনপির লোগো

ছবি: বিএনপির লোগো

  • Font increase
  • Font Decrease

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আইনী লড়াইয়ে পরাজিত বিএনপি রাজপথ বেছে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

বুধবার (২৬ জুন) নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এ উপলক্ষে বুধবার বেলা ১২টায় রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা ডাকা হয়েছে। ২৫ জুন সাংবাদিক সম্মেলনে রাজপথ বেছে নেওয়ার ঘোষণা দিলেও কর্মসূচির বিষয়ে মুখ খোলেন নি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কী থাকছে বিএনপির কর্মসূচিতে জানতে জনগণের আগ্রহের কমতি নেই।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বার্তা২৪.কমকে জানান, জনসাধারণের কষ্ট হয় এমন কর্মসূচি দেবে না বিএনপি। কারণ আমাদের চেয়ে যারা খালেদা জিয়ার কষ্টে বেশি যন্ত্রণায় রয়েছে তাদের দুর্ভোগ বাড়াতে চাই না। আমাদের মূল বিবেচ্য হবে জনগণের যাতে দুর্ভোগ না হয়। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মতো কর্মসূচি থাকতে পারে।

বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির বড় কর্মসূচি দিলে সমাবেশ দিতে পারে। আর ছোট কর্মসূচির মধ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিকী অনশন থাকতে পারে। ঢাকার বাইরে জেলা পর‌্যায়েও কর্মসূচি থাকতে পারে। অতীতে দোয়ার কর্মসূচি পালন করার নজীর রয়েছে।

ওই নেতারা বলেছেন, বড় ধরণের কর্মসূচি সফল করার মতো অবস্থানে নেই বিএনপি। কারণে মহানগর বিএনপির কমিটি নেই, যুবদলের কমিটি নেই। কাদের মাধ্যমে কর্মসূচি সফল করবে। বিএনপির বিষয়টি ভালো করেই জানে।

বিএনপির অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবীর পাশাপাশি সময় সাময়িক ইস্যুতে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর, ট্রানজিট ইস্যু, সীমান্ত হত্যা, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির বিষয়টি থাকতে পারে। আর সরকারের পদত্যাগের এক দফা আবশ্যিকভাবে যুক্ত থাকতে পারে।

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রাজপথ বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনার করার দায়িত্ব দেওয়া হয় মহাসচিবকে। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এটি হবে বিএনপির চতুর্থ দফা রাজপথ কর্মসূচি।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, চিকিৎসকেরা তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করেছেন। দলের পক্ষ থেকে তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে। এমন কী পরিবারের পক্ষ থেকে দুই বার তার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু অবৈধ সরকার তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে তাকে হত্যার উদ্দেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করেছে। অনতিবিলম্বে খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানাচ্ছি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার একটি বিশেষ আদালতে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পর ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। পরের বছর ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট এই মামলায় তার আপিল খারিজ করে দেওয়ার পর তার শাস্তি বাড়িয়ে ১০ বছর করে দেয়। এর আগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ঢাকার আরেকটি বিশেষ আদালত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করে। তখন তাকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

করোনা মহামারির সময় ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৪০১ (১) ধারা অনুযায়ী কারাদণ্ড স্থগিত করে বিএনপি প্রধানকে মুক্তি দেয়।

মানবিক কারণে সরকার প্রধানের নির্বাহী আদেশে তিনি বাইরে আছেন। সেই একই কারণে বিদেশের পাঠানো কোনো সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'যা-ই করতে হবে আইনের মাধ্যমে করতে হবে। যে আইনে তাকে বের করা হয়েছে, তাতে (বিদেশে যাওয়ার) সুযোগ নেই।'

২০০৯ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার দেড় বছর পর ২০১০ সালের ২৭ জুন প্রথম হরতাল ডাকে বিএনপি। এরপর খালেদা জিয়ার মামলা প্রত্যাহার, তারেক জিয়ার মামলা প্রত্যাহার ও খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে একাধিক দফায় হরতাল পালন করে বিএনপি। অন্যদিকে ২০১৫ সালে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেন বিএনপি। জ্বালাও পোড়াওয়ের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে সেই কর্মসূচি। আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও ওই অবরোধ প্রত্যাহার করেনি বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি। ওই কর্মসূচি নিয়ে অনেক হাস্যরস ও ট্রল করা হয় এখনও।

১১ দিন পর ফিরোজায় খালেদা জিয়া



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ১১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় এসে পৌঁছান সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ায় বাসায় ফেরানো হয়েছে তাকে। হাসপাতালে সংক্রমণ ঝুঁকি থাকায় এ সিদ্ধান্ত।

এরআগে, গত ২২ জুন রাত সাড়ে ৩টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। ২৩ জুন তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়।

৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা ও লিভার সিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এ ছাড়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তার। এরইমধ্যে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদ্‌যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।

গত বছরের ৯ অগাস্ট এভারকেয়ারে ভর্তি হওয়ার পর টানা ৫ মাস সেখানেই ছিলেন খালেদা জিয়া। এ সময় তাকে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ করে দিতে বিএনপির পক্ষ থেকে জোর দাবি জানানো হয়। সরকার রাজি না হওয়ার পর বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ একটি দল ঢাকায় এসে তার চিকিৎসা করেন।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে নেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তখন থেকে ছয় মাস পর পর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।

;

চট্টগ্রামে শনিবারের জনসভায় আন্দোলনের সূত্রপাত হবে: আমীর খসরু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামে আগামী শনিবারের (৬ জুলাই) যে জনসভা, সেই জনসভা থেকে নির্বাচনের পরে আমরা যে আন্দোলনটা শুরু করছি, সে আন্দোলনের সূত্রপাত হবে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল পাঁচটায় নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে শ্রমিকদলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দেন।

চট্টগ্রামের বিক্ষোভ ও সমাবেশের নতুন তারিখ ঘোষণা দিয়ে আমীর খসরু বলেন, আমাদের গত সোমবার (১ জুলাই) একটি জনসভা ছিল, বৃষ্টি এবং বন্যার কারণে সেটি আগামী শনিবার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি শ্রমিকদের অনুরোধ করব, এই সভাটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখানে দুইটা বিষয় আছে। একটি হচ্ছে- দেশনেত্রী গণতন্ত্রের মা’র মুক্তি, গণতন্ত্রী মায়ের মুক্তির সঙ্গে দেশের মানুষের অধিকার অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। এটাকে আলাদা করা যাবে না। এই দেশের মানুষের অধিকার এবং গণতন্ত্রের মায়ের মুক্তি এক সূত্রে গাঁথা।

দ্বিতীয়ত, চট্টগ্রামে শনিবারের যে জনসভা, সেটি থেকে নির্বাচনের পরে আমরা যে আন্দোলনটা শুরু করছি সে আন্দোলনের সূত্রপাত হবে। যেভাবে আমরা বিভাগীয় জনসভার মাধ্যমে বিগত দিনের আন্দোলন শুরু করেছিলাম পলোগ্রাউন্ড মাঠ থেকে, সে সূত্রপাত আমরা করেছিলাম। ইনশাল্লাহ, আগামী শনিবার (৬ জুলাই) আবারও নতুনভাবে আন্দোলনের সূত্রপাত হবে চট্টগ্রামের এ জনসভা থেকে।

আমীর খসরু বলেন, একজন প্রশিক্ষিত পলিটিশিয়ানের সঙ্গে আরেকজন রাজনীতিবিদের পার্থক্য অনেক বড়। যারা ট্রেইন পলিটিশিয়ান, নিজেদেরকে সেভাবে গড়ে তুলেছে। তারা রাজনীতিতে যতটুকু দিতে পারবে, যতটুকু বুঝাতে পারবে, যতটুকু মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে ও সংযোগ সৃষ্টি করতে পারবে। একজন আন-ট্রেইন পলিটিশিয়ানের পক্ষে সেটা সম্ভব হয় না। শ্রমিকদের বেলায় এই বিষয়টি অত্যন্ত প্রযোজ্য। একজন প্রশিক্ষিত শ্রমিক নেতা যেটা তার নিজেদের এবং দেশের স্বার্থে, দলের স্বার্থে করতে পারবে। একজন আন-ট্রেইন নেতার পক্ষে সেটি করা সম্ভব না। এমন না যে, করতে পারবে না। পারবে, তবে সে তার কাজ করবে।

একজন প্রশিক্ষিত শ্রমিক নেতার চিন্তা-ধারাটা সেভাবে কাজ করে। সেজন্য প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আমি মনে করি যে উদ্যোগটা নেওয়া হয়েছে, এটা অব্যাহত রাখতে হবে। স্থায়ীভাবে এ ট্রেনিং যদি আমরা চালু করে রাখতে না পারি একসময় এটা আপনাদের মন থেকে মুছে যাবে। একইভাবে যারা রাজনীতি করে তাদেরও কিছু কিছু চর্চার দরকার। সেই চর্চা না থাকলে কিন্তু আপনি রাজনীতি করবেন, শ্রমিক নেতা হবেন। 

আমীর খসরু শ্রমিকদের অবস্থান তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, শ্রমিকের অবস্থান বাংলাদেশের কোথায় আছে? একটু বিবেচনা করা দরকার। বাংলাদেশের শ্রমিকের সঙ্গে মালিকের যে সম্পর্ক, শ্রমিকের সঙ্গে সরকারের যে সম্পর্ক, শ্রমিকের সঙ্গে রাজনীতির যে সম্পর্ক। এগুলো একটু বিবেচনায় আনা দরকার। আপনাদের ট্রেড ইউনিয়নের মধ্যে অনেকগুলো অনিবন্ধিত। এগুলো নিবন্ধন হচ্ছে না কেন প্রশ্নটা তুলতে হবে শ্রমিক নেতাদের। শ্রমিক নেতাদের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।  

তিনি বলেন, যেখানে যে শ্রমিক কাজ করবে তাদের রেজিস্ট্রেশন দিতে হবে। আমি যদি ভুল করে না থাকি, শ্রমিকদের আইনগত দিক থেকে রেজিস্ট্রেশন দিতে হবে। এটি একটা প্রক্রিয়া। শ্রমিকদের রেজিস্ট্রেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ, এই প্রশ্নটা তোলা দরকার, রেজিস্ট্রেশনে সমস্যা কোথায়?

তিনি আরও বলেন, যে সমস্ত শ্রমিক নেতা গার্মেন্টস সেক্টরের সত্যিকার অর্থে দাবি-দাওয়া নিয়ে কাজ করেছিল। তাদের অনেককে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। তাদের অনেকের বাড়ি-ঘরে হামলা করা হয়েছে। তাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে এবং অনেকে যারা সেই নেতৃত্বে আছেন তারা সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকদের যে পাওনা সেই পাওনার বিষয়ে কোন আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা কিন্তু বলেছিলাম। ২৫ হাজার টাকা গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য। শ্রমিক দলের পক্ষ থেকেও এরকম একটি দাবি-দাওয়া দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন সাড়ে ১২ হাজার টাকা, ২৫ হাজারের অর্ধেক। কিন্তু গার্মেন্ট সেক্টরের কেউ এই দাবি আদায় করতে পারছে না। 

খসরু আরও বলেন, অথচ একটি দেশের প্রোডাকশনের যে মূল বিষয়গুলো রয়েছে তার মধ্যে শ্রমিক হচ্ছে অন্যতম। এখানে জমি আছে, মূলধন আছে কিন্তু শ্রমিক ছাড়া যে বিষয়টা আছে সেটি অসম্পূর্ণ থাকবে। শ্রমিকের কল্যাণ যত কম হবে উৎপাদন ব্যবস্থা তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুতরাং উৎপাদন ব্যবস্থাকে নিয়ে আমরা যদি একটি প্রোডাক্টিভ দেশ গড়তে চাই, জিয়াউর রহমানের যে মূল থিমটা ছিল, “উন্নয়নের রাজনীতির সাথে উৎপাদনের রাজনীতি, উৎপাদন ব্যতীত কোন দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।” এই দুটো তার স্লোগান। আমাদেরকে এ অবস্থা থেকে যদি মুক্ত পেতে হয়। তাহলে আমরা আজকে যে আন্দোলনে নেমেছি এই আন্দোলনে এ আন্দোলনে অন্য সকলের সাথে শ্রমিকের স্বার্থ গভীরভাবে জড়িত। 

আমীর খসরু বিএনপির ভিশনের কথা উল্লেখ করে বলেন, আপনারা জানেন বিএনপির ভিশন-২০৩০ যেটা আছে, স্পষ্টভাবে আমরা সেখানে শ্রমিকের স্বার্থগুলো তুলে ধরেছি। আমরা যে ৩১ দফা করেছি, এই ৩১ দফা বিএনপি একা করে নাই। সবার সঙ্গে আলোচনা করে করেছি। সেখানে শ্রমিকের দাবিগুলো পরিষ্কারভাবেই বলা আছে। বাংলাদেশের সব মানুষের তাদের রাজনৈতিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য যে মৌলিক সংস্কারগুলোর প্রয়োজন আছে। সেই ৩১ দফার মধ্যে প্রত্যেকটি মৌলিক সংস্কারের জন্য বলা হয়েছে। এবং শোকের বিষয় হচ্ছে এটা বিএনপির একার কোন দাবি নয়। এটা সমস্ত বিরোধী দল অর্থাৎ বামপন্থী, ডানপন্থী, মধ্যমপন্থী সবাই কিন্তু একমত হয়ে এই ৩১ দফা প্রণয়ন হয়েছে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে শ্রমিক সমাজ আজ অবহেলিত। শ্রমিকদের দুবেলা খাওয়ার সুযোগ নেই। আজকে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ও বাসস্থান নেই। শ্রমিকদের বিষয়ে সরকারের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। অথচ শ্রমিকদের কারণে বাংলাদেশ টিকে আছে। সভ্যতা বিনির্মাণের কারিগর হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণির মানুষেরা। ৯০ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শ্রমিক সমাজের ভূমিকা আন্দোলনকে সফল করেছিল। বর্তমান ফ্যাসিস্ট ডামি সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিকদেরকে কঠিন আন্দোলনে শরিক হতে হবে।

বিভাগীয় শ্রমিকদলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপত্বিতে সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের পরিচালনায় সমাপনী অধিবেশনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী এড শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির নবনির্বাচিত সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ শ্রম সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও মামুন মোল্লা।

এর আগে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে শুরু হয়ে দিনব্যাপী এই কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বিভাগীয় শ্রমিকদলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।

দ্বিতীয় পর্বে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয় দুপুর বারটায়। কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন চেয়ারপার্রসনের উপদেষ্টা এড শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।

;

মানুষের দৃষ্টি সরাতে ছাগলকাণ্ড তৈরি করেছে সরকার: ফারুক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, সরকার আজিজ, বেনজীর, আসাদুজ্জামান মিয়া, মতিউর তৈরি করেছে। নতুন করে ফয়সাল তৈরি করেছেন। এক এক কাণ্ড তৈরি করে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য ছাগলকাণ্ড করেছেন। এসব কাণ্ডে কোন কাজ হবে না। বাংলাদেশের মানুষ শহীদ জিয়ার দল, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজ অত্যান্ত সুদৃঢ় অবস্থায়।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে প্রেসক্লাবের সামনে ভারতের সঙ্গে অবৈধ চুক্তি, দুর্নীতি, দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন। এই অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম।

জয়নুল আবেদিন ফারুক বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বছরে ৯২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে। আর হিন্দুস্তানের সঙ্গে অসম চুক্তি করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি তৈরি করবেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন সৈনিক, একজন কর্মী থাকতেও আমরা তা হতে দেব না।

তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ কথা বলা শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী ভারত গেলেন এক সপ্তাহে দুইবার। কি মধুর সম্পর্ক, কি প্রেম-প্রীতি, ভালোবাসা। আম, লিচু, ইলিশ পাঠান কিন্তু গিয়ে ফেরত আসেন খালি হাতে। পানির ন্যায্য হিসাব আনতে পারেন না। বরং নতুন করে বুকের ওপর দিয়ে রেললাইন নির্মাণের সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গান গায় শিল্পী, তলে তলে ব্যথা। আসলেই সত্যি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রীর তলে ব্যথা আছে। তিনি একেক দিন একেকটা নতুন কথা আবিষ্কার করেন। আবিষ্কার করলেন, আজকে পত্রিকায় দেখলাম, মমতার জন্য নাকি আমরা তিস্তার পানির বণ্টন পাচ্ছি না। হায়রে কপাল আমাদের এত মন্দ। এই মন্দের পেছনে আওয়ামী লীগ। এই কপাল খারাপের পেছনে আওয়ামী লীগ। আবার নতুন করে সমঝোতা স্বাক্ষরের নামে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজকে খর্ব হওয়ার পথে । বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছি আমরা দিল্লির দাসত্ব গ্রহণ করার জন্য নয়।

গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি বিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও কৃষক দলের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নাঈমের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজ প্রমুখ।

;

বিকেলে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া/ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা শেষে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় আনা হবে। মঙ্গলবার (২ জুন) বিকেলে গুলশানে বাসভবন ফিরোজায়েআসবেন তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি জানান, এভার কেয়ার হাসপাতাল থেকে আজ বিকেল ৫টার দিকে খালেদা জিয়াকে বাসায় নিয়ে আসা হবে।

তিনি বলেন, ম্যাডামের মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের ছাড়পত্র পাওয়া গেছে। আজ বিকেলে ম্যাডাম বাসায় ফিরবেন।

উল্লেখ, গত ২২ জুন রাত সাড়ে ৩টার দিকে এভার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। ২৩ জুন তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়।

গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে তার রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে নেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তখন থেকে ছয় মাস পর পর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।

;