পেলেকে জয় উৎসর্গ ব্রাজিলের
‘মরুর বুকে বিশ্ব কাঁপে’হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ‘ফুটবলের রাজা’ পেলে। ‘জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে’ পেলেকে প্যালিয়াটিভ কেয়ার ইউনিটে নেওয়া হয়েছে বলেও খবর বেরিয়েছিল। এই খবরে উদ্বিগ্ন হয়েছিল ফুটবলবিশ্ব।
শেষ পর্যন্ত সেই খবর মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ‘কালো মানিক’ পেলে, তবে শারীরিক অবস্থা নিয়ে যতখানি রটেছে ততখানি নয়। পেলের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তিনি স্থিতিশীল আছেন।
কাতার বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচ জয়েই শুরু করেছিল ব্রাজিল। সার্বিয়া ও সুইজারল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিতের পর গ্রুপ পর্যায়ের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে হেরে যায় ক্যামেরুনের কাছে। ওই ম্যাচে ইনজুরির কারণে নেইমার-দানিলোরা খেলতে পারেননি। এদিকে, আবার প্রথম ম্যাচের সবাইকে বাদ দিয়ে একাদশ সাজিয়েছিলেন কোচ, কিন্তু সফল হতে পারেননি।
শেষ ষোলোতে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে বড় পরীক্ষার মুখে পড়তে হতে পারে ব্রাজিলকে, এমনটা ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি। প্রথমার্ধেই এশিয়ার দলটির জালে চার-চারবার বল পাঠিয়ে নির্ধারিত সময়ে ৪-১ গোলে ম্যাচ জিতেছে সেলেসাওরা।
ম্যাচ শেষে দেখা গেল নেইমার জুনিয়র একটি ব্যানার নিয়ে এগিয়ে আসছেন। তারপর বাকি সবাই মিলে সেই ব্যানারকে সামনে নিয়ে ছবি তুললেন। সেই ব্যানারে ছিল পেলের নাম লিখা এবং সঙ্গে এই কিংবদন্তির ছবি। ধারাভাষ্যকার জানালেন নকআউট পর্বের এই জয় ফুটবল সম্রাট পেলেকে উৎসর্গ করেছে ব্রাজিল দল।
এরআগে ম্যাচের ঘণ্টাতিনেক আগে সামাজিক মাধ্যমে একটা পোস্ট করেন পেলে। পোস্টে ছিল সুইডেনে ১৯৫৮ বিশ্বকাপের সময়কার একটা ছবি। হাসপাতালে শুয়ে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতি রোমন্থন করেন তিনি। খেলোয়াড়ি জীবনে তিনবার বিশ্বকাপ জয়ের সাক্ষী পেলে। ১৯৫৮ বিশ্বকাপে তিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিশ্বফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে অংশ নেন, এবং দুরন্ত নৈপুণ্যে বিশ্বকাপ জয়ে অবদান রাখেন।
প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সুইডেনের একটি শহরের রাস্তায় হাঁটছেন তিনি। পেলে লিখেন, ‘১৯৫৮ সালে সুইডেনের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে আমি আমার বাবাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা ভাবছিলাম। আমি জানি, ব্রাজিল দলের অনেকেই এবার এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রথম বিশ্বকাপের স্বপ্নও দেখছেন।’
এই কিংবদন্তি জানান, কোরিয়ার বিপক্ষে রাউন্ড অব সিক্সটিনের ম্যাচটি তিনি হাসপাতালে শুয়েই উপভোগ করবেন। তিনি লিখেন, ‘বন্ধুরা আমি তোমাদের অনুপ্রাণিত করতে চাই। আমি হাসপাতালে বসে খেলা দেখব। আমি প্রতিটি ব্রাজিল ফুটবলারের দিকে তাকিয়ে থাকব। আমরা একসঙ্গেই হাঁটছি। শুভকামনা, আমার ব্রাজিল।’