রোমাঞ্চকর এক ‘ডার্বি’ উপহার দিল মোহামেডান-আবাহনী

  • স্পোর্টস ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

‘ডার্বি’ যেন হলো ডার্বি’র মতোই। ৬৫ মিনিট শেষেও ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ঢাকা আবাহনী। সেখানে যেন একপেশে শেষ দেখছিল সবাই। তবে এমন ডার্বি যেন আদতে মানানসই নয়! এবং শুরু হলো নাটকীয়তার। ৬৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কমায় সাদা-কালোরা। পরে ৭৯তম মিনিটে আরও একটি পেনাল্টি পায় মোহামেডান। সেখানে এবার সৃষ্টি হয় উত্তেজনাকর মুহূর্ত। আবাহনীর ফুটবলার সঙ্গে সেই পেনাল্টি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা আসে ডাগআউট থেকেও, সেখানে রেফারির লাল কার্ড, ফুটবলাদের মাঠ ছাড়ার আভাস, অবশেষে তার সমাধান, পেনাল্টিতে রিটেক! সব ছাপিয়ে পেনাল্টি থেকে আরও এক গোল এবং ২-২ ড্রয়ে শেষ লিগের এই ঢাকা ‘ডার্বি’।

লিগের ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসে তাদের মাঠে হারানোর পর ফেডারেশন কাপে তিন মিনিটের দুই গোলে ঢাকা আবাহনীকে হারায় মোহামেডান। এতে অনেকটা অপ্রতিরোধ্যই হয়ে উঠছিল আলফাজ আহমেদের দল। তবে সেই দাপট লিগে এসে সেই আবাহনীর কাছেই থামার শঙ্কা জাগলেও প্রত্যাবর্তনের আরও এক গল্প লিখে লিগে নিজেদের অপরাজিত যাত্রা বজায় রাখল আলফাজ আহমেদের দল। 

বিজ্ঞাপন

ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ম্যাচের একদম প্রথম মিনিটে এগিয়ে যায় আবাহনী। ডি-বক্সের অনেকটুকু বাইরে নেওয়া ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ব্রুনো রোকার দারুণ এক ফ্রি কিক গোলপোস্টে বাঁ প্রান্ত দিয়ে জড়ায় জালে। এতে চলমান আসরে লিগে দ্রুততম গোলটি হজম করে মোহামেডান। 

তার মিনিট দশেক পরেই সমতায় ফেরার দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিল মোহামেডানের মোজাফফর মোজাফফরভ। ১১তম মিনিটে এই উজবেক মিডফিল্ডারের নেওয়া দারুণ এক ফ্রি কিক সজোরে লাগে গোলপোস্টে। পরে সমতায় ফিরতে আরও মরিয়া হয়ে ওঠা সাদা-কালোর দলটি একের পর এক আক্রমণে গিয়েও পায়নি কাঙ্ক্ষিত জালের ঠিকানা। 

বিজ্ঞাপন

উল্টো দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আরও একটি গোল হজম করে বসে মোহামেডান। ৫৪তম মিনিটে আকাশী-হলুদ দলের সেই গোলেও ছিল ব্রুনোর অবদান। এই ব্রাজিলিয়ানের পাস ধরে এবার গোল করেন কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কনফেডারেশন কাপের ঢাকা ‘ডার্বি’তে আবাহনীর একমাত্র গোলটি করেছিলেন তিনিই। 

জোড়া গোলে এগিয়ে থাকা সেই দাপটে বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি দিয়েগো আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানির দল। সেই দাপটের অর্ধেকটা শেষ হয় ৬৫তম মিনিটে। ডি-বক্সে ইমান্যুয়েল সানডেকে ফাইল করে বসেন আবাহনী ডিফেন্ডার এবং মোহামেডানের পক্ষে পেনাল্টির বাঁশি বাজান ম্যাচ রেফারি সাইমুন হাসান। ম্যাচে ফেরার সেই সুযোগ কোনোরখন হাতছাড়া না করে ব্যবধানে কমিয়ে ২-১  এ আনেন সুলেমান দিয়াবাতে। তবে পেনাল্টি নাটকের বাকি অংশ তখনও যে বাকি। 

৭৯তম মিনিটে আরও একটি পেনাল্টি সাদা-কালোদের পক্ষে। তবে এবার ফাউল নয়, হ্যান্ড বলের জন্য। এতে মিনিট পনেরোর মধ্যে রেফারির আরও এক পেনাল্টির সিদ্ধান্ত মোটেও মানতে পারছিলেন না আবাহনী ফুটবলার। বিরোধিতা আসে মাঠের ডাগআউট থেকেও। পরে সেখানে লাল কার্ড দেখিয়ে বসেন রেফারি। আবাহনী ম্যানেজার ও সাবেক জাতীয় দলের ফুটবলার নজরুলকে দেখানো সেই লাল কার্ডে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে দলটির সদস্যরা। সেখানে মিনিট ৭ পর পরস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে স্পট কিকের জন্য গোললাইনে দাঁড়ান গোলরক্ষক পাপ্পু হাসান। 

‘ডার্বি’ বলে কথা। নাটকীয়তা এতো সহজেই যেন শেষ হবার নয়। স্পট কিকের প্রথম প্রচেষ্টায় সহজেই জালের দেখা পেলেও রেফারির বাঁশি, এবং রিটেকের নির্দেশ। সেখানে দ্বিতীয়বারের নেওয়া কিকেও জালের ঠিকানা খুঁজে নেন দিয়াবাতে। সমতায় ফেরে আলফাজ আহমেদের দল। 

আবাহনীর জয়ের আশায় জল ঢালা এই ম্যাচে ড্রয়ের ভরে ৯ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুইয়েই থাকলো মোহামেডান। এদিকে সমান ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আবাহনী।