ক্রিকেটারদের ধর্মঘটে ফিকার সমর্থন, কোয়াবের সদস্যপদে লাল কালির দাগ!
ক্রিকেটারদের ধর্মঘটনিজেদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সমর্থন পাওয়া তো দূরের কথা, উল্টো একগাদা অভিযোগ শুনতে হয়েছে ক্রিকেটারদের।
সেই অভিযোগের শেষ লাইনটা হলো-ক্রিকেটাররা নাকি দেশের স্বার্থ বিরোধী কাজ করছে!
বিসিবির সঙ্গে এক সুর মিলিয়েছে ক্রিকেটারদের সংগঠন ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)।
তবে বিসিবি ক্রিকেটারদের এই ন্যায্য দাবিতে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের আবিষ্কার করলেও বিশ্বের সব ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স এসোসিয়েশন (ফিকা) তাদের প্রতি সমর্থন এবং একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
ফিকার নির্বাহী চেয়ারম্যান টনি আইরিশ বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণী, ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের দাবি দাওয়া ও ন্যায্য অধিকারকে পূর্ণ মাত্রায় সমর্থন দিয়ে এক বিবৃতিতে জানান-‘বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা তাদের দাবি আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে তারা সবাই একটা স্বচ্ছ এবং ন্যায্যতা প্রাপ্তির জন্য একই ছাতার নিচে এসে হাজির হয়েছেন। একটি কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা আজ সবাই একজোট হয়েছেন। এই অবস্থাই জানাচ্ছে ক্রিকেট খেলুড়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশে ক্রিকেটাররা যেভাবে চিত্রিত হচ্ছেন সেই অবস্থার পরিবর্তন করার সময় এসেছে।’
ফিকার এই বিবৃতির পরের অংশে টনি আইরিশ লেখেন-‘ক্যারিয়ার গড়া এবং জীবনধারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি সম্পর্কে ক্রিকেটাররা ঠিকমতো সম্মান পাচ্ছেন না। এই সময়টায় ক্রিকেটারদের ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( কোয়াব) এর ভাল একটা ভূমিকা থাকা উচিত ছিল। ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হয়ে এসোসিয়েশনের কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু এটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে খেলোয়াড়দের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কোয়াব তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি। শুধু তাই নয়, ফিফা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছে কোয়াবের নির্বাহী কর্তারা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ( বিসিবি) বিভিন্ন পদেও অধিষ্ঠিত। এই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ফিকা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের উচ্চারিত দাবির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানাচ্ছে। সেই সঙ্গে ক্রিকেটারদের সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা নিয়ে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করছে।’
সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহসহ নিজেদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে থাকা ক্রিকেটারদের প্রতি ফিকা এই সমর্থন জানানোর পাশাপাশি কোয়াবের প্রতি হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছে।
টনি আইরিশ সেই প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলেন-‘চলতি মাসের শুরুতে লন্ডনে ফিকা বোর্ড ফিকার সদস্যপদের জন্য ন্যূনতম একটা কাঠামো ও সংস্কার প্রস্তাব পাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে বর্তমান খেলোয়াড়দের প্রতিনিধিকে অতি অবশ্যই সরকারি সংস্থা থেকে মুক্ত হতে হবে। এই সকল পরিবর্তনকে বিবেচনায় রেখে ফিকা কোয়াবের সদস্যপদের বিষয়টি পুনঃপরীক্ষণ ও পর্যবেক্ষণ করবে।’
এটা পরিষ্কার যে ফিকার এই পর্যবেক্ষণের অর্থই হলো আন্তর্জাতিক এই সংস্থায় কোয়াবের সদস্যপদে লাল কালির আঁচড় পড়ছে। কোনো সন্দেহ নেই ফিকা তার সদস্যপদের জন্য নতুন যে নিয়ম চালু করেছে তাতে কোয়াব পুরোপুরি ফেল করছে।
কোয়াবের সভাপতি হিসেবে আছেন নাইমুর রহমান দুর্জয়। যিনি আবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক এবং সরকারি দলের একজন সংসদ সদস্যও। সহ-সভাপতি হিসেবে আছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনিও ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন দেবব্রত পাল, যিনি বোর্ডের বেতনভুক্ত কর্মচারি!
কোয়াব যে অতি সত্বর ফিকার সদস্যপদ হারাচ্ছে!