ইবাদত-বন্দেগি নিয়ম মেনেই করতে হবে

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইবাদত-বন্দেগি নিয়ম মেনেই করতে হবে, ছবি: সংগৃহীত

ইবাদত-বন্দেগি নিয়ম মেনেই করতে হবে, ছবি: সংগৃহীত

প্রকাশ্যে ইবাদতের পাশাপাশি গোপনে ইবাদতের গুরত্ব রয়েছে ইসলামে। ইসলামের দৃষ্টিতে ইবাদতের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হয়, সেগুলো হলো- আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির নিমিত্তে ইবাদত-বন্দেগি করা, ইবাদতটি সুন্নত অনুযায়ী করা, ইবাদতটি রিয়ামুক্ত তথা মানুষকে দেখানোর মানসিকতায় না করা। এখানে ইবাদত প্রকাশ্যে কিংবা অপ্রকাশ্যে কোনো বিষয় নয়।

কিছু ইবাদত রয়েছে যেগুলো প্রকাশ্যে করতে হয়। যেমন- নামাজ মসজিদে এসে জামাতের সঙ্গে প্রকাশ্যে আদায় করতে হয়। হজ কাবা গমন করে প্রকাশ্যেই করতে হয়। ঈদের নামাজ প্রকাশ্যেই আদায় করতে হয়। কোরবানি প্রকাশ্যেই প্রদান করতে হয়।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া কিছু ইবাদত রয়েছে যা অপ্রকাশ্যে করা যায়। যেমন জিকির-আজকার, কোরআন তেলাওয়াত, নফল নামাজ ও দান-সদকা ইত্যাদি।

ইসলাম মনে করে, যে সব ইবাদত অপ্রকাশ্যে করা যায়; তা অপ্রকাশ্যে করাই সর্বোত্তম। আর যা লুকিয়ে করা যায় না, তা প্রকাশ্যেই করতে হবে। এর ভিন্নতা কাম্য নয়।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রাসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।’ -সূরা হুজুরাত: ২১

কোরআনে কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আর স্মরণ করতে থাক স্বীয় পালনকর্তাকে আপন মনে ক্রন্দনরত ও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় এবং এমন স্বরে যা চিৎকার করে বলা অপেক্ষা কম; সকালে ও সন্ধ্যায়। আর বেখবর থেকো না।’ -সূরা আরাফ: ২০৫

হজরত আনাস বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন কিয়ামত সন্নিকটে হবে, তখন আমার উম্মত তিন ভাগে বিভক্ত হবে। একদল একনিষ্ঠভাবে আল্লাহতায়ালার ইবাদত করবে। আরেক দল মানুষকে দেখানোর জন্য ইবাদত করবে। আরেকদল মানুষের কাছ থেকে হাদিয়া-তোহফা পাওয়ার জন্য ইবাদত করবে।

যখন তারা কিয়ামতের দিন একত্র হবে। মানুষ থেকে খাবার পাবার আশায় যে ইবাদত করতো, তাকে আল্লাহতায়ালা বলবেন, আমার ইজ্জত ও সম্মানের কসম! তুমি আমার ইবাদত কী উদ্দেশ্যে করতে? সে বলবে, আপনার ইজ্জত ও সম্মানের কসম! মানুষের হাদিয়া-তোহফা পাওয়ার আশায়। আল্লাহতায়ালা বলবেন, তুমি যা কিছু জমা করেছো এর কোনো কিছুই তোমার উপকারে আসবে না। তুমি জাহান্নামের দিকে চলে যাও।

তারপর যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর ইবাদত করতো, তাকে আল্লাহতায়ালা বলবেন, আমার ইজ্জত ও সম্মানের কসম! তুমি কেন আমার ইবাদত করতে? সে বলবে, আপনার সম্মান ও ইজ্জতের কসম! আমি লোক দেখানোর জন্য ইবাদত করতাম। আল্লাহ বলবেন, তোমার কোনো ইবাদত আমার পর্যন্ত পৌঁছেনি। তুমিও জাহান্নামে চলে যাও।

এরপর যে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য ইবাদত করেছে তাকে আল্লাহতায়ালা বলবেন, আমার ইজ্জত ও সম্মানের কসম! আমার ইবাদত করার দ্বারা তোমার কী উদ্দেশ্য ছিল? সে বলবে, আপনার ইজ্জত ও সম্মানের কসম। এ বিষয়ে আপনিই আমার থেকে বেশি অবগত। আমি ইবাদত করেছি শুধু আপনার সন্তুষ্টির নিমিত্তে। আল্লাহতায়ালা বলবেন, আমার বান্দা সত্য বলেছে। তুমি জান্নাতে চলে যাও। ‘ -মাযমাউজ যাওয়ায়েদ: ১৮৩৯৭