ইসলামে বর্ণবাদ ও বর্ণবৈষম্য বলে কিছু নেই



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মীয়, জাতিগত, ভাষাগত সংখ্যালঘুর মানবাধিকারের দাবিতে সোচ্চার বিশ্ব সম্প্রদায় আইনগত ও সামরিক-বেসামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেও বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানবতার আহাজারি থামাতে পারছে না। বরং ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার সংরক্ষণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত থাকার পরেও মুসলিমরাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। ‘ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার’ সম্পর্কে ঐতিহাসিক পর্যালোচনা: পর্ব-১

নীতিগত ও ব্যবহারিক অর্থে ইসলাম কোনো জাতি, বর্ণ, অঞ্চল বা রঙের পার্থক্য মানে না। সাদা আর কালো, নাগরিক আর সৈনিক, শাসক আর শাসিত, সব সমান; কেবল নীতিগত বা তত্ত্বগতভাবেই নয়, ব্যবহারিক-প্রায়োগিক কাজেও। ময়দানে বা মেহমানখানায় হোক, তাবুতে বা প্রাসাদে হোক, মসজিদে বা বাজারে হোক, তারা মেলামেশা ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন অবাধে, অকপটে; স্বাধীনতা ও সাম্যের ভিত্তিতে।

ইসলামের প্রথম মোয়াজ্জিন ছিলেন একজন নিগ্রো ক্রীতদাস। সাদা-চামড়ার বর্ণবাদী মানুষের কাছে তার সধর্মীয় কালো মানুষেরা স্বর্গের রাজ্যে সমান হতে পারে, এই পৃথিবীর রাজ্যে কিছুতেই নয়। পৃথিবীর বাস্তব জীবনে এমনই কঠোর পার্থক্য বিরাজমান। কিন্তু ইসলাম বর্ণবাদ ও বর্ণবৈষম্যকে প্রথম দিন থেকেই সমাজ, ধর্ম ও জীবনের সর্বক্ষেত্রে অস্বীকার করেছে।

ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম প্রজাদেরকে বলে ‘আহল উজ-জিম্মাহ’ বা ‘জিম্মি।’ শব্দটির অর্থ হলো- ‘যারা নিরাপত্তায় বাস করে।’ হজরত আলী (রা.) জিম্মিদের সম্পর্কে ইসলামী বিধান ও দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করেছেন তার বিখ্যাত ও অনুসরণযোগ্য এই উক্তির মাধ্যমে, ‘জিম্মির রক্ত মুসলমানের রক্তের মতো।’

সাধারণভাবে ভুল তথ্য ও ধারণার ভিত্তিতে ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম প্রজারা কঠিন অসুবিধায় থাকার যে অভিযোগ, তার সমর্থনে শুধু যে শাস্ত্রবিদ আর আইনবিদদের সংকীর্ণতার কথা উল্লেখ করা হয় তা নয়; হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুসলিমদেরকে সুনজরে দেখেননি আর তাদের সঙ্গে তার শিষ্যদের বন্ধুসুলভ সম্পর্ক উৎসাহিত করেননি, এমনটি দেখানোর জন্য কোরআনের কয়েকটি আয়াতের উল্লেখও করা হয়। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনাকালে মনে রাখতে হবে, এই আয়াতগুলো অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট, সেই সময়ে জীবন-মরণ সংগ্রামে লিপ্ত অবস্থায় ইসলাম কী কঠিন চাপ ও কষ্টের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করছিল; আবার পৌত্তলিক আর ইহুদি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়গুলো কী রকম ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে কলুষিত করে নতুন ধর্ম থেকে ভাঙানি দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।

এরূপ বিপদের সময়ে নবী করিম (সা.)-এর একান্ত (ঐশী) কর্তব্যই ছিল বিরোধী পক্ষগুলোর প্রতারণা আর বিশ্বাসঘাতকতামূলক অভিসন্ধির বিরুদ্ধে শিষ্যদের সতর্ক করে দেওয়া। আর তুলনামূলক ইতিহাসের কোনো ছাত্রই তাকে দোষারোপ করতে পারবে না- তিনি শত্রু আর বিদেশিদের ষড়যন্ত্র থেকে তার ক্ষুদ্র মদিনা নামক গণরাজ্যকে রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন বলে। কিন্তু যখন আমরা অমুসলিম-সংখ্যালঘুসহ নাগরিকদের প্রতি তার সাধারণ ব্যবহার বিচার করতে বসি, তখন আমরা তাতে ইসলামের মানবিকবোধ ও নবীর প্রশস্ত হৃদয়ের সহনশীলতা আর সহানুভূতির স্পষ্ট চিহ্ন দেখতে পাই।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কথা ও কাজের মধ্যে দেখা যাবে অধীনস্থ জাতিগুলোকে কিরূপ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল। কোনো বিজয়ী জাতি বা ধর্ম এর চেয়ে ভালো নিরাপত্তা কি কখনো দিতে পেরেছে? না পারেনি। উদাহরণ রয়েছে শত শত। যেমন, ‘নজরান ও পার্শ্ববর্তী এলাকার (খিস্টানদের) প্রতি, আল্লাহর নিরাপত্তা আর তার রাসূলের প্রতিশ্রুতি তাদের জীবনের প্রতি, তাদের ধর্মের প্রতি আর সম্পদের প্রতি প্রসারিত করা হলো, যারা উপস্থিত আছে আর যারা অনুপস্থিত আছে আর তাদের ছাড়াও অন্যদের প্রতি; তাদের ধর্মের ব্যাপারে আর তাদের ধর্মাচরণের ব্যাপারে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করা হবে না; তাদের অধিকার আর সুযোগ-সুবিধার কোনো পরিবর্তন করা হবে না; কোনো বিশপকে তার এলাকা থেকে অপসারণ করা হবে না; কোনো মঠ থেকে কোনো সাধুকেও না, কোনো পুরোহিতকে তার পদ থেকেও না; আর তারা আগের মতো ছোট বড় সকল অধিকার ভোগ করতে থাকবে; কোনো মূর্তি বা ক্রস ধ্বংস করা যাবে না; তারা কাউকে উৎপীড়ন করবে না, বা তাদেরকেও উৎপীড়ন করা হবে না; তারা অজ্ঞতার যুগের মতো রক্তের প্রতিশোধ প্রথা আচরণ করবে না; তাদের কাছ থেকে উশর-খাজনা আদায় করা হবে না বা তাদেরকে সেনাবাহিনীর জন্য আহার্য যোগাতেও হবে না।’

নবী করিম (সা,)-এর নিষ্ঠাবান অনুসারীরাও রেখেছেন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। হিরা অধিকারের পর জনসাধারণ আনুগত্যের শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খালিদ ইবনে ওয়ালিদ একটি ঘোষণা প্রচার করেন। এই ঘোষণায় তিনি খ্রিস্টানদের জীবন, স্বাধীনতা আর সম্পত্তির নিরাপত্তা দান করেন, আর ঘোষণা করেন, ‘তাদেরকে নাকূস (প্রাচ্যের খ্রিস্টান গির্জায় ঘণ্টার পরিবর্তে ব্যবহৃত একখণ্ড কাষ্ঠ) বাজাতে আর উৎসবের সময় ক্রস বের করতে বাধা দেওয়া হবে না।’

ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় অমুসলিম প্রজাদের জন্য গির্জা বা মন্দির নির্মাণ নিষিদ্ধ ছিল না। পরবর্তী সময়ে, বাগদাদে, আল-মামূনের শাসনকালে সমস্ত সাম্রাজ্যে শত শত ইহুদি সিনাগগ ও অগ্নি-মন্দির ছাড়াও এগার হাজার খ্রিস্টান গির্জার অস্তিত্বের কথা জানা যায়। অথচ এই সুশিক্ষিত খলিফাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, ‘খ্রিস্টানদের ঘোর শত্রু’ (!) বলে। কিন্তু তিনি তার পরামর্শ সভায় তার অধীনস্থ সকল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি গ্রহণ করেছিলেন। মুসলিম, ইহুদি, খ্রিস্টান, সাবাঈ আর যরথুস্ত্রীয়। এদিকে খ্রিস্টান পুরোহিততন্ত্রের অধিকার আর সুবিধাবলীও যত্ন সহকারে নিশ্চিত করা হত।

অমুসলিম প্রজাদের কল্যাণ সাধনে ব্যগ্র বাগদাদের খলিফারা স্পেনের কর্ডোভার সুলতানদের মতো একটি বিশেষ বিভাগ সৃষ্টি করেন। এই বিভাগের দায়িত্ব ছিল জিম্মিদের নিরাপত্তা ও স্বার্থ সংরক্ষণ। এই বিভাগটির প্রধানকে বাগদাদে বলা হত, ‘কাতিব আল জিহবাযেহ’ আর স্পেনে বলা হত ‘কাতিব আল জিমাম।’ বিষয়টি ছিল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য একটি আলাদা মন্ত্রণালয়স্বরূপ।

একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা- যার নজির আধুনিক ইতিহাসেও বিরল। তা হচ্ছে, মিসর বিজয়ের পর খলিফা হজরত ওমর (রা.) যত্ন সহকারে খ্রিস্টান গির্জার ওয়াকফ্ সম্পত্তির সংরক্ষণ করেন, আর ভূতপূর্ব সরকার পুরোহিত শ্রেণীর পোষণের জন্য যে ভাতার ব্যবস্থা করেছিল তা তিনি চালু করেন। পরবর্তী খলিফা হজরত ওসমান (রা.)-এর শাসনকালে মার্ভের খ্রিস্টান পুরোহিত ফ্রান্সের বিশপ সাইমেয়নকে এইরূপ সম্বোধন করেন, ‘আরবদেরকে (মুসলিমদেরকে) আল্লাহ পৃথিবীর রাজত্ব দান করেছেন, তারা খ্রিস্টান ধর্মকে আক্রমণ করে না; উপরন্তু তারা আমাদের ধর্মকে সাহায্য করে। তারা আমাদের খোদা ও সেন্টদেরকে সম্মান করে আর আমাদের গির্জা আর মঠের জন্য সম্পত্তি দান করে।’

   

যে গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার কেউ নেই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগে বদলে গেছে প্রত্যন্ত একটি গ্রামের চিত্র। গ্রামটির সকল পরিবার হয়েছে সচ্ছল। ওই গ্রামে এখন আর ফেতরা কিংবা জাকাত নেওয়ার মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট।

সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এমন প্রশংসনীয় কাজ করা সংগঠনটির নেই নিবন্ধন, নেই বাহারি অফিস। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ, ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমূলক নানা কাজ।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফেতরা ও জাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সে হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই।

সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তাও দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছে।

;

রাজধানীতে শীতল পানি বিতরণ করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট সংকটে দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ।

বিভিন্ন জেলা, থানা, ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি বিতরণ করেছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া খাবার স্যালাইন ও পকেট রুমাল বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে বিশুদ্ধ শীতল পানি, স্যালাইন ও ওয়ালেট টিস্যু বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ডেমরা থানা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিইন বিন আমজাদ, কফিল উদ্দিনসহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।

এ সময় প্রধান অতিথি শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাধার ভরাট ও অবাধে বৃক্ষ নিধনের ফলেই অসহনীয় তাপদাহে নগরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সাময়িক স্বস্তির জন্য আমরা শীতল পানির বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের জন্য নগরকে সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করতে রাষ্ট্রকেই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

নগর সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম বলেন, যতদিন তীব্র তাপদাহ থাকবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিশুদ্ধ শীতল পানি বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

;

দুনিয়ার জীবনের বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে যে আয়াতে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইতিহাসজুড়ে দেখা গেছে, মানুষ সবসময়ই তার প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবে অভাব নিয়েই দুনিয়ায় এসেছে। দুইভাবে মানুষ বিপদগ্রস্ত হচ্ছে কিংবা বিপদে পড়ছে। এক. মানুষের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ঠিকমতো চিহ্নিত না করা। দুই. ভুল পথে চাহিদা মেটানোর প্রবণতা।

এই দুই বিপদজনক পথ সঠিকভাবে অতিক্রমের জন্যই আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে নবী-রাসুলদেরকে পাঠিয়েছেন। আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী নবীরা মানুষকে শিক্ষা দিতেন। যেমন কোরআনের বক্তব্য যদি মানুষ বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী আমল করে তাহলে তার শক্তিসামর্থ্য যেমন বাড়বে তেমনি পরিত্রাণ পাবে এবং যেকোনো বিপদ বা ভুল পথে পরিচালিত হওয়া থেকে নাজাত পাবে।

কোরআন মাজিদের সুরা হাদিদের ২০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা জেনে রাখো যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র।

এর উপমা হলো- বৃষ্টির মতো, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদের আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়-কুটায় পরিণত হয়। আর আখেরাতে আছে কঠিন আজাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’

বর্ণিত আয়াতটি আমাদের কাছে জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরেছে এভাবে-
ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া মোটেই ভরসা করার যোগ্য নয়। পার্থিব জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু হয় এবং যাতে দুনিয়াদার ব্যক্তি মগ্ন ও আনন্দিত থাকে, প্রথমে সেগুলো ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে পার্থিব জীবনের মোটামুটি বিষয়গুলো যথাক্রমে এই- প্রথমে ক্রীড়া, এরপর কৌতুক, এরপর সাজ-সজ্জা, এরপর পারস্পরিক অহমিকা, এরপর ধন ও জনের প্রাচুর্য নিয়ে পারস্পরিক গর্ববোধ।

উল্লেখিত ধারাবাহিকতায় প্রতিটি অর্থেই মানুষ নিজ অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু কোরআন মাজিদ বলে যে, এ সবই হচ্ছে সাময়িক ও ক্ষণস্থায়ী।

প্রকৃতপক্ষে, কোরআন মাজিদের এই আয়াতে বলা হচ্ছে, ‘মানুষ যখন শিশু থাকে তখন সে খেলা করে, সে তার যৌবনকে উদ্দেশ্যহীনভাবে অতিবাহিত করে, তার যৌবনে সে পৃথিবীর সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যে মগ্ন থাকে এবং তার মধ্য বয়সে ও বার্ধক্যে সে অহংকার এবং সম্পদ ও সন্তানদের নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়!’

তাই পৃথিবীটা একটা খেলা। এমতাবস্থায় খেয়াল রাখা, কোনোভাবেই ধোঁকায় না পড়া। আমরা যদি কোনো উচ্চ অবস্থানে পৌঁছি তাহলে অহংকারী না হওয়া, যদি পতন ঘটে কিংবা অবস্থা নীচের দিকে চলে যায়- তাহলেও নিরাশ না হওয়া।

আয়াতে বর্ণিত পাঁচটি বিশেষ শব্দ দিয়ে মানবজাতির জন্য তাদের বাস্তবতাকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বোঝানো হয়েছে এর প্রতিটিই হচ্ছে একেকটি ফাঁদ এবং মানুষ এসবে জড়িয়ে পড়ে।

;

৯ বছর পর উমরার সুযোগ পেলেন ইরানিরা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ ৯ বছরের বিরতির পর পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরানের নাগরিকরা পবিত্র উমরা পালনের জন্য তেহরান থেকে পবিত্র মক্কা নগরীর উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল সোমবার পবিত্র উমরা পালনের জন্য সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা করেছে বলে ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা জানিয়েছে। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই শক্তিশালী দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে।

এর আগে দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর গত বছরের মার্চ মাসে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয় মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরব। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবারও সম্পর্ক নতুন মাত্রা পায়। আর উভয় দেশের সম্পর্কের অগ্রগতির পেছনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিল চীন।

২০১৬ সাল থেকে থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। ওই বছর সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের দায়ে শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল নিমরসহ ৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটে।

মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।

এ ছাড়া সিরিয়া এবং ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংঘাতে ইরান ও সৌদি একে অপরের বিরোধী পক্ষ হয়ে কার্যত পরোক্ষ লড়াইয়ে নিয়োজিত ছিল। আর তাই সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়া নেতৃত্বাধীন ইরানের মধ্যে উত্তেজনা ছিল প্রায়ই অনেক বেশি।

গত বছর সম্পর্ক পুনরায় শুরু হওয়ার আগে ইরানিরা শুধুমাত্র হজপালন করতে সৌদি আরব যেতে পারত।

রয়টার্স বলছে, তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে ৮৫ জন উমরাযাত্রীর বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ বিন সৌদ আল আনজি।

;