জাপানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অভিবাসীদের ভূমিকা



শরিফুল ইসলাম
জাপানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অভিবাসীদের ভূমিকা, ছবি: সংগৃহীত

জাপানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অভিবাসীদের ভূমিকা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাপান এশিয়ার একটি অন্যতম সমৃদ্ধশালী দেশ। দেশটির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির যাত্রা শুরু হয় ১৮ শতকের মেইজি বিপ্লবের মাধ্যমে। ওই সময়ে জাপান তাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর করার জন্য অনেক তরুণ জাপানিকে ইউরোপ-আমেরিকা পাঠিয়ে দেয়। যাদের অনেকেই জাপানে ফিরে এসে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নে কাজ শুরু করে। অন্যদিকে কয়েক হাজার পশ্চিমা বিশেষজ্ঞ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে আসে স্কুল-কলেজে আধুনিক বিজ্ঞান, গণিত, প্রযুক্তি ও বিদেশি ভাষা শেখানোর জন্য। পরবর্তীতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আধুনিক যুক্তি নির্ভর সেসব শিক্ষিত নাগরিকদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞের পর নতুন করে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য জাপানিরা পুনরায় মনোনিবেশ করে তাদের যুদ্ধ পরবর্তী সমাজ বিনির্মাণে। যেখানে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা ছিল অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। ফলশ্রুতিতে সে সময়ে তারা অর্জন করতে সক্ষম হয় পৃথিবীর সর্বোচ্চ সাক্ষরতার হার, যা পরবর্তীতে তাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পর্যায়ক্রমে এই দেশটি পশ্চিমা বিশ্বের বহু অর্থনৈতিক পরাশক্তিকে পেছনে ফেলে হয়ে উঠে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।

জাপানের বর্তমান জনসংখ্যা ১২৬.৭১ মিলিয়ন (২০১৭ সাল)। যার মোট জনসংখ্যার ২৭.৮% হচ্ছে ৬৫ বছরের ওপরে। ৫৯.৯% হচ্ছে ১৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। ১২.৩% হচ্ছে ০ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। জাতীয় জনসংখ্যা ও সামাজিক নিরাপত্তা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২০৬৫ সালে জাপানের জনসংখ্যা দাঁড়াবে ৮৮.১ মিলিয়ন যা বর্তমান জনসংখ্যার ৩ ভাগের ২ ভাগ।

এ ছাড়া অন্য আর একটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ২০৬০ সালের মধ্যে জাপানের মোট জনসংখ্যার ৪০% হবে ৬৫ বছরের ওপরে। ওপরে উল্লেখিত তথ্য থেকে বুঝা যাচ্ছে, এই মুহূর্তে জাপানের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- জনসংখ্যা বাড়িয়ে অর্থনীতিকে সচল রাখা।

২০১০ সালের পর থেকে জাপানের জনসংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে যাচ্ছে। এর প্রধান কারণগুলোর অন্যতম হচ্ছে- চলমানযান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা। এই সমাজের প্রতিটি নাগরিক যেন পরিণত হয়েছে এক একটি যন্ত্রমানবে। যুগের পর যুগ ধরে যান্ত্রিক সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে গিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যগত পারিবারিক বন্ধন। ফলাফল হিসেবে তরুণ-তরুণীদের বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া কর্মজীবী মেয়েদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে যথাসময়ের পরে বিয়ে এবং কম সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রবণতাকে অনেকে জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করছেন।

অপরদিকে বিজ্ঞানসম্মত ও পরিবেশবান্ধব জীবনযাপনের পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে গড় আয়ু বৃদ্ধি পাচ্ছে যা এদেশের প্রবীণ জনসংখ্যার চাপ বাড়িয়ে তুলছে। একটি দেশের অর্থনীতির মূলচালিকা শক্তির অন্যতম প্রধান উপাদান হচ্ছে সেই দেশের কর্মঠ তরুণ সমাজ। আগামী ৫০ বছরের মধ্যে সেই কর্মঠ তরুণদের চরম ঘাটতিতে পরবে সূর্যোদয়ের এই দেশটি। যার প্রভাব বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ছোট ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানে পড়তে শুরু করেছে। তীব্র শ্রমিক ঘাটতির কারণে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ৬৫ বছর ঊর্ধ্ব নাগরিকদের সংখ্যা বেড়ে চলছে, যা সরকারের চিকিৎসা ও পেনশন ভাতাসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক খরচের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলছে। অপরদিকে জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কারণে সরকারের আয়ের উৎস সংকুচিত হচ্ছে। এ অবস্থা মোকাবেলার জন্য জাপান সরকার বিদেশি দক্ষ জনশক্তির সঠিক ব্যবহার ও মূল্যায়নের ওপর জোড় দিচ্ছে।

বর্তমানে জাপানে ২.৫৬ মিলিয়ন অভিবাসী রয়েছে। যা জাপানের মোট জনসংখ্যার ১.৯ শতাংশ। এদের মধ্যে ১.২৮ মিলিয়ন বিভিন্ন পেশাতে কর্মরত। এমতাবস্থায় জাপান সরকার নতুন অভিবাসী আইনের আওতায় ৫ লাখ নতুন অভিবাসীকে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যার কার্যকারিতা শুরু হবে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে।

এই আইনের আওতায় বিদেশিরা দুই ধরনের ভিসা নিয়ে জাপানে কাজের সুযোগ পাবে ১। নির্দিষ্ট দক্ষতা-১ এবং ২। নির্দিষ্ট দক্ষতা-২

নির্দিষ্ট দক্ষতা-১: এই ভিসাপ্রাপ্তির পূর্বশর্ত হচ্ছে, নির্দিষ্ট কাজে বিশেষ দক্ষতাসহ জাপানিজ ভাষায় যোগাযোগে পর্যাপ্ত দক্ষতা। এ ভিসায় বিদেশি নাগরিকরা সর্বোচ্চ ৫ বছর জাপানে কাজের সুযোগ পাবেন। এ ভিসার অধীনে পরিবার নিয়ে বসবাসের সুযোগ নেই। অপরদিকে এ ভিসার অধীনে আগত দক্ষ কর্মীরা নির্দিষ্ট দক্ষতা-২ এ ভিসা পরিবর্তন করতে পারবেন।

নির্দিষ্ট দক্ষতা-২: নির্দিষ্ট দক্ষতা-১ এর অধীনে কর্মরত বিদেশিরা নির্দিষ্ট কাজে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে পারলে নির্দিষ্ট দক্ষতা-২ ভিসাতে রেসিডেন্স স্ট্যাটাস পরিবর্তনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ ভিসা নিয়ে জাপানে দীর্ঘমেয়াদে পরিবারসহ বসবাস ও কাজ করার সুযোগ থাকবে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে বসবাসকারী দক্ষ শ্রমিকরা পার্মানেন্ট রেসিডেন্স ভিসা নিয়ে স্থায়ীভাবে পরিবারসহ বসবাস করতে পারবেন।

জাপান নতুন অভিবাসন আইন প্রণয়নের মধ্য দিয়ে বহু বছরের লালিত সমজাতীয় সমাজ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছে। এই আইনটি নতুন অভিবাসীদের জন্য সুখবর বয়ে আনলেও অনেক কট্টরপন্থী জাপানিরা এর তীব্র সমালোচলা করছেন। তবে জাপানের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে নতুন অভিবাসীদের স্বাগত জানানো ছাড়া অন্যকোনো বিকল্প নেই সূর্যোদয়ের এই দেশটির।

শরিফুল ইসলাম: জাপান প্রবাসী
[email protected]

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;