স্টেশনে পাটিই যেন বিশ্রামাগার

  • এস এম জামাল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, কুষ্টিয়া, বার্তা২৪
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

শনিবার (১৯ জানুয়ারি) ঘড়ির কাটায় তখন রাত সাড়ে ৯টা। কুষ্টিয়ার পোড়াদহ জংশনে গিয়ে দেখা মিললো প্লাটফর্মের চারিদিকে বেশ কিছু মানুষ। পাশেই টিকিট কাউন্টারের জন্য অবস্থানরত স্থানে গিয়ে দেখা মিললো বেশ কিছু পাটি বিছানো। সেখানে গিয়ে দেখা মিললো অনেকেই পাটিতে ঘুমিয়ে আছেন। আবার কেউবা শুয়ে বসে আছেন। সেখানে গিয়ে জানা গেলো পাটিতেই নাকি তাদের ব্যবসা হয়। বিশেষ করে রাতের বেলায় দুরের যাত্রীরা কিংবা ষ্টেশনে অপেক্ষারতরা শুয়ে বা বসে থাকার জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়েই পাটি ভাড়া করেই বিশ্রাম নিতে বাধ্য হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/20/1547980936484.jpg

বিজ্ঞাপন

ফাঁকা যাওয়ার জন্য আগেই স্টেশনে এসেছেন বাবু, রকি, কামরুল ইসলাম। কিন্তু রাত সোয়া বারোটার সময় ট্রেন। সেসময় তারা বিশ্রামাগারে গিয়ে বসবেন বলে মনস্থির করেছেন। কিন্তু প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগারে গিয়ে দেখেতে পান অন্ধকারাচ্ছন্ন পুরো কক্ষটি। সেখানে লাইটের কোন ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারা বাধ্য হয়ে এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি শেষ পাটি ভাড়া করেই বসে পড়েন।

আজিজ নামের এক পাটি ব্যবসায়ী জানান, একটি পাটি ২০ টাকা করে ভাড়া দেওয়া হয়। এখানে মানুষ বসে থাকে আবার কেউবা শুয়ে থাকে। তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ১০টি পাটি। তার মতো আরও তিন জন এই পাটির ব্যবসা করছেন। পাশেই আরেক পাটি ভাড়া ব্যবসায়ী জানান, আমার ১০টি পাটির মধ্যে ৩টি পাটিতে ৩জন ভাড়া নিয়েছে। কিন্তু বাকী ৭টি পাটি ফাঁকা পড়ে আছে। তারা জানান, শুধুমাত্র রাতের বেলাতেই কেবল এই পাটি ভাড়া দেওয়া হয়। 

বিজ্ঞাপন

ট্রেন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় দিনদিনই নিম্নমুখী হচ্ছে, রেলসেবার মান এমন অভিযোগ করে সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি মীর আব্দুর রাজ্জাক বার্তা২৪.কমকে বলেন, এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওয়েটিং রুম নেই। এমনকি বাথরুম নেই। অথচ ঢাকাগামী যাত্রীদের সেখানেই অপেক্ষায় থাকতে হয়। তাই বাধ্য হয়েই পাটি ভাড়া নিয়ে থাকেন অনেক যাত্রীরা। তিনি বলেন, এই পোড়াদহে কোন আবাসিক হোটেল নেই। তাই বাধ্য হয়েই তারা পাটিতে বসে বিশ্রাম নেন।  মান্ধাতার আমলের রেললাইনের কারণে, কুষ্টিয়ার পোড়াদহ রেলওয়ে জংশনে মাঝে মধ্যেই দুর্ভোগে পড়েন, যাত্রীরা।

রুহুল আমিন বাবু নামের এক সচেতন নাগরিক মনে করেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছাতে পারছে না এই সেক্টর। কর্তৃপক্ষকে এদিকে গুরুত্ব দেওয়ারও আহবান জানান তিনি।

তবে এসব বিসয় নিয়ে কথা বলতে চান নি পোড়াদহ ষ্টেশন মাষ্টার শরীফুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ার পোড়াদহ রেলওয়ে জংশন। এই জংশন, খুলনার সাথে সারা দেশের রেল যোগাযোগের মাধ্যম। প্রতিদিন ৪০টির বেশী ট্রেন যাতায়াত করে এ জংশন দিয়ে। কিন্তু মান্ধাতার আমলের রেললাইনের কারণে মাঝে মধ্যেই দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।