কাঁচামরিচের কত গুণ!

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কাঁচামরিচ। ছবি: তামিম

কাঁচামরিচ। ছবি: তামিম

প্রতিটি রান্নায় যে উপাদানটি অবশ্যই পাওয়া যাবে সেটা হলো কাঁচামরিচ।

তরতাজা কয়েকটি কাঁচামরিচ ছাড়া রান্নার আসল স্বাদ ও সুঘ্রাণ আসে না কি! প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যে উপাদানটি থাকছে, নিয়মিত যে খাবারটি খাওয়া হচ্ছে তার উপকারিতা সম্পর্কে ধারণা নেই অনেকের।

ঝাল খেতে ভালোবাসুন কিংবা ঝাল এড়িয়ে চলুন, কাঁচামরিচের গুণ সম্পর্কে জানতে নিশ্চয় বাধা নেই। আজকের ফিচার থেকে জেনে নিন প্রাকৃতিক উপাদান কাঁচামরিচের স্বাস্থ্য গুণাগুণ।

বিজ্ঞাপন

ঠাণ্ডার সমস্যা কমায়

কারোর ঠাণ্ডার সমস্যা দেখা দিলে ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরামর্শটি কিন্তু অহেতুক দেওয়া হয় না। কাঁচামরিচ খাওয়ার ফলে ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীররে শক্তি সঞ্চারিত হয়। এছাড়া কাঁচামরিচে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ভিটামিন-সি ঠাণ্ডার সমস্যা মোকাবেলায় কাজ করে।

প্রদাহ কমায়

শরীরে ক্রমাগত প্রদাহ দেখা দেওয়ার ফলে বেড়ে যায় অসুস্থতার হার। কাঁচামরিচে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও উচ্চ মাত্রার ভিটামিন-সি শারীরিক প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

বিজ্ঞাপন

ক্ষত ভালো হতে সাহায্য করে

কাঁচামরিচে থাকা ভিটামিন-সি শরীরের ক্ষত দ্রুত ভালো হতে কাজ করে। ভিটামিন-সি কোলাজেন গঠন ও সংশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। এই কোলাজেন হলো স্ট্রাকচার প্রোটিন যা চামড়া গঠন করে থাকে। যে কারণে ক্ষত শুকাতে ও ভালো হতে কাঁচামরিচ উপকারী।

মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে

কাঁচামরিচে থাকা যে উপাদানটির জন্য প্রাকৃতিক এই উপাদানটি ‘ঝাল’ হয়, সেই একই উপাদান শরীরে মেটাবলিজম বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এই উপাদানটিকে বলা হয় ক্যাপসাইসিন (Capsaicin). শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধির ফলে ক্যালরি দ্রুত বার্ণ হয়। ফলে ওজনও কমে দ্রুত।

পাকস্থলীর সমস্যা দূর করে

কাঁচামরিচে থাকে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ। যা পাকস্থলিস্থ খাদ্য দ্রুত পরিপাক হতে, কোলন পরিষ্কার করতে ও পরিপাক ক্রিয়া সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। আঁশ পাকস্থলীর বর্জ্য পদার্থকে বের করে দিতে বড়সড় ভূমিকা পালন করে। ফলে কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যায় আঁশ খুবই উপকারী উপাদান। এছাড়া কাঁচামরিচের ক্যাপসাইসিন গ্যাস্ট্রিক আলসারের সমস্যায় ঔষধি উপাদান হিসেবে কাজ করে।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে

কাঁচামরিচে থাকা ভিটামিন-সি হলো প্রখর এক প্রকারের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা শুধু ঠাণ্ডা-কাশির সমস্যা কিংবা ক্ষত সারাতে উপকারী নয়। দৃষ্টিশক্তি প্রখর করতে ও সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে। এমনকি চোখের সমস্যার মাত্রাও কমায়। ভিটামিন-সি এর পাশপাশি কাঁচামরিচে আরো থাকে ভিটামিন-এ। যা চোখের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

ভালো রাখে হৃদযন্ত্র

এখানেও আপনাকে উদ্ধারে কাজ করবে ক্যাপসাইসিন! কাঁচামরিচে থাকা ক্যাপসাইসিন দুইভাবে হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখে। প্রথমত, এটি রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আর্টারি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। দ্বিতীয়ত, ক্যাপসাইসিন কিছু জিনের কার্যকারিতাতে বাধা প্রদান করে। এই সকল জিন শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে রক্ত চলাচলে সমস্যা তৈরি করে। মূলত এই দুইটি কারণে নিয়মিত কাঁচামরিচ খাওয়ার ফলে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে।

ত্বক ও চুল ভালো রাখে

প্রতিদিনের খাদ্যাভাসে কাঁচামরিচ রাখার ফলে ত্বক থাকবে স্বাস্থ্যজ্জ্বল ও বলীরেখা বিহীন। কাঁচামরিচে থাকা ভিটামিন-সি অক্সিডেটিভ ড্যামেজের মাত্রা কমায়। এই অক্সিডেটিভ ড্যামেজ কম বয়সে ত্বকে বয়সের ছাপ এনে দেয়। এছাড়াও কাঁচামরিচে প্রদাহ-বিরোধী উপাদান সমূহ ব্রণ তৈরিতে বাধা প্রদান করে।