‘স্বাস্থ্যকর’ উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত পাঁচ খাবার
খাবারের ক্যালোরি যত কম হবে, খাবার তত স্বাস্থ্যসম্মত হবে।
এই ধারণাটি আমাদের মাঝে খুব পাকাপোক্তভাবেই গেঁথে গেছে। ধারনাটি যে ভুল, সেটাও বলা যায় না। তবে এই ধারণার মাঝে কিছুটা কমতি রয়েছে। সকল উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারই অস্বাস্থ্যকর নয়। বরং কিছু উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খুবই স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর ও উপকারী। যে কারণে এই খাবারগুলো নিয়মিত গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাকাডেমি অফ নিউট্রিশন এন্ড ডায়েটিকস এর মিডিয়া মুখপাত্র ম্যালিনা ম্যালকানি জানান, ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ক্যালোরি মেপে খাবার খাওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দিতেই হয়। তবে ক্যালোরি মেপে খাবার খাওয়ার পরেও স্বাস্থ্যকর ও উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়াতে সমস্যা নেই। বরং স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকার ফলে এই খাবারগুলো বাড়তি পুষ্টি যোগ করে। এমন কয়েকটি খাবারের নাম জেনে রাখুন।
বাদাম ও পিনাট বাটার
প্রায় সকল ধরণের বাদামেই উচ্চমাত্রায় ফ্যাট ও ক্যালোরি থাকে। তবে বাদাম ও পিনাট বাটার উভয় খাবার থেকেই পাওয়া যাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন, আঁশ, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, কয়েক ধরণের ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট। ম্যালকানির মতে বাদামে থাকা মনো ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট হৃদরোগের সম্ভবনা কমায়। বিস্কুট কিংবা চিপসের মতো পুষ্টিবিহীন খাবার খাওয়ার খাওয়ার চাইতে এক মুঠো বাদাম খাওয়া কিংবা এক চা চামচ পিনাট বাটার খাওয়া অনেক উপকারী।
তোকমা দানা
ক্ষুদ্র এই দানাগুলোতেই রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি গুণাগুণ ও ক্যালোরি। তোকমা দানা থেকে শুধু আঁশ নয়, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, জিংক ও কপার পাওয়া যাবে। কিছু ক্ষেত্রে তোকমা দানা উচ্চ রক্তচাপ কমায় ও প্রদাহ বিরোধী উপাদান হিসেবে কাজ করে।
অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল হলো মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের সর্বোৎকৃষ্ট উৎস, যা হৃদরোদের সম্ভবনাকে একেবারেই কমিয়ে আনে। ভিটামিন-ই, ভিটামিন-কে, ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ এর উপস্থিতি থাকায় এই তেলটি উচ্চ ক্যালোরিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও দারুণ উপকারী উপাদান হিসেবে বিবেচিত। এমনকি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে ও ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও অলিভ অয়েল কার্যকর। তবে অলিভ অয়েল ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে, তেলটি ১০০ ভাগ বিশুদ্ধ কিনা।
দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর মাত্রায় প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি, পটাশিয়াম ও পাকস্থলীর জন্য ‘ভালো ব্যাকটেরিয়া’ থাকে। ক্যালোরি ও ফ্যাট থাকা সত্ত্বেও দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত গ্রহণ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে বাড়ন্ত শিশুদের জন্য নিয়মিত দুধ পান করা আবশ্যিক। যেহেতু ফুল-ফ্যাট দুধে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, অন্যান্য খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। যেন বাড়তি স্যাচুরেটেড ফ্যাট গ্রহণ করা না হয়।
ডার্ক চকলেট
কোকোয়া ও ডার্ক চকলেটে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর পুষ্টিগুণ। ভালো মানের ডার্ক চকলেট থেকে পাওয়া যাবে আঁশ, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, কপার ও অন্যান্য মিনারেল। এই সকল পুষ্টি বিদ্যমান থাকার ফলেই ডার্ক চকলেট মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি, হৃদরোগের সম্ভবনা কমানো ও রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে কাজ করে। তবে হ্যা, অলিভ অয়েলের মতো ডার্ক চকলেট ভালো মানের হতে হবে অবশ্যই। অন্তত পক্ষে ৭০ শতাংশ কোকোয়া সমৃদ্ধ ডার্ক চকলেট থেকে উপোরক্ত স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলো পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: শরীরে সঞ্চালন বাড়াবে যে খাবারগুলো
আরও পড়ুন: তাক লাগানো তোকমা দানা