শ্রবণশক্তি হারাচ্ছে হেডফোনের ব্যবহারে
রাতে ঘুমাতে যাওয়া থেকে শুরু করে সকালে ক্লাসে কিংবা অফিসে যাওয়ার পথেও কানে বাজতে থাকে পছন্দের গান।
কাজের ফাঁকে, মন খারাপ কাটাতে কিংবা একা সময়ে এই গানই যেন সবচেয়ে ভালো সঙ্গী। গান শোনায় কোন সমস্যা নেই, নেই কোন বাধাও। সমস্যাটা অন্যখানে। সেটা হলো গান শোনার মাধ্যম। সাধারণত হেডফোন কিংবা ইয়ারফোনের সাহায্যেই গান শোনা হয়ে থাকে এখনকার সময়ে। অথচ এই যন্ত্রটি ব্যবহারের ফলে প্রতিনিয়ত আমাদের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেটা কি আমরা জানি!
ইয়ারফোন বা হেডফোনে অতিরিক্ত শব্দে গান শোনা বর্তমান সময়ের তরুণদের এক ধরনের নিত্যদিনের অভ্যাসের মতো সাধারণ বিষয়। এতে করে মন যতই শান্ত হোক না কেন, অপূরণীয় ক্ষতি হয় কানের। সবচেয়ে ভয়ানক বিষয়টি হলো, কানের ক্ষতি হলে সহসাই বিষয়টি বোঝা সম্ভব হয় না। যতক্ষণ না পর্যন্ত চূড়ান্ত সমস্যা দেখা দেয়। জেনে অবাক হবেন, পুরো বিশ্বে ১.১ বিলিয়নের অধিক ১২-৩৫ বছর বয়সী মানুষ ইয়ারফোন ব্যবহারের ফলে শ্রবণশক্তি সংক্রান্ত ঝুঁকিতে রয়েছে।
হেডফোনের ব্যবহারে কীভাবে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
ইয়ারফোন কিংবা হেডফোনের উচ্চশব্দে গানের বাজনা থেকে নয়েজ ইনডিউসড হিয়ারিং লস (NIHL), যা থেকে কানের অপরিবর্তনীয় (Irreversible) ক্ষতি হয় এবং চূড়ান্ত ফলাফল হিসেবে শ্রবণশক্তি হারিয়ে যায় বা বধির হয়ে যেতে হয়।
কানের ক্ষতি হলে কী ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পাবে?
নিয়মিত উচ্চ শব্দে ইয়ারফোনে গান শোনা হলে তার নেতিবাচক প্রভাবের দরুন বেশ কিছু লক্ষণ অবধারিতভাবে দেখা দেবে। এখানে তার কয়েকটি তুলে ধরা হলো।
১. হুট করে অকারণে কানের ভেতর রিং বাজতে থাকার মতো শব্দ হতে থাকা এবং কিছুক্ষণ পর নিজ থেকেই ঠিক হয়ে যাওয়া।
২. টিভি দেখার সময় বারবার শব্দ বাড়িয়ে দেওয়া। টিভি থেকে কিছুটা দূরে বসে আসলে শব্দ শুনতে সমস্যা হওয়া।
৩. তিন ফিট দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের কথা শুনতে সমস্যা হওয়া।
কীভাবে এই ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে থাকা সম্ভব হবে?
কানের ক্ষতিকে দূরে রাখার বিষয়টি খুব জটিল কিছু নয়। ইয়ারফোন বা হেডফোনে গান শোনার সময় শব্দের মাত্রা কমিয়ে রাখতে হবে। উচ্চমাত্রার শব্দ কানের ভেতরের স্পর্শকাতর হেয়ার সেলস (Hair cells) এ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই গান শুনতে হলেও শব্দ অর্ধেক কমিয়ে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে '60:60' রুলস মেনে চলতে হবে অবশ্য। শব্দের মাত্রা ৬০ শতাংশের বেশি ও সময় ৬০ মিনিটের বেশি একদম নয়।
এছাড়া ইয়ারফোন বা হেডফোন যেটাই ব্যবহার করা হোক না কেন, সবসময় মানসম্মত পণ্য ব্যবহার করতে হবে। কমদামী পণ্যে বাড়তি শব্দ তৈরি হয়। যা কানের জন্য ক্ষতিকর।
আরও পড়ুন: প্রযুক্তি যেভাবে স্বাস্থ্যহানি ঘটাচ্ছে!
আরও পড়ুন: চোখের ওপর চাপ কমাবেন কীভাবে?