'সুলতান' পদক পাচ্ছেন চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, নড়াইল, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার / ছবি: সংগৃহীত

চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার / ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৯৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে দশ দিনব্যাপী সুলতান মেলা শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার (১২ মার্চ)। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতি বছর এ মেলায় এক জন গুণী শিল্পীকে ‘সুলতান স্বর্ণ পদক’ দেন। এবার এ পদকটি পাচ্ছেন পাপেট শিল্পের জনক প্রবীন চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার। শিল্পীর হাতে পদক তুলে দিবেন সংস্কৃতিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ সুলতান মঞ্চ চত্বরে জেলা প্রশাসন ও এএমসুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এবং সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ৩ মার্চ থেকে শুরু সুলতান মেলার।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৫ সালে বর্তমান মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার নাকোল গ্রামে মাতুলায়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক নিবাস ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে। তাঁর বাবা প্রায়াত কবি গোলাম মোস্তফা এবং মায়ের নাম জমিলা খাতুন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে মুস্ত্ফা মনোয়ার সবার ছোট। ১৯৬৫ সালে তিনি চট্টগ্রামের মেয়ে মেরীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে সাদাত মনোয়াার বাংলাদেশ বিমানের পাইলট এবং মেয়ে নন্দিনী মনোয়ার চাকুরীজীবি।

শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ারের আঁকা ছবি যেন কবিতা, ভালবাসা, কষ্ট, ঘৃণা, দ্রোহ, দিন বদলের স্বপ্নকে নিপুণ দক্ষতায় ক্যানভাসে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন। ছাত্রজীবনে কোলকাতা চারুকলা থেকে ফাইন আর্টসে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। বিটিভি থেকে প্রচারিত ‘রক্ত করবী’ তারই প্রযোজনা। শিশু প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে জনপ্রিয় নতুন কুঁড়ির তিনি স্বপ্নদ্রষ্টা।

বিজ্ঞাপন

সাফ গেমসের মিশুক নির্মাণ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পেছনে লালরঙের সূর্যের প্রতিরূপ স্থাপনসহ নানা সৃজনশীলতায় বাংলাদেশকে ঋদ্ধ করেছেন। পাপেট শোর মাধ্যমে তিনি শুধু আনন্দই দেননি, পাকিস্তনি জান্তার বিরুদ্ধে ব্যঙ্গ করেছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে চক্ষুর অন্তরালে পড়ে থাকা হতদরিদ্র পাপেট নির্মাতা ধনমিয়াকে মস্কো এবং তাসখন্দ নিয়ে যান, সেখানে প্রদর্শনী করলে সেটি দারুন জনপ্রিয়তা অর্জন করে। উপকথার ‘পারুল’ চরিত্রকে তিনি পাপেটে নিয়ে আনেন। পারুল যেমন সাত ভাই চম্পার জন্য লড়াই করে সেই রূপকে তিনি অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষাকে নান্দনিক সৌন্দর্যে পরিস্ফুট করেন।

দীর্ঘ বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন শুরু করেন পূর্ব পাকিস্তান চারুকলার প্রভাষক হিসেবে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-পরিচালক, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক, জাতীয় গণমাধ্যমের মহাপরিচালক, এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এডুকেশনাল পাপেট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রকল্প পরিচালকসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করেন। তার সৃজনী এবং উদ্ভাবনী শক্তি এই প্রজন্মকে পথ দেখিয়েছেন।

তিনি একুশে পদক, টেনাশিনাস পদক, আরটিভি স্টার আজীবন সন্মাননা পদক লাভ করেন। চারুশিল্পে অবদানের জন্য চারুশিল্পী সংসদ পুরস্কারে ভূষিত হন।