পয়োনিষ্কাশন সংক্রান্ত রোগে বাংলাদেশের দরিদ্ররা তিনগুণ বেশি ভুক্তভোগী

  • সেন্ট্রাল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন একসূত্রে গাঁথা। সরকার স্বাস্থ্যখাতকে প্রাধান্য দিয়ে দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা, শিক্ষা, মাতৃস্বাস্থ্যসেবা, শিশুমৃত্যু হ্রাস ও পরিবার পরিকল্পনাসহ অন্যান্য কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।

তুবে দুঃখজনক হলো- গত কয়েক বছরে পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য (ওয়াশ) খাতে সরকারি বরাদ্দের পরিমাণ অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। এর ফলে দেশের মানুষ, বিশেষ করে দরিদ্ররা পানিবাহিত ছাড়াও অন্যান্য রোগ-ব্যাধির শিকার হচ্ছে এবং এটি জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বিজ্ঞাপন

পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা কাঙ্ক্ষিত মানে উন্নীত না হওয়ায় আমাদের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বিনষ্ট হচ্ছে, যা মেনে নেওয়া কষ্টকর।

বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পানি ও পয়োনিষ্কাশন সংক্রান্ত রোগে বাংলাদেশের ধনী শ্রেণীর তুলনায় দরিদ্ররা তিনগুণ বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। দরিদ্র পরিবারের, বিশেষ করে শিশুদের অপুষ্টির শিকার হওয়ার প্রবণতার সঙ্গে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার দুর্বলতার সরাসরি সংযোগ থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ায় নিরাপদ পানি সরবরাহের ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।

বিজ্ঞাপন

এ বাস্তবতা সামনে রেখে ওয়াটার এইড -এর আর্থিক সহযোগিতায় ইকো-সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) মিরপুর এলাকার শহীদবাগ বস্তি, কল্যাণপুর পোড়াবস্তি বাউনিয়া বাঁধ বস্তি ও টেকেরবাড়ি বস্তিতে বসবাসকারী নিম্ন আয়ের ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে গার্মেন্টস কর্মী এবং এ এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পানি ও উন্নত স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যাভ্যাস চর্চার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নারী ও কিশোরীদের অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে টেকসই স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করার ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।

এপ্রিল ২০১৮ থেকে মার্চ ২০২১ সময়সীমার মধ্যে ‘অ্যাড্রেসিং ওয়াশ ক্রাইসিস ইন লো-ইনকাম স্যাটেলমেন্টস অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার ইন মিরপুর, ঢাকা’ এ প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ও নিরাপদ খাবার পানির উৎস নিশ্চিত করার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিরাপদ পানি, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন অভিগম্যতা উন্নত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-

১. বস্তি এবং স্কুলে নিরাপদ পানীয় জলের অভিগম্যতা বৃদ্ধি, উন্নত স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যসম্মত আচরণবিধি সম্পর্কিত চর্চা বাড়ানো।

২. বস্তিবাসীর স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত আচরণ পরিবর্তনের জন্য কিশোরীদের ‘পরিবর্তন প্রতিনিধি’ হিসেবে তৈরি করা।

৩. কমিউনিটিতে টেকসই নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যবিধি ও সেবা নিশ্চিতকরণে ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা দল তৈরি করা ইত্যাদি।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অন্তত পাঁচ হাজার ৪০০ মানুষ নিরাপদ পানি সুবিধার আওতায় আসবে; ছয় হাজার মানুষ উন্নত টয়লেট ব্যবহারের আওতায় আসবে এবং ১০ হাজার মানুষ সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাসসহ ঋতুকালীন স্বাস্থ্য পরিচর্যার ব্যবস্থাপনা, শিশুর মলের নিরাপদ ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনা ও তা সঠিক উপায়ে পালনের ধারণা লাভ করবে।