বিষয়টা খুবই সহজ। ‘সুপারফুড’ খ্যাত ডিমে রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান ও গুণাগুণ। যে কারণে, নিয়মতি ডিম খেলে শরীর থাকে নীরোগ ও সবল।
অনেকেই হয়তো প্রতিদিন ডিম খাওয়ার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। অথবা ডিম খেতে অপছন্দ করেন। কিন্তু ডিম এমন একটি পুষ্টিকর খাবার, যা শরীরকে চর্বি ও খারাপ কোলেস্টেরলমুক্ত রাখতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ধরণের অসুস্থতার হাত থেকে রক্ষা করে। শিশু থেকে শুরু করে সকল বয়সীদের জন্য প্রাকৃতিক এই খাদ্য উপাদানটি নিয়মিত খাওয়া ভীষণ জরুরি।
জেনে নিন কেনো আপনার নিয়মিত ডিম খাওয়া প্রয়োজন।
ডিমে থাকা আয়রন, জিংক, আয়োডিন ও ফসফরাস শরীরের জন্য ভীষণ প্রয়োজন। জিংক একইসাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তি বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে আয়রন নারীদের জন্য আয়রন খুবই প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান। এছাড়া হরমোন ও সেলেনিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য আয়োডিন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
আপনি যদি নিজেকে বিভিন্ন ধরণের ভাইরাস, ইনফেকশন ও রোগের হাত থেকে দূরে রাখতে চান, তবে নিয়মিত ডিম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ডিম থেকে শরীরের প্রায় ২২ শতাংশ সেলেনিয়াম পাওয়া সম্ভব হয়। সেলেনিয়াম নামক এই পুষ্টি উপাদানটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immune system) বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে। বিশেষ করে শিশুদের ডিম খাওয়া বাধ্যতামূলক। শিশুদের শরীরে যদি পর্যাপ্ত মেলেনিয়াম না থাকে, তবে তারা খুব সহজেই অসুস্থতার শিকার হবে।
প্রাকৃতিক খুব কম খাদ্য উপাদান থেকে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়। ডিম হলো তার মাঝে একটি। যে কারণে প্রতিদিন ডিম খেলে দাঁত ও হাড় মজবুত থাকে। পাশাপাশি ডিম থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করে শরীর তার প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে পারে।
ডিমে রয়েছে খুবই শক্তিশালী দুইটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট: লুটিন (Lutein) ও জ্যাকজানটিন (Zeaxanthin). এই দুইটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চোখের রেটিনার বিন্যাসে প্রয়োজনীয়। শরীরে এই অ্যান্টি-অক্সিডেটের অভাব দেখা দিলে, বড় ধরণের সমস্যা দেখা দেয় শরীরে। এছাড়াও ডিমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন-এ। যা চোখের সুস্থতা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধে কাজ করে।
মানবশরীরে সবচেয়ে জটিল ও কঠিন অংশটি হলো ব্রেইন বা মস্তিষ্ক। শরীর সুস্থ-সবল রাখতে চাইলে মস্তিষ্কের সুস্থতা ভীষণ জরুরি। ডিমে খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের সুস্থতা, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, নার্ভাস সিস্টেমের সুস্থতা ও মেটাবলিজমের মাত্রা স্থিতিবস্থায় থাকে।
নিয়মিত ডিম খাওয়ার ফলে শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের (HDL) এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন ধরণের রোগের প্রাদুর্ভাব কমিয়ে দেয় ও হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। গবেষণা থেকে জানা যায়, নিয়মিত ডিম খাওয়ার ফলে শরীরে HDL এর মাত্রা শতকরা ১০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।