শসাকে বলা হয়ে থাকে সবচেয়ে স্বাস্থ্য সম্মত খাদ্য উপাদান। শসার উপকারিতা সম্পর্কে কমবেশি সবার ধারণা থাকলেও, অনেকেই জানেন না শসার খোসার উপকারিতা সম্পর্কে। ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে অনেকেই ভাবেন শসার খোসা ক্ষতিকর। যে কারণে সালাদ কিংবা রান্নায় ব্যবহারের আগে শসার খোসা ফেলে দেন।
অথচ বাস্তব চিত্র একেবারেই উল্টো। শসার মতোই দারুণ স্বাস্থ্যকর ও উপকারী শসার খোসাও। তাইতো শসা খেতে হবে খোসাসহ। আজকের ফিচার থেকে জেনে নিন শসার খোসার চমৎকার কিছু উপকারিতা।
বিব্রতকর এই সমস্যার ক্ষেত্রে ত্রাতা হিসেবে কাজ করবে খোসাসহ শসা। শসার খোসাতে রয়েছে অদ্রবণীয় আঁশ (Insoluble Fiber). অন্যদিকে শসার ভেতরের নরম অংশে থাকে দ্রবণীয় আঁশ (Soluble Fiber). উভয় প্রকৃতির আঁশ মলকে নরম করতে ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে চমৎকার কার্যকরি।
দারুণ এই বিষয়টি সম্পর্কে খুব কম মানুষই অবগত। শসার খোসা হলো ভিটামিন-এ’র (বেটা-ক্যারটিন) উৎস। চোখের স্বাস্থ্য ও দৃষ্টিশক্তির জন্য ভিটামিন-এ ভীষণ জরুরি। তবে শসার খোসা ফেলে দিলে ভিটামিন-এ আর অবশিষ্ট থাকে না।
আরো পড়ুন: সুস্বাস্থ্যের জন্য আঁশযুক্ত এই খাবারগুলো খেতে হবে প্রতিদিন
হুটহাট হতচ্ছাড়া ক্ষুধাভাব খুব জ্বালায়। এই সময় অস্বাস্থ্যকর কোন খাবার খাওয়ার পরিবর্তে কয়েক টুকরা খোসাসহ শসা খেয়ে ফেলতে হবে। খোসাসহ শসায় কোন ক্যালরি নেই বললেই চলে (১.২ গ্রাম ক্যালরি)। ক্যালরি কম হলেও ক্ষুধার প্রকোপ কমাতে শসা বেশ কার্যকর। তাই ক্ষুধা পেলেই নিশ্চিন্তে খেয়ে নিতে হবে ছোট একটি খোসাসহ শসা।
ত্বকের জন্য অ্যাসকরবিক অ্যাসিড (ভিটামিন-সি) অনন্য। ক্ষতিকর অক্সিডেটিভ ড্যামেজ থেকে ত্বককে রক্ষা করতে এবং ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া প্রতিরোধে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও কোলাজেন উৎপাদনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। শসাতে নয়, শসার খোসায় প্রচুর পরিমাণে উপকারী এই উপাদান বিদ্যমান থাকে। তাই খোসাসহ শসা খেলে ত্বকের বয়সের ছাপকে দূরে রাখা সম্ভব হবে।
আরো পড়ুন: প্রিয় আমের চমকপ্রদ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা
রক্ত জমাট বাঁধতে ভিটামিন-কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। যা পাওয়া যাবে খোসাসহ শসাতে। এছাড়াও ভিটামিন-কে হাড়ের পুষ্টিতে, মগজের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে ও নির্দিষ্ট ধরণের কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।
শসার খোসায় রয়েছে অতি পরিচিত ও উপকারী মিনারেল- ম্যাগনেসিয়াম। ইনসমনিয়ার সমস্যা, মাইগ্রেনের ব্যাথা, পেশীর টান ও হজমের সমস্যা কমাতে ম্যাগনেসিয়াম দারুণ প্রয়োজনীয় একটি মিনারেল।
এতো দারুণ স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানার পর খোসাসহ শসা খাওয়ার পরিকল্পনা করা স্বাভাবিক। তবে খেয়াল রাখতে হবে, খাওয়ার পূর্বে শসাকে অবশ্যই এক ঘণ্টা লবণ-পানির মিশ্রনে ডুবিয়ে রাখতে হবে। এতে শসার খোসায় লেগে থাকা জীবাণু, রাসায়নিক ও ফরমালিন দূর হয়ে যাবে।