সাভারে বেহাল দশায় বংশী-তুরাগ-ধলেশ্বরী

, জাতীয়

মো. কামরুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা) | 2024-05-23 11:17:05

দখল-দূষণের ফলে শিল্পাঞ্চল সাভারের নদী-খালের করুণ দশা দেখা দিয়েছে। পানিও হয়েছে ব্যবহারের অনুপযোগী। অস্তিত্ব সংকটে আছে মাছসহ জলজ প্রাণী। পরিবেশবিদরা তাগিদ দিলেও নেই আশার আলো।

এক সময় সাভার থেকে রাজধানীসহ দেশের নানা প্রান্তের যাতায়াতের মাধ্যম ছিল এই বংশী নদী। বিভিন্ন জেলার পণ্য পরিবহনের অন্যতম মাধ্যম ছিল এই নৌপথ। বালু মহলের দখল, অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থানার দূষণে নদীটি দিনে দিনে হারিয়েছে চেনা রূপ। অভিযোগ রয়েছে শিল্প-কারখানার অপরিশোধিত তরল বর্জ্য নদীতে মিশে পানির রং হয়েছে কালো। পানি এখন ব্যবহারে অনুপযোগী। হতাশা আর ক্ষোভ স্থানীয়দের মাঝে।

স্থানীয় বাসিন্দা কামাল উদ্দিন বলেন, কারখানার পানি এসে আমাদের নদী নোংরা হয়ে গেছে। পানির রং কালো হয়ে গেছে। পানিতে গন্ধ, মশা-মাছির উপদ্রব। নদীর পানি ব্যবহার করা যায় না, একসময় এই নদীতে অনেক মাছ পাওয়া যেত এখন আর মাছ পাওয়া যায় না।

ব্রহ্মপুত্র নদের জামালপুর থেকে উৎপন্ন বংশী নদীটি ৪ জেলার প্রায় ২ শত কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে সাভার হয়ে ধলেশ্বরী, তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদীতে মিলেছে। এছাড়া সাভারে রয়েছে অসংখ্য ছোট বড় খাল যার অধিকাংশই মৃতপ্রায়।


সচেতনতা আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে আবাসিক ময়লা-আবর্জনাও ইচ্ছে মত ফেলা হচ্ছে নদী ও খালে। সাভারকে বাসযোগ্য রাখতে সকলের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন পরিবেশবাদীরা।

সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন খান নঈম বলেন, খাল-বিল, নদী-নালা যে যেভাবে পারছে দখল করে নিচ্ছে, এতে জলাবদ্ধতা হচ্ছে, পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। 

নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদের সহ সভাপতি রহিম উদ্দিন বলেন, এই পরিবেশ অধিদপ্তর ও আমাদের যে সরকারি ম্যাকানিজমগুলো রয়েছে তাদের স্ব-ইচ্ছা পোষণ করতে হবে, তাহলেই সম্ভব।

নদী দখল মুক্ত করতে স্থানীয় প্রশাসনের অভিযান হলেও, আবার দখল করে নেয় অসাধু চক্র। ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রশাসনের। সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করে, তারা যদি এটা যাচাই করে দেখে বলে, কাজ করবে কি না! সেটা যদি এখানে এ্যাপলিকেট করা যায় তখন আমার মনে হয় একটা স্থায়ী সমাধানে যাওয়া যাবে।

শুধু বংশী নয়, সাভারের তুরাগ ও ধলেশ্বরী নদীর চিত্রও প্রায় একই। এসব নদীর সাথে সংযুক্ত খালগুলোও দখল-দূষণে প্রায় অস্তিত্বহীন। সামান্য বৃষ্টিতে সাভারের বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। নদী বাঁচাতে সংশ্লিষ্টদের আরও জোরালো পদক্ষেপ নেয়ার দাবি সকলের। দখল ও দূষণমুক্ত সাভার গড়তে সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান পরিবেশবাদীদের।

এ সম্পর্কিত আরও খবর