বিভক্ত কমলনগর উপজেলা আ.লীগ, পাল্টাপাল্টি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম লক্ষ্মীপুর | 2024-06-23 23:37:54

দলীয়ভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন রাজু।

যে কারণে রবিবার (২৩ জুন) আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পাল্টাপাল্টি পালন করেছে এ দুই নেতা। এ নিয়ে সাধারণ নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রার্থীর সমর্থনকে কেন্দ্র করে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

অন্যদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন রাজুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের অন্য আরেকটি অংশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফরিদুন নাহার লাইলী।

দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, রবিবার বিকালে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পৃথক পৃথক আলোচনা সভার আয়োজন করে সভাপতি নিজাম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন রাজু। পৃথক আয়োজনের মাধ্যমে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের বিভক্তি প্রকাশ্যে আসে। এভাবে চলতে থাকলে দলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে বলে জানান তারা।

জানা গেছে, উপজেলা সভাপতি নিজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন।

ওই সভার প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক রাখা হয়েছে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পীকে। তিনি সংসদ সদস্য আবদুলল্লহ আল মামুনের একান্ত সহকারীর (পিএস) দায়িত্বে রয়েছেন।

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আরেকটি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়। সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন রাজু নেতৃত্বে আয়োজিত ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফরিদুন নাহার লাইলীর নাম রাখা হয়। যদিও তিনি উপস্থিত ছিলেন না।

ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ইস্কান্দার মির্জা শামিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সফিক উল্লাহ বাংলা নেতা, যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আহসান উল্লাহ হিরণ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারেফ হোসেন রাসেল, সদস্য আব্দুল আহাদ দিদার, কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক সালা উদ্দিন দোলন, রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলতাফ হোসেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ, ছাত্রলীগ নেতা তানজুর রহমান রুবেলসহ প্রমুখ।

এ বিষয়ে জানতে রবিবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিনের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন রাজু বলেন, ‘প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দলের অনুষ্ঠান একটিই হয়েছে। সেটা আমার নেতৃত্বে হয়েছে দলীয় কার্যালয়ের সামনে হয়েছে। এতে দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিল। কিন্তু, হাজির হাট ইউনিয়ন পরিষদের সামনে যে অনুষ্ঠান হয়েছে, সেটি আমাদের দলীয় অনুষ্ঠান ছিল না। স্বতন্ত্র এমপির (আবদুল্লাহ আল মামুন) নিজস্ব অনুষ্ঠান ছিল। তিনি আমাদের দলের এমপি নন৷ ওই অনুষ্ঠান প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পি। আওয়ামী লীগের দলীয় অনুষ্ঠান হলে যুবলীগ নেতা কিভাবে আহ্বায়কের দায়িত্ব পান?

তিনি দাবি করেন, দলে কোন গ্রুপিং নেই। সভাপতি নিজাম উদ্দিন স্বতন্ত্র এমপির নির্বাচন করেছেন। তাই তিনি আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে আসেননি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর